নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত জোহারান মামদানির উত্থান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য বড়ই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদর্শ, দর্শন ও রাজনৈতিক অবস্থানগত দিক থেকে তারা উভয়ই একেবারে বিপরীত।
মামদানি নিজেই দাবি করেছেন, তিনি ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন, একজন প্রগতিশীল মুসলিম অভিবাসী, যিনি সত্যিকার বিশ্বাস থেকে লড়াই করছেন।
মামদানির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়া তৃণমূলভিত্তিক প্রচারাভিযান ট্রাম্পের মতো প্রচলিত রাজনৈতিক ধারা ভাঙার প্রমাণ। নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র হওয়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা মামদানির রাজনৈতিক যাত্রা স্বল্প আর্থিক অবস্থা, অভিবাসী পটভূমি ও পারিবারিক পরিচিতির কারণে জাতীয় পর্যায়েও দৃষ্টি কেড়েছে।
৩৩ বছর বয়সী মামদানির মোট সম্পদ আনুমানিক ২ থেকে ৩ লাখ ডলারের মধ্যে, যা ট্রাম্পের বিপুল বিলিয়ন ডলারের সম্পদের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য। তিনি নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে বছরে ১ লাখ ৪২ হাজার ডলার বেতন পান।
অতীতে র্যাপার ‘ইয়াং কার্ডামন’ নামে কাজ করার পাশাপাশি রয়্যালটি আয়ও করেন। মামদানির বাবা প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ মাহমুদ মামদানি এবং মা হলেন ভারতীয়-মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার। তিনি উগান্ডায় জন্মগ্রহণ করেন ও ২০১৮ সালে মার্কিন নাগরিক হন।
ট্রাম্পের বিপরীতে মামদানির রাজনীতি প্রগতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সামাজিক ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ, বিনামূল্যে গণপরিবহন, সম্প্রসারিত সামাজিক আবাসন এবং ধনী কর বৃদ্ধির পক্ষে। যেখানে ট্রাম্পের নীতি ছিল করছাড়, সীমান্ত নিরাপত্তা ও কঠোর অভিবাসী নিয়ন্ত্রণ, সেখানে মামদানি এসব নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
ট্রাম্পপন্থি কয়েকজন রাজনীতিবিদ মামদানিকে দেশচ্যুতির দাবি করেছেন। মামদানি এই আক্রমণকে ‘মৃত্যু হুমকি’ এবং ‘ইসলামফোবিয়া’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প এবং তার অনুসারীরা এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন যা আমাদের শহর ও সংবিধানের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে।
মামদানির মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের তুলনায় ভিন্নমুখী, বিশেষত ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে। ট্রাম্প ছিলেন কট্টরপন্থি ইসরায়েল সমর্থক, যেখানে মামদানি মানবাধিকার ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
তথ্যসূত্র : ইকোনমিক টাইমস
মন্তব্য করুন