মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়ায় এক দশকেরও বেশি সময়; অর্থাৎ ২০১১ সাল থেকেই চলছে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ। দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘর্ষ, রক্তপাত ও মানবিক বিপর্যয়ের যে ইতিহাস, তা এক কথায় মর্মান্তিক; যার নানামুখী নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট দেশটির অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, বিরাজমান অস্থিতিশীল ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি, সীমাহীন দারিদ্র্যের চিত্রসহ সবক্ষেত্রে। এরই মধ্যে পরিস্থিতি ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে দেশটিতে। দীর্ঘ এ সময় ধরে বাসার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ছিল বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী। গত কয়েক দিন বিদ্রোহীরা দেশটির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলেও নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটে। দীর্ঘ দুই যুগের কর্তৃত্ববাদী শাসনকে উৎখাত করে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্বে থাকা হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস)। এ ঘটনায় বাশার আল-আসাদ দেশে ছেড়ে অজ্ঞাত গন্তব্যে পালাতে বাধ্য হন। বাশার সরকারের উৎখাতের মধ্য দিয়ে দেশটিতে তার পরিবারের পাঁচ দশকের শাসনের অবসান ঘটে। বাশার পরিবারের দীর্ঘ শাসন, বিদ্রোহীদের যুদ্ধ, দীর্ঘ নৈরাজ্য এ পতনকে কীভাবে নিশ্চিত করেছে—তার অন্যতম প্রধান কারণগুলো নিয়ে লিখেছেন সঞ্জয় হালদার
গতকাল বাশার আল-আসাদের পলায়নের খবরে দেশজুড়ে, বিশেষ করে দামেস্কে মানুষের ব্যাপক আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা যায়। এদিন বিদ্রোহী যোদ্ধারা প্রায় বিনা বাধায় রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়ে। এরপরই দেশটির রাজধানীতে রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার মানুষ। তারা উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। হাজার হাজার মানুষ গাড়িতে; হেঁটে দামেস্কের প্রাণকেন্দ্রে জড়ো হন। তাদের ‘স্বাধীনতা’ ‘স্বাধীনতা’ স্লোগানে মুখরিত হয় চারপাশ। বেশ কিছু ভিডিওতে দামেস্কের উমাইয়াদ স্কয়ারে মানুষকে পরিত্যক্ত সামরিক ট্যাঙ্কের ওপর দাঁড়িয়ে আনন্দ উদযাপন করতে আর গান গাইতে দেখা যায়। অন্যদিকে দামেস্কের বিমানবন্দরে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। সংগত কারনেই সেখানে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সিরিয়ার দীর্ঘ সময়ের গৃহযুদ্ধে এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির নিয়ন্ত্রণের জন্য বিরোধীদের যারা বছরের পর বছর ধরে সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন, তাদের কাছে তো বটেই; সাধারণ সিরীয়দের জন্যও একই।
গত দশ দিনে দেশটিতে বিরোধীদের অগ্রযাত্রার মুখে সিরীয় সেনাবাহিনী কার্যত ভেঙে পড়ে। তাদের লড়াই করার ইচ্ছা ছিল কম অথবা ছিল না বললেই চলে। মনে রাখতে হবে, সিরীয় সেনাবাহিনীর এ ব্যক্তিরা ছিল নিয়োগপ্রাপ্ত। মূলত সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছিল তারা। তবে দামেস্কের কিছু জায়গায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। বেশ কিছু ভিডিওতে সিরিয়ার রাজধানী থেকে সরকারি সৈন্যদের শহর ছেড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।
সিরিয়ায় বাশার পরিবারের দীর্ঘ শাসন
টানা পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে সিরিয়া শাসন করেছে বাশার পরিবার। বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আল-আসাদ ছিলেন ১৯৭১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট। সিরিয়ার বাথ পার্টিতে তার ভূমিকা ছিল অনবদ্য। এই দল এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৬৬ সালে ক্ষমতায় আসে। সেই সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন বাশারের বাবা হাফিজ। উচ্চাকাঙ্ক্ষী হাফিজ মাত্র চার বছরের মাথায় নিজ রাজনৈতিক গুরু ও সিরীয় নেতা সালাহ আল-জাদিদকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরিয়ে দেন। পরের বছরেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন তিনি। এরপর ২০০০ সালে তার মৃত্যু হলে ওই বছরই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন ছেলে বাশার আল-আসাদ। তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশারের বিরুদ্ধে শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ। তার শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে দাঁড়ায় জনগণ। বিশেষত দেশের বেকার তরুণদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভেই পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এতে রাজপথে ঝরে রক্ত; দেশজুড়ে ছড়ায় অশান্তি ও সংঘাত। ধীরে ধীরে সিরিয়া সংকটে একে একে জড়িয়ে পড়ে আঞ্চলিক শক্তি থেকে বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলো। মূলত এরপরই বিক্ষোভকারীরা শুরু করে সশস্ত্র বিদ্রোহ। ফলে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। অবশ্য ২০১৫ সালে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিন্তু সম্প্রতি লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়া এবং ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ব্যস্ততার সুযোগে আবারও তৎপর হয়ে ওঠে বিদ্রোহীরা। সম্প্রতি আসাদের সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর (আলেপ্পো ও হামা) নিয়ন্ত্রণে নেয় বিদ্রোহীরা। এরপর হোমসসহ অন্যান্য শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্বে থাকা হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেন, কর্তৃত্ববাদী প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করা তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। এরই একপর্যায়ে সম্প্রতি বিদ্রোহীরা হামলা শুরু করে। আর হামলার মুখে নাটকীয়ভাবে দামেস্ক ছেড়ে পালান প্রেসিডেন্ট আসাদ।
সিরিয়ায় যুদ্ধ বন্ধ না হওয়ার পাঁচ কারণ
২০১৮ সাল থেকে দেশটি কার্যত তিন ভাগে বিভক্ত। দেশটিতে বাশার আল-আসাদের কর্তৃত্ববাদী শাসন, কুর্দি বাহিনী এবং ইসলামী বিদ্রোহীরা বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ফলে নানাভাবে সিরিয়ায় যুদ্ধ সমাপ্তি হয়ে ওঠে কঠিন। এ যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার অন্যতম পাঁচ কারণ বর্ণনা করা হলো।
বিদেশি স্বার্থ
দীর্ঘ সময়ে সিরিয়া পরিণত হয় এক বৈশ্বিক দাবা বোর্ডে। দেশটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিগুলো তাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের জন্য মিত্রদের সাহায্য করার ভান করত। তুরস্ক, সৌদি আরব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিকেন্দ্রীভূত সশস্ত্র বিরোধী দলগুলো আসাদকে চ্যালেঞ্জ করছে। তবে ইরান ও রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সমর্থনের কারণে আসাদের শাসন টিকে ছিল।
সংঘাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং আল-কায়েদার মতো চরমপন্থি জিহাদি সংগঠনগুলোর যুদ্ধের ময়দানে প্রবেশের ফলে উদ্বেগ বাড়ে। এদিকে মার্কিন সমর্থিত সিরিয়ার কুর্দিরা স্বশাসন চাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। আসাদের ক্ষমতা রক্ষায় রাশিয়া ও ইরান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে উত্তরে নিজস্ব সীমানা রক্ষা করতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিতে থাকে তুরস্ক। ২০২০ সালে রাশিয়া এবং তুরস্ক ইদলিবে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা করিডোর স্থাপন করে যৌথ টহল দেওয়া শুরু হয়। তারপরও কিছু লড়াই অব্যাহত ছিল। এতে করে বড় আকারের সংঘর্ষ কমে এলেও সিরিয়ার সরকার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েলের কঠোর আক্রমণের ফলে হিজবুল্লাহর বিশাল পতন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্রমেই কমে আসা রাশিয়ার সম্পদ ও সিরিয়া থেকে সরে যাওয়া মনোযোগ আসাদকে একা করে দেয়। আর বিদ্রোহীরা এ দুর্বলতার সুযোগ মোক্ষম সুযোগ নেয়।
অর্থনৈতিক ধস ও মানবিক সংকট
বছরের পর বছর ধরে চলা যুদ্ধ ধ্বংস করে দেয় সিরিয়াকে। একই সঙ্গে দেশটির অর্থনীতি পঙ্গু, অবকাঠামো ধ্বংস এবং লাখ লাখ মানুষকে চরম দুর্দশায় ফেলে দেয়। এটি এমন একটি মানবিক সংকট তৈরি করেছে, যেখান থেকে পুনরুদ্ধারের কোনো সুস্পষ্ট পথ নেই। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়ায় যুদ্ধের আগের ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হওয়া ৬৮ লাখ মানুষের মধ্যে ২০ লাখেরও বেশি লোক সীমিত সুবিধা নিয়ে ভিড়ে উপচে পড়া শরণার্থীশিবিরে বসবাস করছে। এর বাইরে আরও প্রায় ৬০ লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ এ নতুন লড়াই শুরুর আগেই সিরিয়ায় ১ কোটি ৫৩ লাখ মানুষের মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন ছিল, যা রেকর্ড পরিমাণে সর্বোচ্চ। আর তীব্র খাদ্য সংকটে রয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। তার ওপর গত বছর ফেব্রুয়ারিতে তুরস্কের গাজিয়ানটেপের কাছে হওয়া ভূমিকম্পের ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। এতে সিরিয়ায় প্রায় ছয় হাজার মানুষ মারা যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৮৮ লাখ। এ ছাড়া তেলক্ষেত্র ও মূল বাণিজ্য রুটগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণসহ অর্থনৈতিক স্বার্থগুলোও এ উত্তেজনা জিইয়ে রেখেছে, যা মানবিক সংকটের সঙ্গে মিলে দেশটিতে অসন্তোষ ও অন্তর্দ্বন্দ্ব বাড়িয়েছে।
