জাফর ইকবাল
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বেপরোয়া ৫৩ এজেন্সি

বিএমইটি
বেপরোয়া ৫৩ এজেন্সি

বিদেশে উচ্চ বেতন আর উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে হাজার হাজার নারী কর্মীকে প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে অর্থনৈতিক শোষণের পাশাপাশি মানসিক ও যৌন নির্যাতন করছে একটি অসাধু সিন্ডিকেট। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে দিনে দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে এই সিন্ডিকেট সদস্যরা। শ্রমিকদের প্রতারিত করে নিজেদের পকেটে ভরছে শত শত কোটি টাকা। অন্যদিকে, বিদেশে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন হাজারো বাংলাদেশি নারী। যাদের কেউ বা ফিরে আসছেন নিঃস্ব হয়ে, কেউ হারাচ্ছেন সম্ভ্রম, আবার কেউ কেউ পাচ্ছেন না ন্যায্য মজুরি বা মানবিক আচরণ। বিদেশে কর্মী পাঠানোর আগে সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কথা বিএমইটির। তবে খোদ বিএমইটিরই কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ওই অসাধু সিন্ডিকেটে সম্পৃক্ত থাকায় কঠোর নজরদারি কিংবা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে না জড়িতদের। শুধু তাই নয়, এই সিন্ডিকেটভুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জমা দেওয়া অনিয়মে ভরা ফাইল অনুমোদন হয়ে যায় দিনে দিনে, অথচ সব মানদণ্ড পূরণের পরও অন্যদেরটা পড়ে থাকে দিনের পর দিন। কালবেলার দীর্ঘ অনুসন্ধানে এই চক্রে অন্তত ৫৩টি রিক্রুটিং এজেন্সি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদেশি নিয়োগদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করা, সরকারের নির্ধারিত নীতিমালার ভিত্তিতে দক্ষ, আধাদক্ষ বা অদক্ষ কর্মী নির্বাচন, বিদেশে যাওয়ার আগে প্রাসঙ্গিক ভাষা ও সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের চুক্তিপত্র তৈরি ও ব্যাখ্যাসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিশ্চিতের দায়িত্বে রয়েছে বিএমইটি নিবন্ধিত বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি। এ রকম ১৬টি শর্তে বিএমইটির অনুমোদন পায় জনশক্তি রপ্তানির এসব প্রতিষ্ঠান। তবে অনুমোদন পাওয়ার পরে কিছু অসাধু এজেন্সি তোয়াক্কা করে না কোনো ধরনের নিয়ম-নীতির। নিয়মকানুনের বেশিরভাগই মানেন না তারা। ভুয়া রেফারেন্স পাসপোর্ট নম্বরে প্রত্যাগত দেখিয়ে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই নারীদের বিএমইটির ছাড়পত্র দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে ন্যূনতম বয়সের মানদণ্ড পূরণ হয়নি এমন নারীদেরও। ভাষা, কর্ম ও গন্তব্য দেশের কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক জ্ঞান না থাকায় বিপাকে পড়ছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে গত ২৬-২৮ মে দৈনিক কালবেলায় তিন পর্বের ‘গৃহকর্মীর আড়ালে কিশোরী পাচার’ শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্বে ‘রক্ষক বিএমইটিই ভক্ষক’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নতুন করে দৈনিক কালবেলার হাতে এ-সংক্রান্ত আরও কিছু নথিপত্র আসে। সব মিলিয়ে বিএমইটিতে এই ভয়ংকর জালিয়াতির কারবারে একাধিক কর্মকর্তাসহ অন্তত ৫৩টি রিক্রুটিং এজেন্সির জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে কালবেলা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রিক্রুটিং এজেন্সির এই চক্রের অন্যতম হোতা মোসা. নূরজাহান আক্তার নামে এক নারী। তার এজেন্সির নাম টি-টোয়েন্টি ওভারসিজ লিমিটেড। যার আর এল (রিক্রুটিং লাইসেন্স) নম্বর-১৪১৫। বিএমইটিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী এই নারীর বিরুদ্ধে নিজের এজেন্সির বাইরেও বিভিন্ন এজেন্সির মালিকদের অনিয়মে তদবিরের অভিযোগ রয়েছে। টি-টোয়েন্টি ওভারসিজের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট ছাড়া নিয়মবহির্ভূতভাবে ছাড়পত্র পেয়েছেন