কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নতুন সংকটে ইরান, ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী আয়াতুল্লাহ খামেনির দেশ ইরান এবার কি সত্যিই ধরাশায়ী হতে চলেছে? যে দেশের মিসাইল কারখানা ২৪ ঘণ্টা ব্যস্ত থাকে পরবর্তী যুদ্ধের প্রস্তুতিতে, যে দেশ পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে রীতিমতো ধরাশায়ী করেছে, আর ইসরায়েলের অতর্কিত হামলাও মোকাবিলা করে দেশটিকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছে, সেই শক্তিধর রাষ্ট্রটি এখন সম্মুখীন হতে যাচ্ছে এক ভিন্ন নতুন সংকটে। ক্ষেপণাস্ত্র নয়, শত্রুসেনা নয়, তেল নয় এবার তাদের পায়ের নিচে মাটি সরিয়ে দিচ্ছে এক ফোঁটা বিশুদ্ধ পানি!

তেহরানের প্রধান খাবার পানির উৎস দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ। শহরটির পানি সরবরাহকারী সংস্থার পরিচালক বেহজাদ পারসা বলেছেন, শহরের প্রধান জলাধার আমির কাবির বাঁধে বর্তমানে মাত্র এক কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি রয়েছে। বর্তমানে এটি মাত্র আর ১৪ দিন তেহরানকে পানি সরবরাহ করতে পারবে। তেহরান প্রদেশ দীর্ঘমেয়াদি খরার কবলে পড়েছে, যা অঞ্চলটিকে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর পানি সংকটের মুখে ফেলেছে। সংবাদমাধ্যমের মতে, আগামী কয়েক মাসে যদি বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে তেহরানে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও টেকসই পানীয় জলের সরবরাহ গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

টানা পাঁচ বছর শুষ্কতা এবং রেকর্ড তাপের পর, তেহরান পৌরসভার কলগুলো শুকিয়ে যাওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জলাধারের পানির স্তর ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে এবং মানুষের মেজাজ ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, যদি উল্লেখযোগ্যভাবে পানি ব্যবহারে কাটছাঁট না করা হয়, তাহলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাজধানীর কিছু অংশ ‘ডে জিরো’র মুখোমুখি হতে পারে। অর্থাৎ, বাড়ির পানির কল পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং পানি সরবরাহ করা হবে স্ট্যান্ডপাইপ বা ট্যাংকারের মাধ্যমে।

বছরের শুরুতেই তারা এই সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু একটি পানি সংকট নয়, বরং পানির দেউলিয়াত্ব, এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে পানি এতটাই অতিরিক্তভাবে ব্যবহার করা হয়েছে যে ক্ষয়ক্ষতি আর পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।

রাজধানী তেহরান ইরানের বৃহত্তম শহর এবং প্রায় এক কোটি মানুষের বাসস্থান। এটি পানির জন্য পাঁচটি প্রধান বাঁধের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত জুলাইয়ে এর ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়, তেহরানের অন্যতম সরবরাহকারী আমির কবির বাঁধের জলাধারের কেন্দ্র থেকে উঁচু পাথরের ঢাল উঠে এসেছে এক ফোঁটা পানি নেই সেখানে। পানির তীব্র সংকটে থাকা খুজেস্তান ও সিস্তান-বেলুচিস্তানসহ একাধিক প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে গণবিক্ষোভ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট সমাধানের জন্য পানি, জ্বালানি ও ভূমি নীতিতে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক। ইরান আগামী সাত বছরে পুনর্ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রিত সেচের মাধ্যমে বার্ষিক পানি ব্যবহার ৪৫ বিলিয়ন ঘনমিটার কমানোর উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য নিয়েছে। তবে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, প্রশাসনিক জটিলতা এবং বিনিয়োগের ঘাটতি এই গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যপূরণের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অনন্ত জলিলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

ধানের শীষের প্রার্থীর দাবিতে আমরণ অনশনে রিয়াজুল

চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে স্টেশন মাস্টার গুরুতর আহত

শেষ সেশনে স্বস্তি বাংলাদেশের, আয়ারল্যান্ড ২৭০/৮

‘শিল্প লবণের নামে খাবার লবণ আমদানি করতে দেওয়া হবে না’

অজু করার সময় মারাত্মক এই ৭ ভুল হচ্ছে না তো? জেনে নিন এখনই

সংবিধানে রাষ্ট্রপতির আদেশ জারির কোনো বিধান নেই : সালাহউদ্দিন আহমদ

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কঠোর অবস্থানে সিরিয়া

আ.লী‌গের দুই নেতা আটক

নির্বাচনী প্রচারণায় যে দুই জিনিস ব্যবহার নিষিদ্ধ

১০

‘সুযোগ’ পেলে জোটবদ্ধ নির্বাচন করতে আগ্রহী জাতীয় পার্টি

১১

প্রথম সমাবর্তন না হলেও দ্বিতীয় সমাবর্তনের ফি দিতে বাধ্য করছে বুটেক্স

১২

সড়কের পাশে জ্বালানি তেল বিক্রি সাময়িক বন্ধ থাকবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 

১৩

প্রশাসনের ৬ কর্মকর্তা পেলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা

১৪

বিপিএলে দেখা যেতে পারে ওয়েলালাগে-উসমান খানকে

১৫

প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত ইমরানও মারা গেছে

১৬

ভারতের তাজ চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ঊনাদিত্য’

১৭

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মিলল ছাত্রদল নেতার লাশ

১৮

‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কেমন হবে সেই সিদ্ধান্ত জনগণের’

১৯

নতুন সংকটে ইরান, ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

২০
X