ভারতে প্রতি বছর লাখও মানুষ ভিড় করেন পাহাড় দেখতে। তবে পাহাড়ে থাকা মানুষের কাছে এখনো সেভাবে পৌঁছায়নি উন্নয়ন। বরং বেড়েছে দূষণ, নেই যোগাযোগের ভালো ব্যবস্থা। হাসপাতালে অসুস্থ রোগীকে নিতেও পড়তে হয় বিরাট সমস্যায়। এসব সমস্যার বার্তা পৌঁছে দিতেই অভিনব পন্থা বেছে নিলেন এক ব্যক্তি। পঞ্চায়েত ভোটে লড়ছেন তিনি। আর এ ভোটে অংশ নিতেই ২১ কিলোমিটার দৌঁড়ে বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিলেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্মরণ সুব্বা নামের এই ব্যক্তি সাবেক সেনা সদস্য। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিংয়ের জোড়বাংলো সুখিয়াপোখরি মহকুমার সোনাদা গ্রাম পঞ্চায়েতের টুমসং খাসমহলের বাসিন্দা তিনি। বর্তমানে গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন স্মরণ। তবে তার নেশা অ্যাথলেটিকস।
মনোনয়ন জমা দিতে গত বুধবার ভোর ৪টার দিকে বাড়ি থেকে দৌড় শুরু করেন স্মরণ। পরে জোড়বাংলো-সুখিয়াপোখারিতে বিডিও অফিসে পৌঁছান সকাল ৮টার দিকে। তবে সকাল ১০টার আগে খোলা হয় না বিডিও অফিস। তাই তাকে অপেক্ষা করতে হয় প্রায় দুই ঘণ্টা। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন স্মরণ।
স্মরণ বলেন, ‘গাড়িতে করে গিয়ে সহজেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারতাম। তবে, একটি বার্তা দিতে চাচ্ছিলাম আমি। প্রতিদিন ব্যাপক যানজটে পড়ছে পাহাড়। আমরা গাড়ির ব্যবহার যতটা কমাতে পারি, সেই চেষ্টা করতে হবে। যদি কম দূরত্বের রাস্তা অতিক্রম করতে হয়, সেটা হেঁটেও যাওয়া হয়। সেভাবে আমরা দূষণ কমিয়ে আনতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেখানে থাকি, সেখানে রাস্তা বলতে তেমন কিছু নেই। যেহেতু গ্রামের মধ্যে গাড়ি ঢুকতে পারে না, তাই কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিতে অনেক সমস্যা হয়। অসুস্থদের নিয়ে মূল রাস্তায় যেতে পাড়ি দিতে হয় দীর্ঘ পথ।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদাসীনতার কথা উল্লেখ করে স্মরণ বলেন, ‘আমাদের গ্রাম নিয়ে চিন্তা নেই কোনো রাজনৈতিক দলের। যোগাযোগের সমস্যাও অনেক। কয়েক দশক এভাবে কাটলেও সমাধান হয়নি। সে কারণে আমি দৌড়ে মনোনয়ন জমা দিলাম। গ্রামের প্রতিনিধি হয়ে গ্রামের ও পাহাড়ের সমস্যার সমাধান করতে চাই। সেজন্যেই কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে লড়ছি না।’
মন্তব্য করুন