১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের মধ্যে বিনিময় হয়েছে এমন জমি বা স্থাবর সম্পত্তির নতুন জরিপ শুরু করেছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২ বছর পর ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের এমন উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বর্তমানে ওই সম্পত্তির মালিকানার সবশেষ অবস্থা দেশটির রাষ্ট্রীয় তদন্তের আওতায় আনা। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তখনকার পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে কমপক্ষে ১৫ লাখ উদ্বাস্তু ভারতে আশ্রয় নিয়ে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উভয় দেশের জনগণের মধ্যে বিনিময় করা জমির স্থিতি খুঁজে বের করার জন্য একটি জরিপ শুরু করে ত্রিপুরা সরকার।
দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে ত্রিপুরার পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয় সমীক্ষা ও পর্যালোচনা শুরু করে। এই দায়িত্ব পালনে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। তারা খুঁজে বের করছেন, জমির মালিকানা যাদের কাছে রয়েছে তাদের কাছে বৈধ নথি আছে কিনা।
হিন্দুস্তান টাইমস জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ‘কিছু লোক এখানে স্থানান্তরিত হয়ে এসেছে এবং জমি বিনিময় করেছে। কেউ নিবন্ধন করে জমি বদল করেছেন আবার কেউ কেউ রেজিস্ট্রিবিহীন জমি দখল করেছেন। এমন কিছু লোক থাকতে পারে যারা উদ্বাস্তু সেজে ত্রিপুরায় জমি দখল করেছেন। এসব স্থাবর সম্পত্তির সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্যই আমরা জরিপ চালাচ্ছি। এই রাজ্যে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ১১৭টি দখলবিষয়ক মামলা রয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজস্ব বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এসব জমির অবস্থা খুঁজে বের করতে এর আগে ১৯৮০ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে কয়েক ধাপে এমন জরিপ চালানো হয়।
ভারতের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, দখলকৃত জমির বৈধ কাগজপত্র ছাড়া সেটা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে পরিণত হয়। যাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র রয়েছে শুধু তাদের জমি বা সম্পত্তি মিউটেশনের মাধ্যমে মালিকানা স্থায়ী করে দেওয়া হবে। যাদের দখলকৃত জমি বা সম্পত্তির দলিল নেই তাদের এই সম্পত্তিগুলো ইজারা নিতে বলা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে আসাম, পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্য রাজ্যগুলোতে একই ধরনের জমি বা সম্পত্তি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া চালু করে ভারত।
মন্তব্য করুন