জাতিসংঘের পুরনো নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আসা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে পারমাণবিক স্থাপনা বানানোর বিষয়ে চুক্তি করেছে ইরান। দেশটি নতুন চারটি পারমাণবিক স্থাপনার জন্য ২৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা পুনরারোপের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে, ইরান ও রাশিয়া ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তির আওতায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে চারটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক সংস্থা রোসাটম।
শুক্রবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে প্রচারিত খবরে বলা হয়েছে, হরমোজগান প্রদেশের সিরিক শহরে চারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ইরানের হরমোজ কোম্পানি এবং রাশিয়ার রোসাটমের মধ্যে ২৫ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ইরানের কেবল একটি কার্যকর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। বুশেহরে অবস্থিত এ কেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা মাত্র এক হাজার মেগাওয়াট। এটি দেশের মোট চাহিদার সীমিত অংশ পূরণ করে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, সিরিকে নির্মিতব্য প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে এক হাজার ২৫৫ মেগাওয়াট। তবে এই প্রকল্পের নির্মাণ শুরু বা সমাপ্তির নির্দিষ্ট সময়সীমা জানানো হয়নি।
পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চায়। তবে তেহরান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। দেশটির দাবি, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুই বেসামরিক এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানও ধীরে ধীরে চুক্তির শর্ত থেকে সরে আসে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা শুরু হলেও, ২০২৫ সালের জুনে ইসরায়েলের নজিরবিহীন সামরিক হামলার পর ১২ দিনের যুদ্ধ শুরু হয় এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্রও সাময়িকভাবে জড়িয়ে পড়ে, যার ফলে আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়।
ইরান আগেও ১৯৯৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তি করেছিল। এ চুক্তির আওতায় বুশেহর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হয়। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর জার্মানি ওই প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ানোর পর রাশিয়াই দায়িত্ব গ্রহণ করে।
মন্তব্য করুন