সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৮ এএম
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

রোগ সমাজের গভীরে এবং রন্ধ্রে রন্ধ্রে

রোগ সমাজের গভীরে এবং রন্ধ্রে রন্ধ্রে

ইতিমধ্যে অল্প হলেও অবস্থা যে বদলেছে তাতে সন্দেহ কি? মনে হচ্ছে নতুন একটা বাস্তবতাই তৈরি হয়েছে। কিন্তু সারবস্তুতে সত্যি সত্যি কোনো বদল ঘটেছে কি? আসলে কিন্তু বাস্তবতার ওপরটাই যা বদলেছে, ভেতরের বস্তু আগের মতোই। পুরাতন বাস্তবতার নানা প্রকাশ তাই দেখতে পাচ্ছি। সমাজ-বাস্তবতার প্রধান দিকগুলোর একটি হচ্ছে লুণ্ঠন। যারা ধনী হয়েছে তারা প্রায় সবাই লুটপাটের সঙ্গে জড়িত এবং ওই কাজে দক্ষ। বৈধ লুটপাটেরও ব্যবস্থা আছে। সিন্ডিকেট রয়েছে। থাকবেও। সরকার পতনের পর এখানে-সেখানে লুটপাটের নানা মাত্রায় ঘটনা ঘটেছে।

বিপ্লবকে বলা হয় শোষিত মানুষের উৎসব। কিন্তু সেটা তো লুণ্ঠনের নয়, সৃষ্টির। গণভবনে বসবাসকারীরাও অবশ্য ওই একই কাজ করেছেন, গত পনেরো-ষোলো বছর ধরে। তাদের লুণ্ঠন ছিল অনেক ব্যাপক, সুশৃঙ্খল ও গুপ্ত। কিন্তু লুণ্ঠন যে কোনো অপরাধ নয়, বরং গর্ব ও গৌরবের বিষয় এই শিক্ষাটা তারাই রেখে গেছেন, শাসিত মানুষদের জন্য।

ওই শিক্ষায় শিক্ষিত, বলা যায় ওই ধর্মে দীক্ষিত, মানুষরা সুযোগ পেলেই লুটপাট করে। সবটা মিলিয়ে অখণ্ড এবং নির্মম এক বাস্তবতা এবং ওই একই বাস্তবতার ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশ আমাদের সহ্য করতে হয়। মানুষ অভাবে আছে, শ্রমে তাদের অনীহা নেই, কিন্তু লুণ্ঠন করে যদি অনুপার্জিত সম্পত্তি পাওয়া যায় তবে সেটা নিতে তারা সদাপ্রস্তুত; সে সম্পত্তি যতই সামান্য হোক না কেন। ব্যক্তিগত সম্পত্তি বৃদ্ধির কথা ছাড়া অন্য কিছুর কথা ভাবা প্রায় অসম্ভব, তা মালিক অঢেল পরিমাণে বিত্ত সংগ্রহ করে থাকুক কি একেবারেই নিঃস্ব হোক।

বিগত সরকারকে জনগণের মিত্র বলে কখনোই মনে হয়নি। বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলের পক্ষে সেটা হওয়া সম্ভবও নয়। তবে পতিত প্রধানমন্ত্রীর শাসন দেখে এমন ধারণা তৈরি হচ্ছিল যে, ব্যক্তিগতভাবে তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ, বুঝি তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি ভয়ংকর যে অন্যায় করা হয়েছে তার বদলা নিচ্ছেন। এজন্যই যেন তিনি পুলিশ তো বটেই, অন্য বাহিনীগুলোকেও ব্যবহার করছিলেন। তার শাসনের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়িয়েছে তাদের বসিয়ে দিতে, প্রয়োজনে নির্মূল করে ফেলতে তিনি সংকল্পবদ্ধ ছিলেন। তার আদেশে-নির্দেশে শেষমুহূর্তে যে নৃশংসতার ঘটনা ঘটেছে, তা গণহত্যা ভিন্ন অন্য কিছু নয়। পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। কেবল আহত করার জন্য নয়, হত্যা করার জন্যও। আশুলিয়ায় যে হত্যাকাণ্ডের ভিডিও চিত্র প্রকাশ পেয়েছে, সেটি একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদাররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের মাঠে যে দৃশ্যের অবতারণা করেছিল, তা থেকে পরিমাণে পৃথক হলেও গুণের দিক থেকে একই রকমের বটে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকটি লাশ একটি ভ্যানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পাশে পুলিশের ইউনিফর্ম পরা কয়েকজন দৃশ্যমান। লাশগুলো যে আন্দোলনকারীদের তাতে সন্দেহের কোনো কারণ নেই। লাশের স্তূপ ঢাকা দেওয়া আছে একটি চাদর দিয়ে, হতে পারে সেটা আন্দোলনকারীদের হাতেই ছিল, ব্যানার হিসেবে। জগন্নাথ হলের জগৎখ্যাত সেই দৃশ্যটির সঙ্গে আশুলিয়ার দৃশ্যচিত্রটির আরও একটি মিল এখানে যে, দুটিই ধারণ করা হয়েছিল ঘটনা সৃষ্টিকারীদের অজান্তে, ব্যক্তিগত ক্যামেরায় এবং সন্তর্পণে। মস্ত পার্থক্য অবশ্যই এখানে যে, পাকিস্তানি ঘাতকরা ছিল বিদেশি, আশুলিয়ার ঘাতকরা বাঙালি বটে। সাদৃশ্য সম্পর্কে অবশ্য বলা যায় যে, উভয় ক্ষেত্রেই ঘাতকরা প্রতিপালিত হয়েছে যাদের তারা খুন করেছে তাদের পরিশ্রমের টাকাতেই।