কর্তৃত্ববাদী শাসন
ক্ষমতা ধরে রাখতে আসাদ সরকার সহিংসতা ও দমনপীড়নের ওপর নির্ভর করেছে। এ প্রবণতা উসকে দিয়েছে অসন্তোষ। সংঘাত করে দীর্ঘায়িত। ২০২১ সালের জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে সিরিয়ান সরকার কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন নৃশংসতা নথিভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রাসায়নিক হামলা, জনবহুল এলাকায় বিমান হামলা, বেসামরিক মানুষদের ক্ষুধার্ত রাখতে দেওয়া অবরোধ এবং মানবিক সাহায্যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলেন, এ যুদ্ধের কেন্দ্রে রয়েছে কর্তৃত্ববাদ।
বিভক্ত সমাজ
যদিও রাজনৈতিক বিভাজন এ সংঘাতের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, এটিও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, একটি শক্তিশালী সাম্প্রদায়িক প্রবাহ দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছে—এমনটি মনে করেন বিশ্লেষক বার্নস-ডেসি। পূর্বদিকে কুর্দি-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলো যুদ্ধের প্রথম বছর থেকেই সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। এদিকে সিরিয়ার বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে আইএসের টিকে থাকা একটি অংশ নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি করে। যুদ্ধের সময় ঠেলে দেওয়া উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ইদলিব সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জন্য একটি শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হয়। আর কার্যত প্রদেশটির শাসক হিসেবে হায়াত তাহরির আল-শামে (এইচটিএস) এই বাহিনীর নেতৃত্ব দেয়। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্বও পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
বিদ্রোহীদের হাতে সিরিয়া
গতকাল আসাদের পলায়নের পর বিদ্রোহীরা সিরিয়াকে মুক্ত ঘোষণা করে। রাজধানী দামেস্কেই রয়েছেন আসাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ঘাজি আল-জালালি। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার প্রশাসন এখন থাকবে তার হাতেই। আসাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিদ্রোহীদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। তারাও হাত বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, দৃঢ়ভাবে বলেছি যে, তারা এ দেশের কারও ক্ষতি করবে না। বাড়ি কিংবা দামেস্ক ছেড়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা তার নেই। তিনি সবাইকে যৌক্তিকভাবে দেশের জন্য চিন্তা করার আহ্বান জানান।
অন্যদিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএসের প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি এক বিবৃতিতে বলেন, দামেস্কে অবস্থানরত সব বিরোধী বাহিনীকে সরকারি প্রতিষ্ঠান দখল করতে নিষেধ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগপর্যন্ত এসব সরকারি প্রতিষ্ঠান সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানেই থাকবে। বিবৃতিতে এইচটিএসের প্রধান তার আইনি নামে (আহমেদ আল-শারা) সই করেছেন। এটাকে আল-কায়েদার সঙ্গে তার অতীতের সম্পর্ক থেকে নিজেকে দূরে রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এইচটিএস তাদের টেলিগ্রাম হ্যান্ডেলে বলেছে, এর মাধ্যমে একটি অন্ধকার যুগের অবসান ঘটেছে এবং এক নতুন যুগের সূচনা ঘটেছে। বিদ্রোহীরা বলেছে, আসাদ সরকারের নিপীড়নের শিকার শত শত মানুষ যারা কারাবন্দি ও বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন, তারা এখন নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারেন।
এদিকে রাজধানীর সবচেয়ে বড় কারাগার সেদনায়া থেকে হাজার হাজার বন্দিকে মুক্ত করেছে বিদ্রোহীরা। সিরিয়ার বিভিন্ন শহর থেকে হিজবুল্লাহ বাহিনী তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করেছে। এ পরিস্থিতিকে একজন বিশ্লেষক ‘৫৪ বছরের স্বৈরশাসনের চূড়ান্ত মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা, রয়টার্স, গার্ডিয়ান