

সদস্য দেশগুলো চাঁদা বকেয়া রাখায় তীব্র অর্থ সংকটে পড়েছে জাতিসংঘ। এ কারণে ২০২৬ সালে সংস্থাটির বাজেট ১৫ দশমিক ১ শতাংশ ও কর্মীসংখ্যা ১৯ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বসংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। গত সোমবারের ওই ঘোষণায় তিনি বলেন, আগামী বছরের বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২৪ কোটি ডলার, যা ২০২৫ সালের তুলনায় ৫৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার কম। বর্তমানে সদস্য দেশগুলোর বকেয়া চাঁদা দাঁড়িয়েছে ১.৫৯ ট্রিলিয়ন ডলার বা ১ লাখ ৫৯ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। আলাদা এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সেপ্টেম্বরে ঘাটতির বড় অংশের জন্য দায়ী যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও মেক্সিকোর বকেয়া চাঁদা জমা না দেওয়া।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বাজেট সংকোচনের মধ্যেও ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর বাজেট অপরিবর্তিত থাকবে। কারণ, গাজায় চাহিদা বর্তমানে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তার বক্তব্য, ইউএনআরডব্লিউএতে কোনো সংকট তৈরি হলে তা গাজার মানবিক সহায়তা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে। এ ছাড়া ডেভেলপমেন্ট অ্যাকাউন্ট ও আফ্রিকার উন্নয়ন-সংক্রান্ত অ্যাডভোকেসির বাজেটও ২০২৫ সালের সমপরিমাণই থাকবে।
ঘাটতি পোষাতে জাতিসংঘ ২ হাজার ৬৮১টি পদ বাতিল করতে যাচ্ছে। গুতেরেস জানান, এসব কাজের বড় অংশ অন্যান্য সংস্থা বেশি দক্ষতার সঙ্গে করতে পারবে, অথবা অভ্যন্তরীণ দক্ষতা বাড়ানো গেলে এত কর্মী প্রয়োজন হবে না। তিনি আরও বলেন, চলমান তহবিল সংকটের কারণে জাতিসংঘের মোট ১৮ শতাংশ পদ আগেই শূন্য রয়েছে।
এদিকে, জাতিসংঘের বিশেষ রাজনৈতিক মিশনগুলোতেও বড় কাটছাঁট আসছে। ২০২৬ সালে এ খাতের বাজেট থাকবে ৫৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২২ শতাংশ কম। কিছু মিশন বন্ধ হবে, আর কিছু মিশনের কার্যক্রম ছোট করা হবে।
আবার ব্যয় কমাতে জাতিসংঘ নিউইয়র্কে তাদের উপস্থিতিও সংক্ষিপ্ত করছে। গুতেরেস জানান, ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ নিউইয়র্কের দুটি অফিস লিজ বাতিল করা হবে, যা ২০২৯ সাল থেকে বছরে ২ কোটি ৪৫ লাখ ডলার সাশ্রয় দেবে। এরই মধ্যে ২০১৭ সাল থেকে শহরটির কয়েকটি দপ্তর বন্ধ করে ১২ কোটি ৬০ লাখ ডলার সাশ্রয় হয়েছে।
মন্তব্য করুন