কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৮ এএম
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
তোপের মুখে সুর বদলাল জর্ডান

ইসরায়েলি হামলা থেকে দুই ‘অস্ত্রে’ নিজেকে রক্ষা করতে পারে ইরান

ইসরায়েলি হামলা থেকে দুই ‘অস্ত্রে’ নিজেকে রক্ষা করতে পারে ইরান

ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো ইরানের সরাসরি হামলার পর এটা এখন নিশ্চিত যে, তেল আবিব যে কোনো সময় এর জবাব দিতে পারে। তাই একটা প্রশ্ন সামনে আসছে, ইসরায়েলি হামলা থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করতে পারে ইরান? কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, হামলা হলে দুই ‘অস্ত্রে’ নিজেকে রক্ষা করতে পারে ইরান।

এদিকে ইসরায়েল লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ঠেকিয়ে নিজ দেশ এবং মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে জর্ডান। দেশটি আত্মরক্ষার জন্য এ পদক্ষেপ নিলেও সে ব্যাখ্যা নিজ দেশের মানুষই আমলে নিচ্ছে না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে এবার সুর বদল করেছে জর্ডান সরকার। ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার জন্য এবার ইসরায়েলকে দায়ী করল জর্ডান। ইরানের হামলার চার দিন না পেরোতেই নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা করে এ অভিযোগ তুলেছে দেশটি।

আলজাজিরার বিশ্লেষণে আরও বলা হয়েছে, কয়েক দশকের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে স্থানীয় প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্রের ওপরই মূলত নির্ভর করছে ইরান। ইরান এখন বেশিরভাগ রাশিয়ান সুখোই এবং মিগ যুদ্ধবিমান পরিচালনা করে, যা সোভিয়েত যুগের। ইরানের বিমানবাহিনীও তার নিজস্ব জেট তৈরি করছে, যেমন সেকেহ ও কাউসার, যা মার্কিন নকশার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। ইরান স্থানীয়ভাবে উন্নত বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে। আরমান, খোরদাদ-১৫, সায়াদসহ একাধিক মাঝারি পাল্লার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিভিন্ন উচ্চতায় ২০০ কিলোমিটার (১২৪ মাইল) পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তু থেকে ইরানের আকাশকে রক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া আছে তাদের স্থানীয়ভাবে তৈরি কামিকাজে ড্রোন, যা ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় এসেছে। এই

ড্রোন ব্যবহার করেও দেশটি নিজ দেশের আকাশসীমাকে সুরক্ষিত রাখতে পারে। কিন্তু ইসরায়েলের মতো উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেশটির নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় ইসরায়েলের মতো অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রকে আটকাতে ইরান কতটা সক্ষম, তা নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।

গতকাল ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় ১৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ইরানে হামলা চালাতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তবে ইসরায়েলের যে কোনো ধরনের হামলা মোকাবিলায় ইরানের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান। দেশটির বিমানবাহিনী বলেছে, ইসরায়েলের যে কোনো পদক্ষেপ মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত রয়েছে। অন্যদিকে কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা বারবার হোঁচট খাচ্ছে। সংঘাত যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে দেন তিনি। গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৮৯ জন। এ পর্যন্ত মোট নিহত ৩৩ হাজার ৮৯৯ জন। খবর মিডল ইস্ট মনিটর ও আলজাজিরার।

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি গত মঙ্গলবার বার্লিনে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করেন। আয়মান বলেন, বিশ্বের উচিত নেতানিয়াহুকে থামানো। কারণ বর্তমান উত্তেজনা বাড়ানোর পেছনে তিনিই দায়ী। জর্ডানের এ নেতা আরও বলেন, সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলায় কর্মকর্তা নিহতের প্রতিশোধ নিয়েছে দেশটি। ইরান বলেছে, তারা আর কোনো সংঘাতে যেতে চায় না। নতুন করে উত্তেজনাও বাড়াতে চায় না; কিন্তু নেতানিয়াহু এটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, তিনি গাজা যুদ্ধ থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরাতে চাইছেন। এ কাজে ইরান ইস্যু ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ দ্বিতীয় বলেছেন, তার দেশ কখনো ‘আঞ্চলিক যুদ্ধের মঞ্চে’ পরিণত হবে না। অন্য সবকিছুর আগে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে জর্ডান বদ্ধপরিকর বলে উল্লেখ করেন বাদশাহ। তিনি বলেন, ইসরায়েলকে হামলা থেকে রক্ষার চেয়ে নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষাই ছিল জর্ডানের মূল উদ্দেশ্য।

উল্লেখ্য, তেহরানের ওই হামলা প্রতিরোধে ইসরায়েলকে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তাদের সঙ্গে যুদ্ধময়দানে প্রকাশ্যে যুক্ত হয় মুসলিম দেশ জর্ডানও। তারা ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের একটি অংশ ভূপাতিত করে। ইসরায়েলকে ওই সহযোগিতার পর জর্ডানের সাধারণ নাগরিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তারা তাদের সরকারকে বেইমান উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। সেখানে ইসরায়েলের পতাকা জড়ানো জর্ডান বাদশাহর ছবি ছড়িয়ে দিয়ে তাকে ধিক্কার জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ। জর্ডানিরা বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সহায়তা করে তাদের সরকার বেইমানি করেছে। ফিলিস্তিনের গাজায় নির্যাতিত মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যারা কয়েক মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন, তারা খুবই মর্মাহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, জর্ডানের রানি রানিয়াসহ দেশটির বেশিরভাগ মানুষ ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত। ইরানের হামলা ঠেকানোর বিষয়টি তারা মেনে নিতে পারছেন না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিজ এলাকায় মিন্টুকে বরণ করতে উন্মুখ নেতাকর্মীরা

দুই দিন ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না তিন এলাকায়

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পাকিস্তানের নিচে নামল ভারত

১৭ বছর পর প্রবীরের অশ্রুভেজা প্রত্যাবর্তন

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর রেলওয়ের চার কর্মকর্তাকে বদলি

গ্রুপ চ্যাট চালু করল চ্যাটজিপিটি, জানুন ব্যবহার

অপহরণের পর ৪০ হাজার টাকা দাবি, না পেয়ে কিশোরকে হত্যা

কায়কোবাদকে নিয়ে মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রতিবাদ

নতুন ইউএনও ১৬৬ উপজেলায়

খাজা এনায়েতপুর দরবার শরিফের পীরের ইন্তেকাল

১০

বিপিএল নিলামে ২৫০ বিদেশি—প্রতি দলে খরচ ৯ কোটি

১১

একটি দল দেশে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে : মির্জা ফখরুল 

১২

প্রথম নারী পুলিশ সুপার পেল বরিশাল

১৩

জ্বালানি লোডিংয়ের দ্বারপ্রান্তে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

১৪

আগামী শনিবার পূর্ণাঙ্গ ‘মক ভোটিং’ : ইসি সচিব

১৫

বিপিএল শুরুর সময় জানাল বিসিবি

১৬

ব্যক্তিত্বের সুরক্ষায় আদালতের দ্বারস্থ শিল্পা শেঠি

১৭

শততম টেস্টের পর বড় সুখবর পেলেন মুশফিক

১৮

পে স্কেল নিয়ে নতুন তথ্য

১৯

খালেদা জিয়ার সুস্থতা চেয়ে ফুল পাঠালেন চীনা রাষ্ট্রদূত

২০
X