বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২
রাজু আহমেদ
প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:৪৫ এএম
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৯ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
এটুআইর আওতায় ব্যবসা

সরকারি কোম্পানির আড়ালে ব্যক্তি মুনাফার আয়োজন

সরকারি কোম্পানির আড়ালে ব্যক্তি মুনাফার আয়োজন

সরকারের নবগঠিত সংস্থা এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই)-এর অধীনে কোম্পানি গঠন নিয়ে চলছে স্বার্থান্বেষী একটি মহলের তৎপরতা। প্রকল্প থেকে সংস্থায় রূপান্তরের জন্য সংসদে আইন পাসের আগে থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু করেন তারা। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো কোম্পানির অংশীদারত্ব বিষয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষর করা হয়েছে। সরকারি মালিকানায় কোম্পানি গঠন করতে হলে মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু এটুআইর আওতায় কমপক্ষে পাঁচটি কোম্পানির রূপরেখা প্রায় চূড়ান্ত হলেও মন্ত্রিপরিষদ দূরের কথা, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের নীতিগত অনুমোদনও নেননি এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) কর্মসূচিকে একটি .স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় রূপান্তরের জন্য সংসদের গত অধিবেশনে একটি আইন পাস হয়। নতুন এই সংস্থার নাম এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই)। আইনের ২১ ধারায় সংস্থাটিকে কোম্পানি গঠন করে ব্যবসা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রযুক্তি খাত-সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনগুলো এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। এমনকি সংসদীয় কমিটিরও সুপারিশ ছিল, এটুআই কোনো কোম্পানি গঠন বা ব্যবসা করতে পারবে না। কিন্তু বিল পাসের সময় সেগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এটুআইর আওতায় পরিচালিত বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে দীর্ঘদিন ধরেই তৎপর রয়েছে একটি পক্ষ। সংস্থায় রূপান্তরের জন্য আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হলে কোম্পানি গঠনের এই প্রক্রিয়া আরও জোরদার হয়। সংসদে বিল উত্থাপনের আগেই এটুআইর আওতাধীন সম্ভাব্য কোম্পানিতে বেসরকারি অংশীদারত্ব নিয়ে আলোচনা সেরে ফেলেন তারা। অথচ কোনো প্রকল্প পরিচালকও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

জানতে চাইলে এটুআইর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া কালবেলাকে জানান, ‘এটুআই প্রকল্পকে সরকারের এজেন্সিতে রূপান্তর করে সংসদে আইন পাস হয়েছে। তবে এজেন্সি গঠনের প্রক্রিয়া এখনো সম্পন্ন হয়নি। ফলে এর আওতায় কোম্পানি গঠনের কোনো বাস্তবতা তৈরি হয়নি। তা সত্ত্বেও কারা কীভাবে কোম্পানি গঠন নিয়ে কাজ করছেন, তা আমার জানা নেই।’

বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য ও নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এটুআই প্রকল্পের আওতাধীন ই-কমার্স সেবা একশপ (www.ekshop.gov.bd) এবং বিভিন্ন ফি ও বিল পরিশোধের প্ল্যাটফর্ম একপে (ekpay.gov.bd)-কে কোম্পানিতে রূপান্তরের প্রস্তুতি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুটি প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন করা হবে। এরপর সরকারের আরেক উদ্যোগ স্টার্টআপ বাংলাদেশ থেকে তহবিল নিয়ে কৌশলে সরকারি মালিকানা দেখানো হবে। এ নিয়ে স্টার্টআপ বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি এবং অনলাইনে কয়েকটি সভা করেছেন এটুআইর নীতি উপদেষ্টা (পলিসি অ্যাডভাইজার) আনির চৌধুরী এবং বিজনেস ডেভেলপমেন্ট হেড ও একশপের টিম লিডার রেজওয়ানুল হক জামী। এ-সংক্রান্ত কয়েকটি সভার গুগল ক্যালেন্ডার স্ক্রিনশট কালবেলার হাতে এসেছে।

