৩০ বছর ধরে চলছে ‘পূর্বাচল নতুন শহর (ইউসুফগঞ্জ)’ শীর্ষক প্রকল্পটি। বারবার মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ করা যাচ্ছিল না। অবশেষ প্রকল্পটি শেষ হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে প্রকল্প শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবছর আরও ১০টি বড় প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপিতে প্রকল্পগুলো সমাপ্তির তালিকায় রাখা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) মোট ২৮৯টি প্রকল্প শেষ করতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে বড় প্রকল্প সংখ্যা ১০। এদিকে চলতি অর্থবছরে ৩৩৯ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হচ্ছে ৩৩৪টি। বিশেষ কারণে পাঁচটি প্রকল্প শেষ হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় উন্নয়ন বাজেট বা এডিপি ২০২৪-২৫ চূড়ান্ত হয়েছে, যা আগামীকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় অনুমোদন পাবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন এনইসি চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, ‘পূর্বাচল নতুন শহর (ইউসুফগঞ্জ)’ প্রকল্পটি ১৯৯৫ সালের জুলাই থেকে ২০১০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। পরবর্তী সময়ে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪৪৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। কয়েকবার সংশোধন এবং মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ না হওয়ায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে ১০ বছর ধরে চলতে থাকা গভীর সমুদ্রে ডাবল পাইপলাইনের সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্পটিও আগামী অর্থবছরে শেষ হচ্ছে। ২০১৫ সালে অনুমোদন পাওয়া দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ও চীন সরকারের জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে ৮ হাজার ২৯৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে শেষ হচ্ছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্প। ১০ হাজার ৩২৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ের কুড়িল পূর্বাচল লিঙ্ক রোডের উভয় পার্শ্বে (কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত) ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন ও উন্নয়ন প্রকল্পটিও শেষ করা হবে।
পঞ্চমবার সংশোধনের পর অবশেষে শেষ হচ্ছে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প। এতে খরচ ৮ হাজার ৭৯৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ৬ হাজার ৪৪৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন পূর্বাচল নতুন শহর (ইউসুফগঞ্জ) প্রকল্পটিও সমাপ্তের তালিকায় রয়েছে। কভিড-১৯ ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রকল্পটিও শেষ হবে আগামী অর্থবছরে। এই প্রকল্পে খরচ হচ্ছে ৬ হাজার ৩৮৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
এ ছাড়া আগামী অর্থবছরের জন্য সমাপ্তির তালিকায় রাখা হয়েছে ৬ হাজার ১৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ের আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্প। ৪ হাজার ৭২২ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম মেইন পাওয়ার গ্রিড স্ট্রেনদেনিং প্রকল্প। ৪ হাজার ৫৬৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ের ঢাকার উত্তরায় ১৮ নম্বর সেক্টরে নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য অ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প এবং ৪ হাজার ২২৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ের খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প।