

পশ্চিমা বিশ্বের কড়া নজরদারি ও দখলদার ইসরায়েলের চোখ রাঙ্গানি, সবকিছুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মহাকাশের বুক চিরে উৎক্ষেপণ হলো ইরানের তিনটি কৃত্রিম উপগ্রহ। একের পর এক নিষেধাজ্ঞার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে মস্কোর বন্ধুত্বের হাত ধরে মহাকাশে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিল তেহরান।
পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বৈশ্বিক চাপের মুখে থাকা দেশটি যেন স্পষ্ট বুঝিয়ে দিল, নিষেধাজ্ঞার শৃঙ্খল তাদের প্রযুক্তিগত অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কক্ষপথে স্যাটেলাইট স্থাপনে বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর ধীরে ধীরে নির্ভরতা বাড়িয়েছে ইরান। এরই ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার সাহায্যে মহাকাশে ৩টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে দেশটি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, রাশিয়ার সহায়তায় মহাকাশে পাঠানো তিনটি স্যাটেলাইট হলো– পায়া, জাফর-২ এবং দ্বিতীয় কাউসার। এই স্যাটেলাইটগুলো মূলত পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে অবস্থান করে কৃষি, প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ পর্যবেক্ষণের কাজে ইরানের বিজ্ঞানীদের সহায়তা করবে।
রাশিয়ায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজেম জলালি এই অভিযানকে ইরানের বিজ্ঞানীদের এক বিশাল জয় বলেছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন সব নিষেধাজ্ঞা ও হুমকির মধ্যেও এই স্যাটেলাইটগুলো ইরানি বিজ্ঞানীরাই নকশা করেছে এবং তৈরি করেছেন। তিনি আরও ইঙ্গিত দেন যে, রাশিয়ার সাথে ইরানের এই সহযোগিতা কেবল মহাকাশেই সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরান ও রাশিয়া একসাথে কাজ করছে। তার মধ্যে কিছু বিষয় প্রকাশ্যে আনা হলেও অন্য ক্ষেত্রগুলো তারা গোপনই রাখতে চান।
মূলত ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের সূচনার পর থেকেই ইরান ও রাশিয়ার বন্ধুত্ব এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। যদিও পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, ইরান রাশিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সরবরাহ করে যুদ্ধে সাহায্য করছে। তবে তেহরান বরাবরই এই দাবি অস্বীকার করে আসছে। এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সেই ক্রমবর্ধমান বন্ধুত্বেরই একটি বড় প্রমাণ।
মন্তব্য করুন