গত ২৬ জুন অনুষ্ঠিত একটি সভার বিষয় ছিল ‘একপে কোম্পানি ফর্মুলেশন ডিসকাশন (একপে কোম্পানি গঠন-সংক্রান্ত আলোচনা)’। এরপর ৫ জুলাই আরেকটি সভা করেন সংশ্লিষ্টরা। ওই সভার বিষয় ছিল ‘একপে কোম্পানি ফর্মেশন (একপে কোম্পানি গঠন)’। ২৩ আগস্ট আরেকটি সভার বিষয় ছিল ‘একপে: এটুআই, জয়তুন অ্যান্ড স্টার্ট-আপ জয়েন্ট ভেঞ্চার’।

এসব সভার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জানা যায়, একপের বিষয়ে গত জানুয়ারিতে জয়তুন নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এটুআইর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী জয়তুনের কর্ণধার। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তার ব্যবসায়িক কার্যালয়ে চলছে একপের কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের অধিকাংশ ই-কমার্স কোম্পানি একশপের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর বিনিময়ে একশপ পণ্যভিত্তিক নির্ধারিত হারে কমিশন পায়। সব মিলিয়ে এখান থেকে একশপের মাসিক আয় কয়েক লাখ টাকা। তবে এই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয় না। আবার এটুআইর আওতাধীন একপের মাধ্যমে সরকারের অধিকাংশ দপ্তরের অনলাইন পেমেন্ট হয়ে থাকে। এই সেবার বিনিময়ে একপের উল্লেখযোগ্য আয় হলেও তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয় না।

জানা গেছে, একশপ ও একপেকে কোম্পানিতে রূপান্তরের জন্য কাগজপত্র তৈরি ও আইনি বিষয় নিয়ে কাজ করছে লিগ্যাল সার্কেল নামে একটি ল ফার্ম। এই প্রক্রিয়ায় মূল ভূমিকা পালন করছেন এটুআইর বিজনেস ডেভেলপমেন্ট হেড ও একশপ টিম লিডার রেজওয়ানুল হক জামী। একশপ নামে প্রস্তাবিত এই নতুন কোম্পানিতে অংশীদার হিসেবে থাকছে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ডেটা গ্রিড। রেজওয়ানুল হক জামীর বন্ধু তারিকুল ইসলাম মনির এই প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি বিজেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও রিয়েল এস্টেট কোম্পানি নিউ ভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। শুধু তাই নয়, কোম্পানিতে রেজওয়ানুল হক জামীর নামেও মালিকানার অংশ বা শেয়ার রাখা হচ্ছে। অথচ এটুআইর চাকরিজীবী হিসেবে এর আওতাধীন কোম্পানিতে তার মালিকানার কোনো সুযোগ নেই।

একশপ ও একপে কোম্পানি গঠন প্রক্রিয়ার বিষয়ে লিগ্যাল সার্কেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিতা গাজী রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কোম্পানি গঠনের এই প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। সর্বশেষ গত ২৯ আগস্ট স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদের সঙ্গে সভা করেছেন এটুআইর আনীর চৌধুরী, রেজওয়ানুল হক জামীসহ সংশ্লিষ্টরা। এই সভার গুগল ক্যালেন্ডারের স্ক্রিনশটও পেয়েছে কালবেলা। এতে কোম্পানি গঠনের বিস্তারিত তুলে ধরে একশপ নিয়ে ডেটা গ্রিড এবং একপে নিয়ে জয়তুনের পক্ষ থেকে আলাদা উপস্থাপনা (প্রেজেন্টেশন) তুলে ধরা হয়।

জানতে চাইলে এটুআইর পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরীর কালবেলাকে বলেন, ‘এটুআইর আওতায় কোম্পানি গঠনের বিষয়টি এখন পর্যন্ত পরিকল্পনার মধ্যে নেই। যথাসময়ে এটি হবে। যখন হবে সেটি মন্ত্রিপরিষদের মাধ্যমে হবে।’

তাহলে একশপ, একপেসহ কয়েকটি কোম্পানি গঠনের প্রক্রিয়া কীভাবে চলছে—এ প্রশ্নের জবাবে আনির চৌধুরী বলেন, ‘প্রক্রিয়াগুলো এগিয়ে রাখছি। যখন কেবিনেট থেকে সিদ্ধান্ত আসবে তখন এগুলো বাস্তবায়ন করবো। এটুআই এজেন্সি করতে হলে এখনো প্রবিধান, নীতিমালাসহ অনেক কিছু করতে হবে। এগুলো আগে শেষ হবে। তারপর কোম্পানি গঠনের কাজ শুরু করব। এখন শুধু আলাপ-আলোচনা চলছে। আলাপ তো বহুদিন ধরেই চলতে পারে। কোম্পানির যাত্রা শুরু করা অন্য বিষয়।’