রিয়া মনী নামে এক নারী। গত ১৫ মে ছাড়পত্র পাওয়া তার পাসপোর্ট নম্বর: এ০৮৪৩৮১৫০ ও ভিসা নম্বর: ৬১৪১৩৯৬৭৭৯। একই দিন হাফসা আক্তার কাকলী নামে আরও এক নারী এ১৩৪৮৯১৭৫ নম্বর পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন। যার ভিসা নম্বর: ৬১৪১৬১৪৮৩৮। একই দিন রাজমিনা বেগম নামে আরও এক নারী এ১৭৯৫১৮০৮ নম্বরের পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন। যার ভিসা নম্বর: ৬১৪২১০৮১১১৫। গত ২০ মে মাহমুদা বেগম নামে এক নারী এ১৭৮১০৬৯০ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন। একই দিন শারমিন আক্তার নামে আরও এক নারী এ১৭৯১৩৪৯৭ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পান। শিমুল এয়ার ওভারসিজ লিমিটেডের আরএল নম্বর ১৮০৩। এই এজেন্সির মাধ্যমে নিয়মবহির্ভূত গত ২১ মে মোসা. সালমা আক্তার নামে এক নারী এ১৭৮৫৯২৮২ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পান। একইভাবে ২৪ মে সাজিয়া সুলতানা অনিকা নামে এক নারী এ১৭৫৮৭৭৩৭ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন। ১১ মে পেয়েছেন রোজিনা আক্তার, যার পাসপোর্ট নম্বর: এ০৯২২০৪২৭। মোসা. হাফসা আক্তার, যার পাসপোর্ট নম্বর: এ১৪৭৬১০৪৫ ও তাহমিনা আক্তার, যার পাসপোর্ট নম্বর এ১৭৪৭৪৩১৭—নিয়মবহির্ভূতভাবে ছাড়পত্র পেয়েছেন। মাহি বিজনেস লিমিটেডের আরএল নম্বর ৮০২। এই এজেন্সি থেকে ২০ মে মোসা. সালমা আক্তার এ১৬৬২১৩১৮ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন। মোসা. হাফসা বেগম এ১৭৫৩৪৪৭০ পাসপোর্টের বিপরীতে পান ছাড়পত্র। এমএস দ্য বাংলাদেশ ট্রেড করপোরেশনের আরএল নম্বর ১২০৭। এই এজেন্সি থেকে ১৫ মে মোসা. রুবিনা খাতুন নামে এক নারী এ১৭৫২৯৬৯৩ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এমএস জিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং নামের এজেন্সির আরএল নম্বর ০০২৩। সেখান থেকে গত ২১ মে রত্না বেগম নামে এক নারী ছাড়পত্র পান। যার পাসপোর্ট নম্বর এ০৮৭৭০৫৫৪ ও ভিসা নম্বর ৬১৪২৮৩৪৬১০। একই দিন খায়রুন বেগম নামে এক নারী এ০৯২০২২৩৪ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পান। মোসা. সামিয়া বেগম নামে এক নারী এ১৭৫৫০০৫৮ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ ছাড়া পাসপোর্ট নম্বর এ১৮১০১৯৭৫ ও এ১৮১৬৭০৯১-এর বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন দুজন। প্রসেড ওভারসিজ নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির আরএল নম্বর ১২০৪। এই এজেন্সি থেকে অনিয়মের মাধ্যমে পাসপোর্ট নম্বর এ১৭৬৯৮৭১১, এ১৩৪৭০৩৪০ ও এ১৬৬১৮৫০২-এর বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন তিনজন। গডনেস সার্ভিস লিমিটেডের আরএল নম্বর ২০৬৮। এই এজেন্সির মাধ্যমে একইভাবে পাসপোর্ট নম্বর এ১৭৫২৮৭৫২ ও এ১৬৭৫২৯৪৮- এর বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন দুজন। সেন্ট্রাল ওভারসিজের আরএল নম্বর ১১২। এই এজেন্সি থেকে পাসপোর্ট নম্বর এ১৪৭১৫৫০৪, ইজি০৩৪৫০৭৩, এ১৬৮৮৬০৭৪ ও এ১৭৪০৮৭৯৯-এর বিপরীতে ছাড়পত্র ইস্যু করা হয়েছে নিয়ম-নীতি না মেনেই। ইজি ওয়ে ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির আরএল নম্বর ১৬৪৯। একইভাবে এই এজেন্সির মাধ্যমে এ১৭৩৬০৮৩৮ এবং এ১৭২৬৮৩৮০ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন দুজন। আল-ফাতিন ইন্টারন্যাশনালের আরএল নম্বর ১২১৩। এই এজেন্সির মাধ্যমে এ১৬৭১৬২০৬, এ১৭০০৯৫০০ ও এ১৭০১৩২৭৭ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন তিনজন। দি ইফতি ওভারসিজের আরএল নম্বর ৮৯৪। এই এজেন্সি থেকে পাসপোর্ট নম্বর এ১১৫০০৬৩৭, এ১৪৭০৪৮৩২, এ১৭৪০৫৫৫১ ও ইকে০২৫১১৭২-এর বিপরীতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে অনিয়মের মাধ্যমে। আমিয়াল ইন্টারন্যাশনালের আরএল নম্বর ১৩২৬। এই এজেন্সি থেকে নিয়মকানুন না মেনে পাসপোর্ট নম্বর এ১৬২৯৭০০৭, এ১৭৭৩৯৫৫৫ ও এ১৬৯৪৩৭৯৮-এর বিপরীতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। লেবার এশিয়া লিমিটেডের আরএল নম্বর ১৭৩০। একইভাবে এই এজেন্সি থেকে পাসপোর্ট নম্বর এ০৮৯০৩৪৩৬, এ১৫২৬১০৮৬, এ১৭২৩০৪৩৯ ও এ১৭৯৭৩৮২৩-এর বিপরীতে ছাড়পত্র ইস্যু করা হয়েছে। জেনারেল ট্রেডিং কোম্পানির আরএল নম্বর ৩২০। এই এজেন্সিটির মাধ্যমে এ১৭৪২৬৫৭৯ পাসপোর্টের বিপরীতে দেওয়া হয়েছে ছাড়পত্র। আমির এভিয়েশন লিমিটেডের আরএল নম্বর ৮৪০। যে এজেন্সি থেকে পাসপোর্ট নম্বর এ১৫১৫৫৩৮৪, এ১৪৯৪৭৬৮৫, এ১৭৫২২৩০৬ ও এ১৭৫৮৭৯৮৭-এর বিপরীতে ছাড়পত্র ইস্যু হয়েছে অনিয়মের মাধ্যমে। আজান বিজনেস ইন্টারন্যাশনালের আরএল নম্বর ১৯৯৮। এই এজেন্সির মাধ্যম এ১৭৯১৩৪৭১, এ১৭৯৪০৪৯১, এ১৬৪১৫৩১৫ ও এ১৭৮৮০১০০ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন। সেইফওয়ে ইম্পলয়মেন্টের আরএল নম্বর ১৪৮৩। এই এজেন্সির মাধ্যমে এ১৭০০৯৪৯৪, এ০৮৯৩৯৪৫০, এ১৫৮১৩৪৯৪ ও এ১৭৮৮৪৫৯৬ নম্বরের পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে নিয়মকানুন না মেনেই। আল-জাবেন এস্টাবলিশমেন্ট লিমিটেডের আরএল নম্বর ৮৮৪। এই এজেন্সি থেকে এ০৩৭৩২৩৭৬, এ১৭৭৮২৯২১, এ১৭৮১৬৬৩৪ ও এ১৮০৩৮২৮৭ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র ইস্যু হয়েছে নিয়ম ভেঙে। ইফতি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের আরএল নম্বর ১২১২। এই এজেন্সি থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে পাসপোর্ট নম্বর এ০৭৬৪৯৮০১ ও এ১৩৫১১৮৪৪-এর বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন দুজন। সালমান ওভারসিজের আরএল নম্বর ০৭৬৫। এই এজেন্সি থেকেও অনিয়মের মাধ্যমে এ১৭৮১৬৬৩৮, এ০৮৯৪২২৭৬ ও এ১৭৮৬৩৫০৬ নম্বর পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র ইস্যু হয়েছে। একইভাবে আরএল নম্বর ১৫৮৫-এর ভার্সেটাইল ওভারসিজ লিমিটেড থেকে এ১৭৩৩৯৬৭২, এ১৭৩৬২৬৭৮ ও এ১৭৬৩৭৪২৯ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এবিএস ইন্টারন্যাশনালের আরএল নম্বর ১৭৭১। এই এজেন্সি থেকে এ১৭৯২৮১২৩ ও এ১৭৮১৬৬৩৯ পাসপোর্টের বিপরীতে ছাড়পত্র পেয়েছেন দুজন নারী। এ ছাড়া আরও যেসব রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে নিয়মবহির্ভূতভাবে নারী কর্মীরা বিদেশ যেতে ছাড়পত্র পেয়েছেন সেগুলো হলো—প্রতীক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, যার আরএল নম্বর ৫০৬; ভেলি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ১২৬৮; আল-জুহর ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ১৩১১; সালমান ওভারসিজ, যার আরএল নম্বর ০৭৬৫; বিএ অ্যাসোসিয়েট, যার আরএল নম্বর ৫৬৭; বিপ্লব ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ৩৩২; ফ্যালকন ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ৬১৭; শান ওভারসিজ, যার আরএল নম্বর ৭৫৯; রিমেল ওভারসিজ, যার আরএল নম্বর ৭৪৫; হিমেল এয়ার সার্ভিস, যার আরএল নম্বর ৬৭৬; দ্য উইনার ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ১১৪৯; টিপিএস ৩৬০ বাংলাদেশ লিমিটেড, যার আরএল নম্বর ৯৯৫; টিএসও ওভারসিজ, যার আরএল নম্বর ১৭৫৫; জাস্ট ওয়ে এভিয়েশন লিমিটেড, যার আরএল নম্বর ০৭২৬; ফিউচার প্যালেস লিমিটেড, যার আরএল নম্বর ১৯০৯; গালফ ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ১২২১; সাদমান ইন্টারন্যাশাল, যার আরএল নম্বর ৯৪৩; সিটি এয়ার ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ০৫৭৬; আল মাহমুদ ওভারসিজ, যার আরএল নম্বর ১৪১২; ফাস্ট এয়ার সাার্ভিস, যার আরএল নম্বর ১৩৮৩; নুসাইবা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ১৬১২; আল মোবারক ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ০৫৪২; তাসনিম ওভারসিজ, যার আরএল নম্বর ৫৬৯; মক্কা ওভারসিজ, যার আরএল নম্বর ১১৭৫; আল মিনার ওভারসিজ, যার আরএল নম্বর ১২৩৫; বাংলাদেশ এক্সপোর্ট করপোরেশন, যার আরএল নম্বর ৮০৩; কেএস ওভারসিজ, যার আরএল নম্বর ১৪২২; এসএম ম্যানপাওয়ার লিমিটেড, যার আরএল নম্বর ১৩৭২ এবং এইচএ ইন্টারন্যাশনাল, যার আরএল নম্বর ৪৬৯।

