সিঙ্গাপুরে যৌনকর্মীদের লুট ও নির্যাতনের দায়ে দুই ভারতীয় পর্যটককে পাঁচ বছর এক মাসের কারাদণ্ড এবং ১২ বেত্রাঘাতের শাস্তি দিয়েছে আদালত। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দেশটির আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
শনিবার (০৪ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— আরোক্কিয়াসামি ডেইসন (২৩) ও রাজেন্দ্রন মাইলারাসান (২৭)। তারা ভিকটিমদের ওপর হামলা চালিয়ে ডাকাতির অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।
আদালতে জানানো হয়, গত ২৪ এপ্রিল তারা ভারত থেকে সিঙ্গাপুরে ছুটি কাটাতে যান। দুই দিন পর লিটল ইন্ডিয়া এলাকায় এক অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদের কাছে যৌনকর্মী নিয়োগের প্রস্তাব দেন এবং দুই নারীর যোগাযোগের তথ্য দেন। পরে আরোক্কিয়া তার সঙ্গী রাজেন্দ্রনকে টাকার প্রয়োজনে ওই নারীদের ডেকে এনে ছিনতাইয়ের প্রস্তাব দেন।
সেদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা প্রথম নারীর সঙ্গে একটি হোটেল কক্ষে দেখা করে। সেখানে ভুক্তভোগীর হাত-পা কাপড় দিয়ে বেঁধে তাকে চড় মেরে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ দুই হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার, পাসপোর্ট ও ব্যাংক কার্ড ছিনিয়ে নেয়।
এরপর রাত ১১টার দিকে দ্বিতীয় নারীকে আরেকটি হোটেল কক্ষে ডেকে নিয়ে যায় তারা। সেখানে ভুক্তভোগীকে টেনে-হিঁচড়ে কক্ষে আনা হয় এবং মুখ চেপে ধরা হয় যাতে তিনি চিৎকার করতে না পারেন। তারা ওই নারীর কাছ থেকে নগদ ৮০০ সিঙ্গাপুরি ডলার, দুটি মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং তারা ফিরে না আসা পর্যন্ত ঘর থেকে বের না হওয়ার হুমকি দেয়।
পরদিন দ্বিতীয় ভুক্তভোগী অন্য এক ব্যক্তির কাছে ঘটনাটি জানালে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এবং পুলিশে অভিযোগ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাস্তি লঘু করার আবেদন জানিয়ে আদালতে নিজেদের দারিদ্র্যের কথা তুলে ধরেন তারা। আরোক্কিয়াসামি বলেন, গত বছর আমার বাবা মারা গেছেন। আমার তিন বোন রয়েছে। সংসারে অর্থকষ্টে ভুগছিলাম, তাই এমন করেছি।
রাজেন্দ্রন জানান, আমার স্ত্রী ও সন্তান ভারতে একা থাকে। তারা আর্থিক কষ্টে রয়েছে।
সিঙ্গাপুরের আইনে ডাকাতির সময় ভুক্তভোগীর শারীরিক ক্ষতি করলে পাঁচ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। একইসঙ্গে অভিযুক্তকে ন্যূনতম ১২ বেত্রাঘাতের শাস্তি দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন