

ইসরায়লি হামলায় ‘মৃত’ ঘোষণার পর গাজার একটি মর্গে আট ঘণ্টা অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিল ১২ বছরের রাগাদ আল-আসার। গত বছরের ওই হামলার পর তাকে মৃত মনে করে মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এক ব্যক্তি নিজের সন্তানের মরদেহ খুঁজতে গিয়ে রাগাদের হাতের নড়াচড়া দেখতে পেয়ে বিষয়টি চিকিৎসকদের জানান।
আলজাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাগাদ বলেন, আমরা ঘরে বসে ছিলাম। হঠাৎ গুলি, ড্রোন আর বিমান আমাদের ওপর হামলে পড়ল।
হামলার পর দুই সপ্তাহ তিনি কোমায় ছিলেন। জ্ঞান ফেরার পর পরিবার জানায়— তাকে মর্গের ফ্রিজে রাখা হয়েছিল।
গত বছরের ৮ জুন কেন্দ্রীয় গাজায় তাদের বাড়িতে ইসরায়লি হামলায় রাগাদের দুই বোন নিহত হয়। পরিবারে সবাই কমবেশি আহত হন। রাগাদ জানান, বড় বোনের অবস্থা এখনো গুরুতর— এক চোখে দেখতে পান না, শরীরে গভীর ক্ষত এবং অভ্যন্তরীণ জটিলতা রয়েছে।
রাগাদের এই বেঁচে যাওয়ার গল্প গাজার যুদ্ধের অসংখ্য হৃদয়বিদারক ঘটনার একটি মাত্র অংশ। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ইসরায়লের এই অভিযানকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৪ হাজার শিশু নিহত ও আহত হয়েছে বলে রিপোর্ট পাওয়া গেছে। পাল্টা হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৬৯,১৮৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৭০,৭০৩ জন আহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অনেক সময় আহতদের দ্রুত শনাক্ত বা চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না। একইসঙ্গে, মর্গগুলোও অতিরিক্ত চাপের মুখে। যেখানে ভুলভাবে মৃত ঘোষণা বা শনাক্তকরণের মতো ঘটনা বেড়েই চলেছে।
রাগাদের গল্প শুধু এক শিশুর অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়ার ঘটনা নয়। এটি গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের গভীরতা ও নির্মম বাস্তবতার আরেকটি প্রমাণ।
মন্তব্য করুন