বিশ্বজুড়ে হুমকির মুখে পড়েছে মার্কিন ডলারের রাজত্ব। যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি খবরদারির হাত থেকে রক্ষা পেতে ইতোমধ্যেই ডলার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ। সেই একই পথে হেঁটেছে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের একসময়ের মিত্র দেশ পাকিস্তানও।
ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে মোড় ঘুরে যাওয়া বৈশ্বিক রাজনীতিতে পাকিস্তান এখন রাশিয়ার অন্যতম সহযোগী। গেল বছর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে বিশ্ববাজারে রাশিয়ার তেলের দাম পড়ে গেলে মস্কোর কাছ থেকে বিশেষ ছাড়ে অপরিশোধিত তেল কিনতে শুরু করে ইসলামাবাদ। সেই তেলের মূল্য ডলারের পরিবর্তে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে শোধ করা হচ্ছে।
গত সোমবার (১২ জুন) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডলার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার এ বিষয়টি জানিয়েছেন পাকিস্তানের জ্বালানি মন্ত্রী মুসাদিক মালিক।
তিনি জানান, রাশিয়া থেকে ছাড়ে কেনা অপরিশোধিত তেলের দাম চীনা মুদ্রা ইউয়ানে শোধ করছে পাকিস্তান।
মুসাদিক মালিক বলেন, এ পন্থায় আমদানি করা রুশ তেলের পরিশোধন ও ব্যবহার ইসলামাবাদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক।
পাকিস্তান রাশিয়ার কাছ থেকে কী পরিমাণ তেল কিনছে—এমন প্রশ্নের জবাবে মুসাদিক মালিক জানান, গত এপ্রিল মাসে পাকিস্তান ও রাশিয়ার মধ্যে প্রথম জিটুজি চুক্তিতে এক লাখ টন অপরিশোধিত রুশ তেল কেনার চুক্তি হয়। এর মধ্যে ৪৫ হাজার টন তেল করাচি বন্দরে পৌঁছেছে, বাকিটাও আসার পথে রয়েছে।
তেলের মান সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা ইউরালস অর্থাৎ বিশ্বের অন্যতম সহজলভ্য হালকা অপরিশোধিত তেল কিনছি। এরপর আমদানি করা এই রুশ তেল পাকিস্তান রিফাইনারি লিমিটেড পরিশোধন করবে।
পাকিস্তান কী দামে এই তেল কিনেছে বা কতটা মূল্যছাড় পেয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান পাকিস্তানি এই মন্ত্রী। তবে তিনি নিশ্চিত করেন, এই তেলের দাম ইউয়ানে শোধ করা হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে রুশ তেলের এই চালানকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি ‘ট্রায়াল রান’ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
রাষ্ট্রের জন্মের সময় থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের অপরিশোধিত তেল আমদানি করে পাকিস্তান। এই প্রথম এ ঘটনার ব্যত্যয় ঘটল। ২০২২ সালে দেশটি দৈনিক প্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ব্যারেল তেল আমদানি করেছিল।
এর আগের বছরও তাদের তেল আমদানির পরিমাণ প্রায় একই ছিল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের একটি বড় অংশই যায় জ্বালানি আমদানির পেছনে।
মন্তব্য করুন