উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো জোট ব্রিকসের উত্থান যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির কংগ্রেসম্যান মার্জোরি টেইলর গ্রিন। জর্জিয়া থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান আরও বলেন, দিন দিন ব্রিকস জোট শক্তিশালী হচ্ছে এবং এর সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। সে কারণে জোটের সদস্যরা নিজস্ব মুদ্রায় নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দুর্বল হবে। খবর পার্সটুডের।
নিজের নির্বাচনী এলাকায় এক অনুষ্ঠানে গ্রিন বলেন, ব্রিকস জোট দিন দিন সম্প্রসারিত হলেও বাইডেন প্রশাসন এ ক্ষেত্রে একেবারে চোখ বন্ধ করে রেখেছে। বাইডেন অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সবার পেছনে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা যখন এই ভুল করছি, তখন বিশ্বের অন্য দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী হচ্ছে। ব্রিকসের সদস্য দেশগুলো একে অন্যের সঙ্গে বড় বড় গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি করছে, একে অন্যের পণ্য কিনছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা করছে না।
ওয়াশিংটন যখন রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহায়তা করায় ব্যস্ত, তখন বিশ্বের অন্যান্য দেশ একত্রিত হয়ে নিজেদের আরও শক্তিশালী করছে। কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের আচরণে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, একদিকে ব্রিকস শক্তিশালী হচ্ছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার দুর্বল হচ্ছে। এর ফলে আমাদের ওপর কী প্রভাব পড়তে পারে, সে সম্পর্কে কারও কি কোনো ধারণা আছে? আমাদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের অবসরের পরিকল্পনা ও ব্যক্তিগত সঞ্চয়কে খুবই বাজেভাবে প্রভাবিত করবে।
গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এবারের সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল জোটের সম্প্রসারণ। অর্থাৎ নতুন সদস্য পদ দেওয়া। সম্মেলনের শেষ দিন আয়োজক দেশের প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলেন, আমরা আর্জেন্টিনা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ব্রিকস জোটের পূর্ণ সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। এই দেশগুলোর সদস্য পদ ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। এর মধ্যদিয়ে ব্রিকসের সদস্য সংখ্যা হবে ১১।
ব্রিকস জোটের বর্তমান সদস্য হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। জোট সম্প্রসারণের সিদ্ধান্তে আরও বেশ কিছু আগ্রহী দেশের জন্য এতে যোগ দেওয়ার পথ সুগম হলো। ভূ-রাজনৈতিক মেরূকরণের মধ্যে বেইজিং ও মস্কো চাচ্ছে এই জোটকে পশ্চিমের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে। বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ জনসংখ্যা ব্রিকস সদস্য দেশগুলোতে থাকেন। বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনেরও এক-চতুর্থাংশ এই দেশগুলো থেকে আসে।
শুরু থেকেই শক্তিশালী উদীয়মান বাজার হিসেবে পশ্চিমাদের বিকল্প বিবেচনা করা হয় ব্রিকসকে। এই জোটের উদ্যোগে ২০১৫ সালের ২১ জুলাই যাত্রা করে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এনডিবি।
মন্তব্য করুন