জানা গেছে, একপে ও একশপে বিনিয়োগের বিষয়ে গত ৩০ আগস্ট স্টার্টআপের বোর্ডসভায় আলোচনা হয়। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধনের পর এই দুটি উদ্যোগে বিনিয়োগের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তিনি নিজে কথা না বলে স্টার্টআপের মার্কেটিং ম্যানেজার নাফিজ আলমকে দায়িত্ব দেন। কালবেলাকে তিনি জানান, ‘একশপ ও ও একপেতে বিনিয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে এই দুটি উদ্যোগ এখনো স্টার্টআপ হিসেবে নিবন্ধিত নয়। এ ছাড়া এগুলো যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এখন পর্যন্ত কোম্পানি গঠন করেনি। সব শর্ত পূরণ করে নিবন্ধিত হলে ভবিষ্যতে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে।’

অন্যদিকে এটুআইর আরেকটি উদ্যোগ মুক্তপাঠকে (muktopaath.gov.bd) কেন্দ্র করে শিক্ষা ও ই-লার্নিং সংক্রান্ত কোম্পানি গঠনের লক্ষ্যে গত জুলাই মাসে বিল্ডকন কনসালট্যান্সিস লিমিটেড নামে একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। মোবাইল অপারেটর কোম্পানি রবির সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন বিল্ডকনের কর্ণধার। এ বিষয়ে জানার জন্য ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

একইভাবে এটুআইর আওতায় একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল কোম্পানি গঠনের লক্ষ্যে গত জুলাই মাসে ডট বার্থ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মালিক সৈয়দ গাউসুল আলম শাওন।

এ ছাড়া, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বিষয়ে কোম্পানি গঠনের লক্ষ্যে বিডি জবসের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।

এসব আলোচনা ও সমঝোতা স্মারকের বিষয়ে এটুআইর প্রকল্প পরিচালক মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া কালবেলাকে বলেন, ‘এটুআইর আওতায় কোনো কোম্পানি গঠন কিংবা সেই কোম্পানি-সংক্রান্ত কোনো চুক্তি করতে হলে সেটি করার এখতিয়ার প্রকল্প পরিচালক অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির। এর বাইরে কেউ এ ধরনের চুক্তি করতে পারে না। এটুআই কারও সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তি করেনি। এর বাইরে কারা কোথায় কী আলোচনা করছে—আমার জানা নেই।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এটুআইকে ঘিরে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের অংশীদারত্বভিত্তিক কোম্পানি গঠনের এই প্রক্রিয়ায় মূল উদ্যোক্তা প্রকল্পের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট হেড রেজওয়ানুল হক জামী। এর আগেও নিজের এবং ঘনিষ্ঠজনদের প্রতিষ্ঠানকে এটুআই থেকে সুবিধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, এটুআইর আওতাধীন একশপের ম্যানেজমেন্ট ও ইমপ্লেমেন্টেশনের দায়িত্বে আছে রেজওয়ানুল হক জামী ও তার স্ত্রী ইউএনডিপি কনসালট্যান্ট সারাহ জিতার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এসপায়ার লিমিটেড। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসহ এটুআইর আওতাধীন বিভিন্ন সফটওয়্যার তৈরির কাজও পেয়েছে এই কোম্পানি। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সরকারি কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত একশপ এবং ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান এসপায়ার লিমিটেডের কার্যক্রম একই ভবন (আশা সেন্টার, বাড়ি- ৮৮, রোড- ২/এ, ধানমন্ডি) থেকে পরিচালিত হয়।

এসব বিষয়ে রেজওয়ানুল হক জামী কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা এক্সপ্লোর করার চেষ্টা করছি যে, এটুআইর আওতাধীন বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে কীভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ যুক্ত করা যায়। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটুআই মাত্রই এজেন্সি হয়েছে। এজেন্সির বিধিমালা হওয়ার পর আসলে এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে। এখনো যেহেতু বিধিমালা হয়নি এবং এগুলো এখনো প্রজেক্টের উদ্যোগ হিসেবে আছে, তাই এগুলো নিয়ে এখনো কিছু বলার সময় আসেনি।’

