চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার শতাধিক পরিবার আর্সেনিকমুক্ত পানি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রতি ১০টি পরিবারের জন্য একটি টিউবওয়েল স্থাপনের কথা রয়েছে; কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একই বাড়িতে একাধিক আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল স্থাপন করায় আশপাশের বাড়ির লোকজন বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় সুবিধাবঞ্চিতরা অভিযোগ করেন, উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নে উল্লাশ্বর গ্রামের পশ্চিম পাড়া আব্দুল হাই মেম্বারের বাড়িতে আগে তিনটি আর্সেনিকমুক্ত পাম্প টিউবওয়েল বরাদ্দ দেওয়ার পর তা স্থাপন করা হয়েছে। এরপর আরেকটি মোটরচালিত টিউবওয়েল একই বাড়িতে স্থাপনের বরাদ্দ দিয়ে তার কাজ চলছে।
তারা জানান, একই বাড়ির ১০ মিটারের মধ্যে হাবীব উল্যাহ, ১২ মিটার দূরত্বে আবুল বাসেদ, ২৫ মিটার দূরত্বে জাহাঙ্গীর আলমের নামে কল বরাদ্দ হয়। একই গ্রামের পাশের তিন বাড়িসহ দিঘির উত্তর পাড়ের ৩৫ পরিবার, দিঘির দক্ষিণ পাড়ের ২২ পরিবার, মসজিদের উত্তরের বাড়ির ১৭ পরিবারের জন্য ১টি টিউবওয়েল বরাদ্দ হয়নি। ওই এলাকায় আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন জানান, উপজেলা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে কলের চাহিদা বা নামের তালিকা চায়, আমরা তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠালে কর্তৃপক্ষ তা যাচাই-বাচাই করে বরাদ্দ দিয়ে থাকে। অনেকাংশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই শেষে নামের বরাদ্দকৃত টিউবওয়েল বাদ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) বিল্লাল হোসেন একই বাড়িতে ৪টি সরকারি কল স্থাপনের ব্যাপারে জানান, সরকারি নলকূপ দেওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম নলকূপ বরাদ্দের বিষয়ে বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে শাহরাস্তি উপজেলায় ২৬০টি টিউবওয়েল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রতি ইউনিয়নের জন্য ২৬টি করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমরা কোনো বরাদ্দ দিতে পারি না, বরং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা নলকূপ বরাদ্দ দিই।
নীতিমালা অনুযায়ী, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রতি ১০টি পরিবারের জন্য একটি টিউবওয়েল স্থাপনের কথা রয়েছে। আমাদের মাঠকর্মী যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট দিলে আমরা তা প্রদান করি। দায়িত্বে অবহেলার কারণে এক থেকে দুটি স্থানে এমন ঘটনা ঘটার কথা অকপটে স্বীকার করেন উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুব আলম। তবে এ ব্যাপারে তদন্তক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন