মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলার প্রেক্ষাপটে ইরানকে বারবার সমঝোতার প্রস্তাব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এসব প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ জুন) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরাগচি জানান, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে একাধিক ‘গুরুত্বপূর্ণ ও আন্তরিক বার্তা’ ইরানের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি ‘ইসরায়েলের আগ্রাসনের অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের বলার কিছু নেই।‘
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে কোনো আলোচনার প্রশ্নই আসে না। এটি আমাদের আত্মরক্ষার অধিকার। কোনো সুস্থবুদ্ধিসম্পন্ন দেশই নিজের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে আলোচনায় বসে না।’
আরাগচি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেন, ‘ইসরায়েলি হামলা যতদিন চলবে, ততদিন ইরান কারও সঙ্গেই কোনো আলোচনা করবে না।’
তবে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। তার নেতৃত্বে জেনেভায় একটি কূটনৈতিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে অংশ নেবেন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কায়া কালাস।
ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আরাগচি বলেন, আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি সুনির্দিষ্ট, প্রতিরক্ষামূলক এবং নৈতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে পরিচালিত। ইরানের সশস্ত্র বাহিনী কেবল সামরিক ও অর্থনৈতিক স্থাপনাগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু বানায়। আমরা কখনোই আবাসিক ভবন, হাসপাতাল বা বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালাই না।
প্রসঙ্গত, ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর থেকে দুই দেশের এই সংঘাত শুরু হয় গত সপ্তাহে, যখন ইসরায়েল একযোগে ইরানের বেশ কয়েকটি সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে তেহরানও ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যা এখনো চলমান।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত এবং কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন। অপরদিকে, ইরানি গণমাধ্যমের দাবি, ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ৬৩৯ জন নিহত এবং ১,৩০০-র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন