সাইয়েদ বাবু, কুড়িগ্রাম
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩২ এএম
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
স্বজনের কান্না

আমার গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে

নুর আলমের স্ত্রীর আহাজারি
আমার গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে

কোটা সংস্কার আন্দোলনে পড়ে ঢাকার গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত নির্মাণ শ্রমিক নুর আলমের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে চলছে স্বজনদের আহাজারি। নিকটজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠছে আকাশ-বাতাস। নিরপরাধ নুর আলমের হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।

গত মঙ্গলবার দুপুরে নিহত নুর আলমের বাড়ি মোল্লাপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তার বাবা আমির আলী ছেলের কবরের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। বাড়ির ভেতরে গিয়ে চোখ পড়ে মা নুরবানু ও দাদি আমেনা খাতুনের দিকে। তাদের আহাজারি যেন থামছেই না।

নুর আলমের বাবা আমির আলী বলেন, ‘আমার ছেলে রাজনীতি করে নাই। অথচ পুলিশ আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করল। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অপরাধীদের বিচার হলেই কেবল আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে।’

ক্যামেরা দেখেই ছুটে আসেন ষাটোর্ধ্ব দাদি আমেনা খাতুন। তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘নুর আলম বলেছিল দাদি, তুমি চিন্তা করো না, আমি তোমার ভবিষ্যৎ। আমার সুখে-দুঃখে পাশে ছিল নুর আলম। এখন কী হবে? কে আমার খোঁজ নেবে।’

ঘরের এক কোণে নির্বাক তাকিয়ে আছেন নুর আলমের স্ত্রী খাদিজা বেগম (১৯)। তিনি ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কালবেলার এই প্রতিনিধি সামনে যেতেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি। খাদিজা বলেন, ‘এখন আমার গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’

নিহত নুর আলমের মা নুরবানু বলেন, ‘শনিবার সকাল ৮টায় বাসা থেকে বের হয় নুর আলম। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি কই যাস। সে বলেছিল- মা, একটু কাজ আছে, ঠিকাদার (যার বাসায় কাজ করে) ফোন দিছে। একথা বলে চলে যায়। এক ঘণ্টা পর খবর পাই নুর আলমকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। কারণ জানতে চাইলে ওরা বলে পুলিশের গুলি লেগেছে।’

গত ২০ জুলাই সকাল ৮টায় গাজীপুর চৌরাস্তায় কাজের উদ্দেশ্যে বের হন নির্মাণ শ্রমিক নুর আলম (২২)। এ সময় চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন তিনি। শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এতে গুলিবিদ্ধ হন নুর আলম। তার চোখে গুলি ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সহকর্মী আসিক ও আব্দুল্লাহ তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল রোডের সেবা হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নুর আলমের উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সযোগে জয়দেবপুর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ভগিরভিটা মোল্লাপাড়া গ্রামের আমির আলী ৭ বছর আগে সপরিবারে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকার তেলিপাড়া গ্রামে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এক বছর আগে বড় ছেলে নুর আলমকে নিয়ে যান সেখানে, নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, নুর আলম সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। যেহেতু ঘটনা ঢাকার, সেখানকার কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভালো বলতে পারবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হোয়াইটওয়াশ লজ্জায় বাংলাদেশ, একশও ছুঁতে পারল না মিরাজরা

হাটহাজারীতে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা নিহত

জাল সনদে ১৮ বছর শিক্ষকতা, জেনেও ব্যবস্থা নেননি অধ্যক্ষ

ইলিয়াস কাঞ্চনের অসুস্থতায় শাবনূরের আবেগঘন বার্তা

যুদ্ধের উসকানি দিয়ে শান্তির প্রতীক হওয়া যায় না, ট্রাম্পকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাবার সঙ্গে আলোর শেষ কথা—আমরা আটকে গেছি

লাইভে এসে সংসদ ভেঙে দিলেন পালিয়ে যাওয়া মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট

মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড : দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান তারেক রহমানের

ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থীকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

মেসি নন, নতুনদের নিয়েই পুয়ের্তো রিকোর মুখোমুখি আর্জেন্টিনা

১০

বিএনপি কোনো দলের বিরুদ্ধে কুৎসা রটায় না : কফিল উদ্দিন 

১১

বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান হাসপাতালে ভর্তি

১২

পিআর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে : পরওয়ার

১৩

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে : লায়ন ফারুক

১৪

ভারতের হারে এশিয়ান কাপ খেলার স্বপ্ন শেষ বাংলাদেশের

১৫

সাবেক স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার

১৬

পর্তুগালসহ যেসব দল আজ নিশ্চিত করতে পারে বিশ্বকাপের টিকিট!

১৭

এক দিনের ব্যবধানে দেশে স্বর্ণের দাম আরও বাড়ল

১৮

সুস্থ থাকতে খেলাধুলার বিকল্প নেই : মেয়র ডা. শাহাদাত

১৯

ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর নেওয়ায় প্রতিবন্ধীর প্রতিবাদ

২০
X