বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২
নূর হোসেন মামুন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৩ এএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৭ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জমে উঠেছে ঈদবাজার

টেরিবাজারে এবার দাপট পাকিস্তানি পণ্যের

রমজানের আগেই চলছে ঈদের কেনাকাটা। সম্প্রতি টেরিবাজার থেকে তোলা। ছবি : কালবেলা
রমজানের আগেই চলছে ঈদের কেনাকাটা। সম্প্রতি টেরিবাজার থেকে তোলা। ছবি : কালবেলা

রমজানের আগেই শুরু হয় ঈদ বাজারের প্রস্তুতি। ঝক্কি-ঝামেলা কমাতে অনেকে আগেই সেরে রাখেন কেনাকাটা। দর্জি পাড়ায়ও বাড়ে ব্যস্ততা। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদকে কেন্দ্র করে প্রস্তুত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাকের বাজার চট্টগ্রামের ‘টেরিবাজার’। ভারতীয় পোশাকের আধিক্য এখন এ বাজারে আর নেই। সেই জায়গা দখল করেছে দেশীয় ও পাকিস্তানি পণ্য। আড়তগুলোয় মজুত রয়েছে বাহারি সব পণ্য। জমে উঠেছে বেচাকেনাও। নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, সেসঙ্গে বাড়ছে অর্থনৈতিক চাপ—তা সত্ত্বেও ঈদ ঘিরে বিক্রি বাড়বে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর কালবেলাকে বলেন, ব্যবসায়ীরা এবারও ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত বেচাকেনা আশানুরূপই হচ্ছে। আমাদের বাজারটা মূলত শুরু হয় শবেবরাতের পর থেকেই। ১০-১৫ রমজান পর্যন্ত এই পাইকারি বেচাকেনা চলবে। এবার শতকোটি টাকার বেচাকেনা হবে বলে আমরা আশাবাদী।

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় পণ্য বা ডিজাইনের যে আধিপত্য ছিল—তা এখন আর নেই। পাকিস্তান থেকে কিছু পণ্য এসেছে, তবে তা বড় আকারের নয়; কিন্তু পাকিস্তানি পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ রয়েছে। ভারতবিদ্বেষের কারণে সেখান থেকে তেমন পণ্য আসেনি। এ ছাড়া বর্তমানে দেশের টেক্সটাইল খাত অনেক উন্নত। তাই ভারতীয় ডিজাইন ও কোয়ালিটির সঙ্গে টেক্কা দিয়ে দেশি কোম্পানিগুলো ভালো ভালো কাপড় তৈরি করছে। দেশি কাপড়েরও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

এদিকে বেচাকেনা ঘিরে ছিনতাইকারীদের দমনসহ সব অপরাধ রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে ২০ জনের বেশি নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের বকশিরহাটের পুরোনো ভবনের নিকট দূরত্বে গড়ে উঠেছে শ-খানেক অত্যাধুনিক মার্কেট। সেখানকার প্রায় ৩ হাজার ছোট-বড় দোকানে পাওয়া যায় দেশীয় ও আমদানি করা হাল ফ্যাশনের পোশাক। কুমিল্লা, নোয়াখালী, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা এই বাজার থেকে পাইকারিতে পোশাক কেনেন। দাম কম হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারাও ভিড় করেন এই বাজারে।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েক মাস নানা সংকটের কারণে রপ্তানি করতে পারেনি গার্মেন্টস কোম্পানিগুলো। দেওয়া যায়নি শিপমেন্টও। তাই গুণমান সম্পন্ন পণ্যই আসছে এসব বাজারে। অন্যদিকে ভারতীয় পণ্যের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ফলে বাজার কিছুটা দখলে নিয়েছে পাকিস্তানি পণ্য।

শনিবার টেরিবাজারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন গৃহিণী রুমানা ফেরদাউস। তিনি জানান, এখানে দরদাম করে কেনা যায়। তাছাড়া কালেকশনও বেশ ভালো। তাই ঈদের বাজার বলতে টেরিবাজারকেই বুঝি। তবে এবার দাম কিছুটা বেশি।

টেরিবাজারের ঐতিহ্যপূর্ণ মেগা শপ মনেরেখ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক আবু হুরায়রা বলেন, ঈদ উপলক্ষে কাতান, লিনেন, জামদানি, সুতি, নেট, জর্জেট, শিফন ও ডিজিটাল প্রিন্টের রকমারি কাপড় আমদানি করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশি কাপড়ের চাহিদাও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে।

নিউ রাজপরীর স্বত্বাধিকারী মহিউদ্দিন মানিক বলেন, ‘বাছাই করে পোশাক কেনার সুযোগ টেরিবাজারে বেশি। দামও তেমন বেশি নয়। তাই ক্রেতারা এখানে বেশি আসেন।’

টেরিবাজারের অঙ্গশ্রী বস্ত্রালয়ের বিক্রয়কর্মী অভি বলেন, আমরা কাপড় আমদানি করি। আবার নিজেদেরও আছে। এখানে সারা বছর জমজমাট কেনা-বেচা হলেও ঈদের সময়টা ভিন্ন। এই সময়ে সারা বছরের বিক্রির দ্বিগুণ বেশি বিক্রি হয়।

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান বলেন, এখানকার ৯০ শতাংশ দোকানই কাপড়ের। রোজা শুরুর পর একটু ভিড় কম থাকবে, ওই সময়ে মানুষ তারাবির নামাজে ব্যস্ত থাকে। আবার জমতে শুরু করবে ১৫ রোজার পর। টেরিবাজারের রাস্তাটা খুব সরু। তাই যানজট নিরসনসহ নারী ও শিশুদের সুবিধার্থে সিএমপি কমিশনার বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আ.লীগের কর্মী-সমর্থকদের জন্য কেঁদে কেঁদে দোয়া করলেন হাদি

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারে ভুল উদ্ধৃতি সংশোধনের আহ্বান টিআইবির

‘আবরারের স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে অনেকের গাত্রদাহ দেখেছি’

সৌন্দর্যবর্ধনে সাভার উপজেলা প্রশাসনের নানা উদ্যোগ

ছেলের দায়ের করা মামলায় বাবাসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে কোরআন অবমাননা, সিএমপির জরুরি সতর্কবার্তা

জাতীয়করণ নিয়ে বেসরকারি শিক্ষকদের প্রতি তারেক রহমানের বার্তা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

খেলা শেষ হতেই রেফারির ওপর হামলা

জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের জন্য সুখবর

১০

আদালতের ‘ন্যায়কুঞ্জে’ খাবার হোটেল, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে উচ্ছেদ

১১

অ্যানথ্রাক্স ছড়াচ্ছে উত্তরাঞ্চলে, রংপুর-গাইবান্ধায় সরেজমিনে তদন্ত শুরু

১২

চীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা / জানলে যে সব বলে দিতে হবে সেটা তো না

১৩

শেখ হাসিনা ও কামালের নির্বাচনী যোগ্যতা নিয়ে যা জানা গেল

১৪

ছাত্রদলকে সমর্থন জানিয়ে চাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন দুই প্রার্থী

১৫

খুন করে আল্লাহর ভয়ে নামাজ পড়ে ক্ষমা চান হত্যাকারীরা

১৬

ইংলিশদের বিপক্ষে মারুফাদের লড়াই করে হার

১৭

পিআর নিয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব : চরমোনাই পীর

১৮

ফুটবলকে বিদায় বললেন মেসির আরও এক সতীর্থ

১৯

প্রথমবারের মতো ইউনেস্কোর সভাপতি বাংলাদেশ

২০
X