বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার বিষয় প্রকাশ করলেও নীতিগতভাবে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রকাশ করে না যুক্তরাষ্ট্র। যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, সেখানেই উদ্বেগ জানায় ওয়াশিংটন। তারা কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থক নয়। স্থানীয় সময় গত সোমবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক ও নির্বাচনী পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে দাবি করে এক সাংবাদিক জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্র কি তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবে? জবাবে ম্যাথিউ বলেন, ‘অন্য নিষেধাজ্ঞার বিষয় প্রকাশ করলেও কারও বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে নীতিগতভাবে আমরা সেটা প্রকাশ করি না।’
মিলার আরও বলেন, গত ২৪ মে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন। তখন তিনি জানিয়েছেন, যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধা দেবে বা ক্ষতিগ্রস্ত করবে, তাদের ক্ষেত্রে এ ভিসা নীতি ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে কারচুপি, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো, সহিংসতা, সংগঠনের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার ক্ষুণ্ন করা, এর বাইরে রাজনৈতিক দল, ভোটার, নাগরিক সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচারে বাধা দেওয়ার পদক্ষেপও এ ভিসা নীতির আওতায় পড়বে।
মানবাধিকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ‘সাধারণ নীতি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র একটি গণতান্ত্রিক সমাজে প্রত্যেক ব্যক্তিকে অবাধে ভূমিকা পালন করতে দেওয়াকে সমর্থন করে। মার্কিন প্রশাসন মানবাধিকারের ওপর যে কোনো বিধিনিষেধের বিরোধিতা করে। আমার পক্ষে এর চেয়ে নির্দিষ্ট করে বলার আর কিছু নেই।’
মানবাধিকার ইস্যুতে দেশভেদে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষপাতমূলক আচরণের সমালোচনার জবাবে মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, সেখানেই উদ্বেগ জানায় ওয়াশিংটন।
২০১৪ সালে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে ব্যাপক সহিংসতা চালায় বিএনপি-জামায়াত জোট। গণপরিবহনে আগুন, রেলস্টেশনে ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলার মতো বেশকিছু ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে কানাডার একটি আদালত এক বিএনপি নেতার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। একই সঙ্গে বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেন কানাডার ফেডারেল আদালত। আসন্ন নির্বাচন ঘিরেও বিএনপি ও তাদের সমমনা জোট আন্দোলনের নামে সহিংসতা শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে মার্কিন মুখপাত্র বলেন, আমার পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আমরা বাংলাদেশে বা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে অবস্থান নিই না। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত।
মন্তব্য করুন