অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ইসরায়েলে ভয়াবহ রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস। হামাসের এই হামলার পর গাজায় পাল্টা বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। পাল্টাপাল্টি হামলায় এরই মধ্যে দুই দেশের এক হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কয়েক হাজার মানুষ। দুই দেশের মধ্যে এখনো লড়াই চলছে। ফলে হতাহতের এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
দুই দেশের এমন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে একটা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেটি হলো এতদিন থাকতে কেন ৬ অক্টোবরকেই বেছে নিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। অবশ্য হামাসের এই দিন বেছে নেওয়ার সম্ভাব্য দুটির কারণের কথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। একটি ইয়োম-কিপুর যুদ্ধ, অন্যটি সিমচাট তোরাহ।
ইয়োম-কিপুর যুদ্ধ
৫০ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ৬ অক্টোবর মিসর ও সিরিয়া যৌথভাবে ইসরায়েলে আক্রমণ করে। এবার যেমন হামাসের হামলার জন্য ইসরায়েল প্রস্তুত ছিল না ঠিক তেমনি সেবারের হামলার জন্যও মোটেই প্রস্তুত ছিল না ইসরায়েলিরা। এ যুদ্ধের পরিণতি কেবল ওই অঞ্চলেই নয় বরং পুরো বিশ্বেই পরিবর্তনের সূচনা করেছিল। ইসরায়েল ও পশ্চিমা বিশ্বের কাছে এ যুদ্ধ ‘ইয়োম-কিপুর যুদ্ধ’ নামে পরিচিত। তবে মধ্যপ্রাচ্যে এ যুদ্ধ রমজান মাসের যুদ্ধ নামে পরিচিত।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধে হারানো সিনাই উপদ্বীপ এবং গোলান মালভূমি দখলমুক্ত করতে মিসর ও সিরিয়া দুই দিক থেকে ইসরায়েল আক্রমণ করলে এই যুদ্ধের সূচনা হয়। এ যুদ্ধের প্রায় ছয় বছর আগে ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে বিজয়ী ইসরায়েল এই ভূখণ্ড দুটি দখলে নেয়। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক ভূখণ্ডের যেটুকু তখনো তাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত ছিল, সে অংশও সরাসরি দখল করে বসে।
তবে পশ্চিমাদের অস্ত্র সহায়তায় যুদ্ধ শুরুর ১০ দিন পর ১৬ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনী মিসর ও সিরীয় বাহিনীর প্রতিরক্ষা ব্যুহ ভেদ করে যুদ্ধের মোড় নিজেদের অনুকূলে আনতে পারে তারা। এই যুদ্ধে প্রায় ২০ হাজার মানুষ মারা যায়। তবে ওই যুদ্ধে প্রকৃত বিজয়ী কে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
সিমচাট তোরাহ
প্রতি বছর অক্টোবরে সিমচাট তোরাহ পালন করে ইসরায়েল। ইহুদি ধর্মের পবিত্র উৎসবের মধ্যে এটি অন্যতম। শনিবার ছিল সেই দিন। ফলে গাজা উপত্যকা সংলগ্ন এলাকায় সংগীত উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেখানে অনেক ইসরায়েলি ও বিদেশি পর্যটক জড়ো হলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ শুরু করে হামাস।
মন্তব্য করুন