

সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশটি। সেখানে স্থায়ী স্থিতিশীলতা আনতে সহযোগিতা করে যাচ্ছে তুরস্কসহ ব্রিটিশ ও ইউরোপীয় কয়েকটি দেশ। নমনীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। এরই ধারাবাহিকতায় কানাডার কাছ থেকে সুখবর পেয়েছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বাধীন সিরিয়া।
বিবিসি ও আলাজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়াকে সন্ত্রাসবাদী দেশের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে কানাডা। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দেয়।
শুধু তাই নয়, বাশার আল-আসাদ সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নামও সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে হায়াত তাহরির আল-শাম ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা এই গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন।
কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এসব সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। দেশের স্থিতিশীলতা বাড়াতে, অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়তে এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী উদ্যোগে কাজ করতে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দ বলেছেন, সিরিয়া সরকারের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক রূপান্তরের পদক্ষেপকে কানাডা স্বাগত জানায়। প্রয়োজনে অন্যান্য সহযোগিতা করতেও কানাডা আগ্রহী।
এদিকে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় গত এক বছরে ২১টি সামরিক অভিযান চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন গ্লোবাল কোয়ালিশন। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর)।
এসওএইচআর জানায়, ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদের পতনের পর এসব অভিযান চালানো হয়। এতে মোট ২৯ জনকে টার্গেট করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন বেসামরিক নাগরিকও ছিলেন।
অভিযানগুলোতে ড্রোন হামলা ও বিমান হামলা ব্যবহার করা হয়। মূল লক্ষ্য ছিল আইএসআইএস, হুরাস আল-দিন ও জয়শ আল-আকসার নেতা, সদস্য ও সহযোগীরা। দেইর ইজ-জোর, রাক্কা, ইদলিব, আলেপ্পো থেকে শুরু করে দামেস্কের গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত এসব অভিযান বিস্তৃত ছিল। বেশিরভাগ টার্গেট ছিলেন সিনিয়র নেতা, সক্রিয় যোদ্ধা বা চরমপন্থি কার্যক্রমে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তি।
এসওএইচআর জানিয়েছে, জিহাদিবাদী গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্ব ও লজিস্টিক্স দুর্বল করতেই গ্লোবাল কোয়ালিশনের এ সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত মে মাসে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেবে। তবে সিজার অ্যাক্ট বাতিল করতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন, যা বছরের শেষ নাগাদ হতে পারে। ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্তে তুরস্ক, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ নতুন আশা খুঁজে পায়।
মন্তব্য করুন