বিশ্বজুড়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিল টেক জায়ান্ট গুগল। ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন প্রতিষ্ঠানটির কিছুসংখ্যক কর্মী। এমনকি স্বাক্ষরিত সেই চুক্তি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভও করেছিলেন তারা। এর জেরে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে ২৮ কর্মীকে।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আরও চাঙা হচ্ছে বিক্ষোভ। ফলে বিপাকে পড়েছে এই টেক জায়ান্ট। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
জানা গেছে, ইসরায়েলকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ক্লাউড সার্ভিস পরিষেবার জন্য অ্যামাজনের সঙ্গে যৌথভাবে ১.২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে গুগল। গাজায় নির্বিচার হামলা চালানোয় ইসরায়েলের সঙ্গে করা ওই চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন ছাঁটাই হওয়া কর্মীরা।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গেল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর, সিয়াটেল এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সানিভেলে যৌথভাবে ‘নো টেক ফর অ্যাপারথেড অরগানাইজেশন’ নাম দিয়ে এই বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়।
ওই দিন বিক্ষুব্ধরা প্রায় ১০ ঘণ্টা এই চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি পালনসহ বিক্ষোভ করেন এবং পুরো বিক্ষোভের সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ওই ঘটনার পর বিক্ষোভে জড়িত ৯ জনকে অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ এনে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের গুগলের পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠানো হয়। এমনকি যারা আন্দোলনের সমর্থক, কিন্তু সরাসরি অবস্থান বিক্ষোভে অংশ নেননি, তাদের কাছেও নোটিশ এবং সাবাইকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গুগলের পক্ষ থেকে দেওয়া এক অভ্যন্তরীণ বিবৃতিতে কর্মীদের জানানো হয়েছে, প্রতিষ্ঠান হিসেবে গুগল এ ধরনের বিক্ষোভের কোনো জায়গা নেই এবং তারা এটা বরদাশতও করবে না।
ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, সংস্থাটি এই বিক্ষোভকে খুবই গুরুত্বসহকারে দেখছে এবং খুব স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে— এই ধরনের ঘটনা আবার ঘটলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ছাঁটাই হওয়া এক কর্মী জানিয়েছেন, গুগল কর্মীদের ছাঁটাই করলেও ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলন ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। মঙ্গলবারের অবস্থান কর্মসূচির পর তা আরও বাড়ছে।
নো টেক ফর অ্যাপারথেড অরগানাইজেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গুগলের কর্মীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানানোর অধিকার আছে। গুগলের এই ছাঁটাই আসলে প্রতিহিংসামূলক।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের সম্পর্কে এক বিবৃতিতে গুগল জানিয়েছে, শারীরিকভাবে অন্য কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া নীতিবিরোধী এবং এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এই কর্মীদের বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা অফিসের অঞ্চল ছেড়ে যেতে রাজি না তাই নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের বের করে দেওয়া হয়।
অবশ্য গুগলে আন্দোলন করে ছাঁটাই এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৮ সালেও এক যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রতিবাদ জানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশকিছু কর্মীর ওপর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল গুগল।
মন্তব্য করুন