গাজা থেকে প্রায় ৭ হাজার বিদেশি এবং দ্বৈত নাগরিকদের সরিয়ে নিতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে মিসর। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসমাইল খাইরাত বলেন, ‘মিসর রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজা থেকে বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’ তিনি আরও জানান, ৬০টিরও বেশি জাতীয়তার ৭ হাজার নাগরিকেদের সরিয়ে নেন।
বিবৃতিতে মিসর এসব পরিকল্পনার জন্য কোনো সময়রেখা উল্লেখ করেনি। মিসরীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার ৭৬ জন আহত ফিলিস্তিনি এবং ৩৩৫ জন বিদেশি পাসপোর্টধারী মিসরে প্রবেশ করেছে। তাদের মধ্যে ৩১ জন অস্ট্রিয়ান, চারজন ইতালিয়ান, পাঁচজন ফরাসি এবং কিছু জার্মান নাগরিক রয়েছে বলে তাদের মিসরীয় সরকার জানিয়েছে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, মার্কিন নাগরিকরাও গাজা থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন। তবে তিনি সীমান্ত পাড়ি দেওয়া মার্কিন নাগরিকের সংখ্যা জানাতে অস্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে বোমা হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েল থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জর্ডান। একই সঙ্গে আম্মানে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে আর জর্ডানে না ফেরার নির্দেশ দিয়েছে দেশটি।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান আল-সাফাদি বলেছেন, গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ করলেই রাষ্ট্রদূতরা তাদের নিজ নিজ পদে ফিরবেন। এরই মধ্যে বিষয়টি ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিতে নিজ দেশের মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মিসরের পর দ্বিতীয় আরব দেশ হিসেবে ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র জর্ডান।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার জবাবে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা করে আসছে ইসরায়েল। টানা বোমা হামলার মধ্যেই গত শনিবার সেখানে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর থেকেই হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের তুমুল লড়াইয়ের খবর আসছে।
মাত্র তিন সপ্তাহের ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আট হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে সাড়ে তিন হাজার শিশু রয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে সংঘাতে মোট যত শিশু নিহত হয়েছে তার চেয়ে গত তিন সপ্তাহে গাজায় বেশি শিশু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক শিশুবিষয়ক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।
মন্তব্য করুন