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্ব নিয়ে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগগুলোকে কীভাবে সাসটেইনেবল (টেকসই) করা যায়, সেটি নিয়ে আমরা নিয়মিতই বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করি। তবে অফিসিয়াল কোনো কিছুই হয়নি। এটি যেহেতু একটি এজেন্সি হয়ে গেছে, সেই এজেন্সির অধীনেই সব কাজ চলবে।’

একাধিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এমওইউতে কোনো আর্থিক সংশ্লিষ্টতা থাকে না। প্রতিটি উদ্যোগেরই বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ ধরনের এমওইউ থাকে, তারা যাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে। বিল্ডকনের সঙ্গেও বোধহয় আমাদের এমন একটি এমওইউ হয়েছে, যার আওতায় বিল্ডকন ও মুক্তপাঠ একসঙ্গে প্রচারণায় যাবে।’

জাতীয় সংসদে এটুআই আইন উত্থাপনের পর থেকেই এর আওতায় কোম্পানি গঠন-সংক্রান্ত ধারার বিরোধিতা করছে আইসিটি খাত-সংশ্লিষ্ট পাঁচটি ব্যবসায়ী সংগঠন। এগুলো হলো—বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। এটুআইর আওতায় সরকারি কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কাজের সুযোগ সীমিত হয়ে যাবে বলে তারা মনে করে।

বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ‘সরকার যদি কোম্পানি করে সরাসরি ব্যবসায় নেমে যায় তাহলে তো বেসরকারি খাতের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয় তৈরি হবে। সে কারণেই আমাদের আপত্তি। আমরা এখনো আশা করছি যে, সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে আইন সংশোধন করে কোম্পানি গঠন-সংক্রান্ত ধারাটি বাদ দেওয়া হবে। আর এর মধ্যে যদি তারা কোনো কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব কেবিনেটে যায়, তখন সে বিষয়ে অবশ্যই আমরা কথা বলব।’

তিনি বলেন, ‘এটুআইর অধীনে যদি কোনো কোম্পানি হয়, সেটি কিন্তু সরকারি কোম্পানি, এটুআইর কোম্পানি না। সরকারি যে কোনো কোম্পানি করতে হলে তার জন্য কেবিনেটের অনুমোদন লাগবে। ফলে কেউ চাইলেই কোম্পানি করে ফেলতে পারবে, বিষয়টি এমন নয়।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইউআরপি ও ডিএলআর মডিউল প্রস্তুত / মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাবে শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে

রাশিয়া শক্তিশালী, এটা মেনে নিতেই হবে : ট্রাম্প

ময়মনসিংহ থেকে বাস চলাচল শুরু, ভাঙচুরের ঘটনায় কমিটি

আইপিএলে ভালো করলেও ভারত দলে জায়গা নিশ্চিত নয়

ফেব্রুয়ারির কত তারিখে রোজা শুরু হতে পারে 

দুই শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায় আহমাদুল্লাহর উদ্বেগ

সরকারি কর্মচারীরা দাফনের জন্য পাবেন টাকা

দেড় যুগেও নির্মাণ হয়নি জহির রায়হান মিলনায়তন

দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, দুই উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

৫ অভ্যাসে বার্ধক্যেও ভালো থাকবে হৎপিণ্ড

১০

অনশন প্রত্যাহার করল বেরোবি শিক্ষার্থীরা

১১

‘ভুল চিকিৎসায়’ একদিনে দুই শিশুর মৃত্যু

১২

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর

১৩

কাভার্ডভ্যানের চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু

১৪

মাস্ক পরে হাসপাতালে দীপু মনি

১৫

ছাত্র সংসদের দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ ঘিরে বিভক্ত বেরোবির শিক্ষার্থীরা

১৬

বন্ধুত্ব চাইলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

১৭

গাজা সীমান্তে ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করল মিসর

১৮

জাজিরা হাসপাতালে দুদকের অভিযান, অনিয়মে জর্জরিত স্বাস্থ্যসেবা

১৯

ডেজার সভাপতি প্রকৌশলী রুহুল আলম, সম্পাদক প্রকৌশলী চুন্নু

২০
X