ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ন্যাশনাল ইরানি আমেরিকান কাউন্সিলের (এনআইএসি) প্রেসিডেন্ট জামাল আবদি। তার দাবি, ট্রাম্প বাস্তবে বুঝতেই পারছেন না এই উসকানিমূলক হামলার পরিণতি কী হতে পারে। খবর আলজাজিরার।
আবদি বলেন, এটা খুবই নাটকীয় এবং উসকানিমূলক এক পদক্ষেপ। আমার মনে হয় না যে ট্রাম্প জানেন এর ফল কী হতে পারে। তিনি কোনো কৌশলগত বা কূটনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে এগোননি। যদি ইরান এর জবাব দেয়, তাহলে এর জন্য কী পরিকল্পনা আছে—তাও পরিষ্কার নয়।
তিনি অভিযোগ করেন, আমেরিকা ফার্স্ট' স্লোগানের আড়ালে ট্রাম্প এমন এক পথে হাঁটছেন, যা যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। তিনি বলেন, অনেকেই এখন মনে করছেন, ট্রাম্প যেন আমাদের সঙ্গে একপ্রকার খেলা খেলেছে। আমরা তার প্রথম মেয়াদ থেকেই বুঝতে পারতাম, সে আসলে কী করতে চায়। তখনই যদি আমরা কার্যকর কিছু করতাম, তাহলে হয়তো আজকের এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত।
আবদি দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র-ইরান কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের পক্ষে কাজ করে আসছেন। তার মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ কেবল উত্তেজনা বাড়াবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করবে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ট্রাম্প কীভাবে নিশ্চিত করবেন যে এই ঘটনার পরিণতি যুক্তরাষ্ট্র বা বিশ্বের জন্য ভয়াবহ হবে না? তার সিদ্ধান্তে যে কোনো সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
জামাল আবদির মতে, ট্রাম্প এ হামলার মাধ্যমে কেবল নিজের রাজনৈতিক অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করছেন, অথচ বাস্তব কূটনৈতিক বা সামরিক পরিণতি নিয়ে তিনি চিন্তাই করেননি। এখন দেখার বিষয়, পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় 'বাংকার বাস্টার' নামের বিশেষ বোমা ব্যবহার করা হয়েছে, যা মাটির গভীরে থাকা শক্তিশালী ও সুরক্ষিত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে সক্ষম।
এর আগে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ ট্রাম্প লেখেন, আমরা ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান—এ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় খুবই সফলভাবে হামলা চালিয়েছি। এখন আমাদের সব বিমান ইরানের আকাশসীমার বাইরে।
এ ছাড়া ট্রাম্প একটি ওপেন-সোর্স গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক পোস্ট শেয়ার করেন, যেখানে দাবি করা হয়—শক্তিশালী সুরক্ষায় থাকা ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ফোরদো হচ্ছে ইরানের সবচেয়ে গোপন ও সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর একটি। এটি কোম প্রদেশে একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত এবং বহুদিন ধরেই ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু বলে বিবেচিত।
মন্তব্য করুন