কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:১০ এএম
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আজ

গ্রাফিক্স : কালবেলা
গ্রাফিক্স : কালবেলা

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি দীর্ঘবিরতির পর আবারও হরতালের রাজনীতিতে ফিরেছে। প্রায় ৩ বছর ৮ মাস পর দলটি আজ রোববার দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে দলটি। হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামীও।

এ ছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি ও এবি পার্টি হরতাল পালনের ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে সারা দেশে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। সতর্ক থেকে প্রয়োজনে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা ও নৈরাজ্য প্রতিহত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের।

অন্যদিকে, হরতালের মধ্যেও বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। এমন প্রেক্ষাপটে হরতাল ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা আতঙ্ক ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে।

গতকাল শনিবার নয়াপল্টনের মহাসমাবেশ থেকে হ্যান্ডমাইকে হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কাকরাইল ও বিজয়নগরে সংঘর্ষ এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বারবার বিকট শব্দের মধ্যে আজ ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল পালনের ঘোষণা আসে। বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখা হয়, ‘নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে আওয়ামী পুলিশের হামলার প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল।’

মহাসমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াত। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিবৃতিতে এ কর্মসূটি ঘোষণা করেন দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম। জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, মহাসমাবেশ বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শনিবার জামায়াত এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে। সভা-মিছিল করা রাজনৈতিক দলের সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার। জামায়াতের মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের বাস, লঞ্চ ও ট্রেন থেকে নামিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তার সম্পূর্ণ বেআইনি, অগণতান্ত্রিক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত।

বিএনপি সবশেষ হরতাল ডেকেছিল ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ঢাকায় এই হরতাল ডাকা হয়েছিল। সেই হরতাল নিয়েও অনেক আলোচনা হয়েছিল রাজনৈতিক অঙ্গনে। কারণ, দলটি সেবারও দীর্ঘসময় পর হরতাল কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। সেবার ৩ বছর ১০ মাস ১১ দিন পর ঢাকায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে দলটি। তার আগে ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সর্বশেষ হরতাল দিয়েছিল বিএনপি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর ২০১৫ সালে ওই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে টানা তিন মাস হরতাল-অবরোধ পালন করে দলটি। ওই হরতাল-অবরোধ ও আন্দোলন একপর্যায়ে সহিংস রূপ নেয়। বাসে আগুন ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের মতো ঘটনায় বহু মানুষ হতাহত হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। সরকার এসব ঘটনার জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটকে দায়ী করলেও তারা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে উল্টো সরকারকেই এসব ঘটনার জন্য দায়ী করে আসছে।

এর আগে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর ২০০৯ সালের ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই বছরের ২৭ জুন বিভিন্ন দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। এরপর ২০১০ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়াকে ঢাকা সেনানিবাসের মইনুল রোডের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিবাদে বিএনপি দ্বিতীয় হরতাল পালন করে।

‘হরতালের নামে সাধারণের যানচলাচল ব্যাহত করলে কঠোর ব্যবস্থা’: হরতালের নামে কেউ যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করার চেষ্টা করে ও সাধারণের যানচলাচলে ব্যাহত করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেবে। গতকাল শনিবার রাতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।

সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা আমাদের বন্ধু, সাংবাদিকরা জনগণের বন্ধু। এ ঘটনাটি যেহেতু ব্যস্ততার কারণে আমার নজরে এখনো আসেনি। যদি সেই ধরনের কোনো ব্যবস্থা হয়ে থাকে, তাহলে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা সেটির জন্য নেওয়া হবে।

জামায়াত অনুমতি ছাড়াই সমাবেশ করায় কোনো আপস হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, কখনোই না। আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে প্রায় ১৪টি দল। সবাইকেই কিন্তু আমরা অনুমতি দিয়েছি এবং আমরা আশা করেছিলাম সবাই শান্তিপূর্ণ অবস্থায় তাদের সমাবেশ করবে। বিএনপি লিখিত দিয়েছে এবং আমরা শর্ত দিয়েছি। সেই শর্ত মেনে নিয়েই তারা সমাবেশ করতে এসেছে। অন্যান্য দলগুলোকেও আমরা চেষ্টা করেছি নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। আমরা সিসি ক্যামেরা বসিয়েছি, পুলিশি নিরাপত্তা রেখেছি। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি তাদের নিরাপত্তা দিতে, যাতে তাদের সমাবেশ সুন্দরভাবে করতে পারে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আরও ১৪ জেলেকে অপহরণ করল আরাকান আর্মি

ব্রাজিলে বেড়ে ওঠেও আর্জেন্টিনার জার্সিতে স্বপ্ন দেখছেন তরুণ ফুটবলার

ইয়েমেনের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় ইসরায়েল

সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে যেসব অঞ্চলে

ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পিছিয়ে রাখা হয়েছিল : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে শোকজ

জোয়ারের তোড়ে লোকালয়ে ভেসে এলো বনের হরিণ

৩শ সাপ পুষছেন ইদ্রিস, কামড় খেয়েছেন দুই শতাধিক

রেকর্ড জয়ের পরও সিরিজ হাতছাড়া অজিদের

ভয়াবহ যৌন হয়রানির ঘটনা জানালেন সালমানের নায়িকা

১০

‘আইন শক্তিশালী হলেই শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে’

১১

দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে ইউক্রেনকে আটকে দিচ্ছে পেন্টাগন

১২

ইসিতে ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতি, ক্ষোভ ঝাড়লেন রুমিন ফারহানা 

১৩

গণফ্রন্টের কার্যকরী চেয়ারম্যান হয়েছেন অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন

১৪

ক্যাম্পাসে এখনো প্রান্তিক অবস্থায় ছাত্রদল, অভিযোগ আবিদের

১৫

১২ মাসের জন্য ছিটকে গেলেন সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে গতিময় পেসার

১৬

তরুণ ব্যবসায়ীর লাশ নিয়ে বিক্ষোভ

১৭

আমরা চাই টাকা-পয়সার ব্যাপারে সমাধান হোক : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৮

বাম চোখ লাফালে কী হয়? যা বলছেন বিশেষজ্ঞ আলেম

১৯

গ্র্যান্ড স্ল্যামে প্রাইজ মানি বাড়ানোর আহ্বান জোকোভিচের

২০
X