অভিবাসন খাতে সুশাসনের অভাবেই মূলত এ ধরনের অনিয়মের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে বলে মনে করেন নারী অভিবাসীদের সুরক্ষা ও অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম অ্যান্ড ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের সহযোগী পরিচালক শরিফুল ইসলাম হাসান। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে যে যায়, যে নেয় আর যে পাঠায়—এই তিনটি পক্ষই অপরাধী। আর এই পুরো সিস্টেমটাকে মনিটরিং করার রেগুলেটরি অথরিটি (নিয়ন্ত্রক সংস্থা) হলো বিএমইটি। তবে বিএমইটির কর্মকর্তারাই যখন এই দুষ্টচক্রে জড়িত থাকবেন, তখন তো আর আসলে সুশাসন ফিরবে না। এখানে অনুসন্ধান করে কারা কারা জড়িত তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নিতে হবে। অভিবাসন খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি তথা সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমইটির একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘নারী কর্মীদের প্রশিক্ষণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি এবং আমাদেরও কয়েকজন কর্তাব্যক্তি চান না প্রশিক্ষণ। তারা মনে করেন, শুধু পাঠাতে পারলেই হলো। কিন্তু আমরা যাদের বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছি, তারা আমাদের দেশেরই নাগরিক, আমাদের মা, আমাদের বোন। তবে কেউ এই বিষয়টি ভাবে না।’

সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিএমইটির মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল ও বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি।

পরে যোগাযোগ করা হয় সরকারি এই সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আশরাফ হোসেনের সঙ্গে। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘আমি খুব করে চাই কেউ বিদেশ থেকে ফিরে এলেও তাকে যেন অন্তত সাত দিনের একটা রিফ্রেশার ট্রেনিং দেওয়া হয়। এতে দুটি জিনিস হয়, তা হলো—সেখানে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, সেটি আমরা জানতে পারি। পরে যাতে এ বিষয়ে নতুনদের সচেতন করা যায়। এ ছাড়া ওই ধরনের সমস্যার সে পুনরায় সম্মুখীন হলে কী করতে হবে, সেটিও বুঝতে পারবে।’

নিজেদের গাফিলতির দায় কিছুটা স্বীকার করে নিয়ে বিএমইটির শীর্ষ পর্যায়ের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘গত বছর আমাদের রেমিট্যান্স (প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা) ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশিক্ষণ দিয়ে সঠিকভাবে কর্মী পাঠানো গেলে এটি অন্তত ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব বলে আমি মনে করি। তবে এটি সত্য যে, আমরা সঠিকভাবে সেটা করতে পারছি না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পাচারের সময় দুই কোটি টাকার সোনার বারসহ আটক তিন

খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের নামে মিথ্যা অপপ্রচার, থানায় জিডি

গোলাম রুহানীসহ পুলিশের ৪ কর্মকর্তা বরখাস্ত

নারায়ণগঞ্জে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন সোমবার 

বড় শয়তান এখনো আমাদের কাঁধে নিঃশ্বাস ফেলছে : মাহফুজ আলম

১২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৩ হাজার কোটি টাকা

৫ ঘণ্টা পর বনানীতে যান চলাচল শুরু

টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গাইবেন তারা

‘কেন্দ্রের ভুলে’ অকৃতকার্য ৪৮ জনের সবাই পাস, অনেকে পেল জিপিএ ৫

১০

কাশ্মীরের স্বাধীনতা নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বার্তা

১১

বিএনপিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না : মির্জা ফখরুল

১২

সমাজের বাস্তব চিত্র নিয়ে টেলিফিল্ম ‘আমারও গল্প আছে’

১৩

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের আহ্বান সাকিফ শামীমের / যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপে ব্যবসায়ী সমাজ উদ্বিগ্ন

১৪

অস্ত্র মামলায় সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে চার্জশিট 

১৫

স্থূলতার প্রভাব থেকে রক্ষা করতে পারে যে সবজি

১৬

ডেঙ্গুতে আরও এক মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪২০

১৭

পাকিস্তানেও ‘৫ আগস্ট’ সরকার পতনের পরিকল্পনা করছে পিটিআই?

১৮

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা / গ্রেপ্তার আরও দুই আসামি ৪ দিনের রিমান্ডে

১৯

সোহাগ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন আনসারের ডিজি

২০
X