ইরানের তেলবাণিজ্যকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। পারমাণবিক কর্মসূচি এবং মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়নের অভিযোগে ইরানের তেল রপ্তানির ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন নিষেধাজ্ঞাটি জারি হয়েছে বিশ্ববাজারে ইরানের তেল বিক্রির সঙ্গে জড়িত ও হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত একটি গোষ্ঠীর ওপর। এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
নিষেধাজ্ঞা জারির পর মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, তেহরানের রাজস্বের উৎসের ওপর আমাদের চাপ প্রয়োগ অব্যাহত থাকবে। এর মাধ্যমে ইরানি শাসকগোষ্ঠীর অস্থিতিশীল কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত আর্থিক সম্পদগুলোতে প্রবেশাধিকার ব্যাহত করার জন্য অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরান থেকে কোটি কোটি ডলারের জ্বালানি তেল ক্রয় ও পরিবহন করা হচ্ছে, এমনটা বলেছে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়।
মার্কিন সরকার আরও বলছে, এর সঙ্গে জড়িত আছে ইরাকি-ব্রিটিশ ব্যবসায়ী সালিম আহমেদ সাইদ পরিচালিত একাধিক প্রতিষ্ঠানের একটি চক্র। ওই ব্যক্তি অন্তত ২০২০ সাল থেকে এই কাজ করে আসছেন বলে মার্কিন প্রশাসন জানতে পেরেছে।
অর্থমন্ত্রী কার্যালয় থেকে আরও বলা হয়, সাইদের প্রতিষ্ঠান ও পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে ইরানের তেল ইরাকের তেলের সঙ্গে মেশানো হয়। ভুয়া নথি ব্যবহার করে এগুলোকে ইরাকের তেল হিসেবে ইরাক বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের কাছে বিক্রি হচ্ছে।
২০১৪ সালে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, জ্বালানি তেল বিক্রির গোপন চক্রের মাধ্যমে বছরে অন্তত ১০০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করছে ইরান। এমনকি ২০২২ সাল থেকে ইরাকে তেহরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও ফুলেফেঁপে উঠেছে।
নতুন আদেশে যুক্তরাষ্ট্র কয়েকটি তেলবাহী জাহাজের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এগুলো গোপনে ইরানি তেল পরিবহনে যুক্ত ছিল বলে দাবি করছে দেশটি। এতে ইরানের তথাকথিত শ্যাডো ফ্লিটের (গোপনে তেল বহনে নিযুক্ত নৌবহর) ওপর চাপ আরও বাড়ল।
এ ছাড়া তেহরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর নিয়ন্ত্রাণাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আল-কারদ আল-হাসান ও এর কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন প্রশাসনের মতে, ওই ব্যক্তিরা কোটি কোটি ডলার মূল্যের লেনদেন করে গোপনে সহায়তা করেছে লেবাননের হিজবুল্লাহকে।
এসব নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মার্কিন ভূখণ্ডে থাকা সম্পদ জব্দ করতে পারবে দেশটির প্রশাসন এবং তাদের সঙ্গে মার্কিনিরা কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে না।
মন্তব্য করুন