

বৈশ্বিক ভূরাজিনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে পাকিস্তান। দেশটি যেমন মধ্যপ্রাচ্যে ভারসাম্য বজায় রাখছে, ঠিক তেমই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও মন রক্ষা করে চলছে। এ অবস্থায় গাজায় শান্তি ফেরাতে ট্রাম্পের আরোপিত ২০ দফা প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে পাকিস্তান।
গত সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই আপত্তির কথা জানায় ইসলামাবাদ। জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখার আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তাবটি উত্থাপনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং এর পক্ষে ভোটও দেন।
তবে তিনি জানান, এই প্রস্তাবে পাকিস্তান পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়। কারণ এই প্রস্তাবে পাকিস্তানের দেওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব যুক্ত করা হয়নি।
গাজায় শান্তিচুক্তির লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বর ট্রাম্পের উত্থাপিত ২০ দফা প্রস্তাবে গাজায় একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন এবং একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী আইএসএফ গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে পাকিস্তান বলছে, এই প্রস্তাবে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বস্ত রূপরেখা থাকলেও জাতিসংঘের ভূমিকা, গাজা প্রশাসন পর্যবক্ষেণের জন্য প্রস্তাবিত বোর্ড অব পিস এবং আইএসএফ সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজা নিয়ে ট্রাম্পের আরোপিত প্রস্তাবে পাকিস্তানসহ আরব ও মুসলিম বিশ্ব সম্মতি জানালেও পাকিস্তান এখন অভ্যন্তরীণ চাপে রয়েছে। কারণ আরব ও মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শক্তিশালী সেনাবাহিনী রয়েছে ইসলামাবাদের। সেই সঙ্গে দেশটি পারমাণবিক শক্তিধরও।
এ অব্স্থায় পাকিস্তান অত্যন্ত সূক্ষ্ম কৌশলে সামনে এগোনোর চেষ্টা করছে। পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান বশীর বলেন, ‘মার্কিন কৌশল খুবই স্পষ্ট এবং এতে ইসরায়েলের প্রতি ঝোঁক রয়েছে। তারপরও আমাদের স্বীকার করতে হবে গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় এটিই সবচেয়ে ভালো বিকল্প।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে পাকিস্তানের যেভাবে সখ্যতা বাড়ছে, সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাইছে ইসলামাবাদ। দেশটির গাজায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে নিজেদের সক্ষমতাকে আরও প্রসারিত করতে চাইছে। তবে এটি পাকিস্তানের জন্য মোটেও সহজ হবে না। কারণ গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী বা আইএসএফ মোতায়েনের ক্ষেত্রে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। এজন্য আরব আমিরাত এবং জর্ডানও গাজায় সেনা পাঠানোর ক্ষেত্রে আগ্রত দেখাচ্ছে না।
মন্তব্য করুন