চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার পুটিবিলা ইউনিয়নের পহরচান্দা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৫টি ঘরের সবকটিতে ঝুলছে তালা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সারা দেশের মতো পুটিবিলা পহরচান্দা আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু ঘরের চাবি ও কাগজপত্র নেওয়ার পর বেশিরভাগ পরিবারই তাদের ঘরে ওঠেননি। যারা উঠেছিলেন কিছুদিন থাকার পর তারা চলে গেছেন। মূলত উপজেলার চুনতি, কলাউজান ও পুটিবিলা—এ তিন ইউনিয়ন থেকে উপকারভোগী নির্বাচন করলেও চুনতি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার ও কলাউজান থেকে প্রকল্পের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। স্থানীয়রা জানান, এখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকাসহ নানা সমস্যায় ঘরে থাকছেন না ভূমিহীনরা। প্রকল্পে মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকলেও রয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগ, যে কারণে ঝুলছে তালা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘর বরাদ্দ দেওয়ার সময় সঠিক লোকদের দেওয়া হয়নি। এ এলাকার অনেক ভূমিহীন পরিবার ঘর পাননি। অথচ চুনতি, কলাউজান ইউনিয়ন থেকে লোকজনকে এনে ঘর দেওয়া হয়েছে। তারা ঘরেও ওঠেননি। স্থানীয়দের ঘর না দিয়ে দেওয়া হয়েছে দূরবর্তী অন্য ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। স্থানীয় যে কজনকে দেওয়া হয়েছে তারাও আর্থিকভাবে সচ্ছল, তাই তারা এসব ঘরে থাকছেন না। শুধু ঘরের মালিকানা পেতে বরাদ্দ নিয়েছিলেন। সরেজমিন দেখা যায়, আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ঘরগুলোর চারপাশ লতাপাতা, ঝোপ-জঙ্গলে ঘিরে রেখেছে। কিছু দেয়ালে ফাটল ধরতে শুরু করেছে, বারান্দায় গরু, ছাগল বেঁধে রাখা হয়েছে, রয়েছে খড়কুটোর বিশাল স্তূপ। অনেক দরজা-জানালায় মরিচা ধরেছে। পুটিবিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক বলেন, ঘরগুলোর বরাদ্দ আমার আগের চেয়ারম্যানের সময়ে করা। পুটিবিলা ইউনিয়নে বহু গৃহহীন পরিবার রয়েছে। যারা বরাদ্দ পাওয়ার পরও এসব ঘরে উঠছে না। তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুন তালিকা প্রণয়নের বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। তিনি শিগগির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন জনু বলেন, আশ্রয়ণ কেন্দ্রটির দূরত্ব চুনতি থেকে অনেক দূরে হওয়ায় কেউ যেতে চাচ্ছেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে আমি বরাদ্দপ্রাপ্তদের ডেকেছি। তারা যদি থাকতে না চান তবে বরাদ্দ বাতিলসহ মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফ উল্যাহ বলেন, বরাদ্দ পাওয়ার পরও যারা এসব ঘরে থাকছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
মন্তব্য করুন