শীতের শুরু থেকেই নানা রকমের অতিথি পাখির আগমন ঘটে বাংলাদেশে। শীত শেষে এসব অতিথি পাখি আবার নিজ দেশে চলে যায়। অতিথি পাখি মূলত উত্তর সাইবেরিয়া, উত্তর ইউরোপ, তিব্বত ও হিমালয় অঞ্চল থেকে আমাদের দেশে আসে। এসব অঞ্চলে শীতকাল পাখির বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। সেইসঙ্গে সেখানে খাবার সংকট থাকে। তাই প্রচণ্ড শীত থেকে রক্ষার জন্য এবং খাবার সংকট থেকে বাঁচতে এরা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, সিলেট, কক্সবাজার এসব অঞ্চলের হাওর-বিলে আস্তানা গড়ে তোলে। অতিথি পাখির মধ্যে রয়েছে বলাকা, বুনোহাঁস, খঞ্জনা, হাড়গিলা, ওয়ার্বালা, স্নাইপ, বক, রেডব্রেস্ট ফ্লাইক্যাচার, চা-পাখি, পিপিট, কাদাখোঁচা ইত্যাদি। প্রকৃতিগতভাবে পাখিগুলো শক্তিশালী হয়ে থাকে। এরা হাজার মাইল ওপর দিয়ে উড়তে পারে। দিন ও রাত মিলে এরা ২৫০ কিলোমিটারের বেশি উড়তে পারে। অতিথি পাখিগুলো কখনো ধনুকের মতো আবার ইংরেজি অক্ষর ‘ভি’ এর মতো, কখনো একগাছি ফুলের মতো উড়ে চলে দূর থেকে বহুদূর। এসব পাখির বিশেষ গুণ হচ্ছে, এরা নিজের গন্তব্যস্থান নিজেই নির্ণয় করতে পারে। পাখিবিদদের মতে, পাখিগুলোর এ বিশাল দূরত্ব পাড়ি দিতে তিনটি জিনিস কাজ করে। সেগুলো হলো কম্পাস, নক্ষত্র কম্পাস এবং অভ্যন্তরীণ ঘড়ি। আমাদের দেশে মানুষ যেমন অতিথি হয়ে আসে এবং একসময় চলে যায়। ঠিক তেমনি অতিথি পাখিগুলো অতিথি হয়ে আসে, আবার ঠিক সময়ে চলে যায়। অতিথি পাখিগুলো দেহের ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে বিভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়ার তারতম্য নির্ণয় করে বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থান করে।
পাখিগুলো আমাদের দেশে এসে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। এসব পাখির যত্ন নিতে হবে। যারা পাখি শিকারি রয়েছে, তাদের হাত থেকে অতিথি পাখি রক্ষা করতে হবে।
মো. রবিন ইসলাম
শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ
ঢাকা কলেজ, ঢাকা