

বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে ভয়াবহভাবে মেরু ভালুকের বিলুপ্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে এরই মধ্যেই এক নতুন গবেষণা সবাইকে আশার আলো দেখাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এমন কিছু জিনগত পরিবর্তন শনাক্ত করেছেন যা এই প্রাণীগুলিকে উষ্ণ আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মনে করা হচ্ছে, এই প্রথম কোনো বন্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর ডিএনএ-তে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে পরিসংখ্যানগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ খুঁজে পাওয়া গেল। ইউনিভার্সিটি অফ ইস্ট অ্যাংলিয়ার গবেষকরা দেখেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব গ্রিনল্যান্ডের মেরু ভালুকদের মধ্যে তাপ চাপ, বার্ধক্য এবং মেটাবলিজমের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু জিন ভিন্নভাবে কাজ করছে।
এই অঞ্চলের পরিবেশ উত্তর গ্রিনল্যান্ডের চেয়ে উষ্ণ এবং কম বরফযুক্ত। গবেষকরা ভালুকের রক্ত নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখেন, দক্ষিণ-পূর্বের ভাল্লুকদের ডিএনএ-তে জাম্পিং জিন বা মোবাইল জিনোম খণ্ডগুলির কার্যকলাপ নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। এই জাম্পিং জিনগুলি অন্যান্য জিনের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
প্রধান গবেষক ড. অ্যালিস গডেন বলেন, এই ভালুকগুলি সম্ভবত দ্রুত গলে যাওয়া সামুদ্রিক বরফের বিরুদ্ধে বাঁচার জন্য তাদের ডিএনএ দ্রুত পুনবিন্যাস করছে। অন্যদিকে, এ ভালুকদের খাদ্যাভ্যাসও বদলেছে— তারা কম চর্বিযুক্ত উদ্ভিদজাত খাবার খাচ্ছে, আর তাদের ডিএনএ-তে চর্বি প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, যা খাদ্যের অভাবের সময়ে তাদের বাঁচতে সাহায্য করছে।
আর এই পরিবর্তনগুলোই মেরু ভালুকের বেঁচে থাকার আশা জাগায়। তবে গবেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে এই পরিবর্তনগুলি তাদের বিলুপ্তির ঝুঁকিকে পুরোপুরি কমাচ্ছে না। সুতরাং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধ করা এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি।
মন্তব্য করুন