

দুবাই এয়ারশোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অস্ত্র ক্রেতাদের সামনে ভারতের স্বদেশি যুদ্ধবিমান তেজস বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাটি দেশটির রপ্তানি সম্ভাবনায় নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে। শুক্রবারের এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান পাইলট উইং কমান্ডার নমাংশ স্যল। দুর্ঘটনার কারণ এখনো জানা যায়নি।
রোববার (২৩ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন বিশ্লেষক ডগলাস এ. বার্কি বলেন, দুবাইয়ের মতো বড় মঞ্চে এমন দুর্ঘটনার চিত্র অত্যন্ত নেতিবাচক। যদিও তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, নেতিবাচক প্রচারণার পরও তেজস আবার গতি ফিরে পাবে।
দুবাই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এয়ারশো। এ শোতে এমন দুর্ঘটনা বর্তমানে খুবই বিরল। তবে এর আগে প্যারিস এয়ারশোতেও রাশিয়ার সু-৩০ এবং মিগ-২৯ বিধ্বস্ত হয়েছিল। এরপরও রাশিয়ার সেই বিমানগুলো পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশে বিক্রি হয়েছে।
১৯৮০-এর দশকে পুরনো মিগ-২১ প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে শুরু হওয়া তেজস প্রকল্পে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ চলছে। রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (হাল) ভারতের জন্য ১৮০টি উন্নত এমকে-১৪ ভ্যারিয়েন্ট তৈরির কথা রয়েছে। তবে জিই এরোস্পেসের ইঞ্জিন সরবরাহ সমস্যায় ডেলিভারি পিছিয়ে যাচ্ছে।
হালের সদ্য-অবসর নেওয়া এক কর্মকর্তা জানান, এই দুর্ঘটনা কমপক্ষে আপাতত রপ্তানির সম্ভাবনা বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ। মালয়েশিয়াতেও ২০২৩ সালে হালের অফিস খোলা হয়েছিল।
ভারতীয় বিমানবাহিনীতে বর্তমানে মাত্র ২৯ স্কোয়াড্রন রয়েছে। বাহিনীতে মোট অনুমোদিত সংখ্যা ৪২। এর মধ্যে মিগ-২৯, জাগুয়ার ও মিরাজ ২০০০-এর পুরনো সংস্করণগুলো আগামী বছরগুলোতে অবসরে যেতে যাচ্ছে।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, এগুলোর বিকল্প হিসেবে তেজসকে ধরা হয়েছিল, কিন্তু উৎপাদন সমস্যার কারণে তা সময়মতো পূরণ করতে পারছে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিক ঘাটতি পূরণে ভারত ফরাসি রাফাল, মার্কিন এফ-৩৫, অথবা রাশিয়ার সু-৫৭ কেনার বিষয় বিবেচনা করছে। তবে বর্তমানে বিমানবাহিনীর বহরে থাকা প্রায় ৪০টি তেজসের সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
বিশ্লেষক ওয়াল্টার লাডউইগ বলেন, তেজসের আন্তর্জাতিক বিক্রি যতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ভবিষ্যৎ ভারতীয় যুদ্ধবিমান প্রকল্পের জন্য এটি যে শিল্প ও প্রযুক্তিগত ভিত্তি তৈরি করছে।
মন্তব্য করুন