হিংসা হিংসার জন্ম দেয়। ছাত্র-জনঅভ্যুত্থানের ক্ষেত্রেও সেটা দেখা গেছে। পতিত প্রধানমন্ত্রীর আমলে মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মহোৎসব চলেছে; এখন দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করার বেলাতেও একই ব্যগ্রতা ও ব্যস্ততা মূর্ত হয়ে উঠেছে।

প্রতিহিংসাপরায়ণতা শিক্ষাঙ্গনেও দেখা দিয়েছে। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে পদত্যাগপত্র লিখিয়ে নেওয়ার ঘটনা নেহায়েত কম ঘটছে না। দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ বলে অভিযুক্ত হয়ে শিক্ষকরা কেবল যে পদত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন তা নয়, লাঞ্ছিতও হচ্ছেন। মহিলা শিক্ষকরাও অপমানের শিকার হচ্ছেন। এসবের পেছনে শুধু যে রাজনীতি আছে তা নয়, কোথাও কোথাও ব্যক্তিগত শত্রুতাও কাজ করছে। কোনো শিক্ষক যদি দলবাজি বা দুর্নীতি করে থাকেন, হতে পারে অভ্যুত্থানের বিরোধিতাও করেছেন কেউ কেউ, তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করার বৈধ পথ-পদ্ধতি রয়েছে; শিক্ষার্থীরা যদি সে পথে না গিয়ে সহিংস পথ ধরে তবে তো তারা আর শিক্ষার্থী থাকে না, ভিন্ন কিছুতে পরিণত হয়। অন্যদিকে একজন শিক্ষক যদি তার নিজের শিক্ষার্থীদের দ্বারাই লাঞ্ছিত-অপমানিতই হন, তবে তার জ্ঞান-বুদ্ধি যতই থাকুক না কেন, তিনি তো আর শিক্ষক থাকেন না; একেবারেই সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন। শিক্ষকরা শুধু পদমর্যাদার কারণেই শিক্ষক হন না, এমনকি শুধু নিজেদের জ্ঞানগরিমার জন্যও নয়; শিক্ষককে শিক্ষক হতে হলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সম্মান প্রাপ্তিরও প্রয়োজন হয়। ওই সম্মানের ভেতর শ্রদ্ধাবোধও থাকে।

একজন শিক্ষককে আক্রমণ করাটা কিন্তু কেবল ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত করা নয়, গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকেই আক্রমণ করা। শিক্ষার মান প্রধানত নির্ভর করে শিক্ষকতার মানের ওপর, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক যদি অনিরাপদ থাকেন তবে মেধাবানরা তো শিক্ষক হতে চাইবেন না। শিক্ষকরা এমনিতেই অন্যান্য পেশাজীবীর তুলনায় বঞ্চিত, তদুপরি শ্রদ্ধা জিনিসটা যদি ক্ষয়প্রাপ্ত হয় তাহলে শিক্ষকতার এখন যে আকর্ষণটুকু আছে, সেটুকুও আর অবশিষ্ট থাকবে না। আরও একটা ব্যাপার লক্ষ করার মতো। শিক্ষক-লাঞ্ছনা কিন্তু কওমি মাদ্রাসা এবং ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে ঘটছে না। ঘটছে শুধু মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায়। ওই ধারা নানাভাবে বিপদগ্রস্ত। সেখানে কারিকুলাম, সিলেবাস, পাঠ্যপুস্তক ইত্যাদি নিয়ে বহুরকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে যেগুলোর অধিকাংশই কোনো সুফল বয়ে আনে না; অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত ফলই পাওয়া যায়।

রাষ্ট্রশাসকরা এ নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত নন, কারণ তাদের সন্তানরা মূলধারায় পড়তে আসে না, ইংরেজি মাধ্যমই তাদের স্থির ও নিজস্ব ঠিকানা; আরেকটি ঠিকানাও ভেতরে ভেতরে থাকে, সেটা স্বদেশি নয়, বিদেশি বটে। আমরা অনেককাল ধরে ঔপনিবেশিক শাসনাধীন ছিলাম, বঞ্চিত ছিলাম ক্ষমতা থেকে; তাই ক্ষমতা পেলেই আত্মহারা হয়ে পড়ি। অপব্যবহার শুরু করি ক্ষমতার। তা ছাড়া ক্ষমতার নিজস্ব একটা স্বভাবও আছে। সেটা হলো প্রযুক্ত হওয়া। ক্ষমতা যদি প্রদর্শিত হতেই ব্যর্থ হলো তবে সে আবার ক্ষমতা কীসের? কোন জোরে? একবার রক্তের স্বাদ পেয়েছে যে বাঘ, সে কি ওই স্বাদ ভুলতে পারে? শিক্ষাঙ্গনে ক্ষমতা প্রদর্শনের সঙ্গে আমাদের ক্ষমতা-বঞ্চনা এবং ক্ষমতার স্বভাব দুটোই জড়িত রয়েছে।

এবারের অভ্যুত্থানে শুধু যে সরকারের ফ্যাসিবাদী নিষ্ঠুরতারই প্রকাশ ঘটেছে তা নয়, সমাজে বিদ্যমান বৈষম্যের প্রকটতারও উন্মোচন ঘটেছে। যারা নিহত ও আহত হয়েছেন, তাদের হারিয়ে তাদের পরিবারগুলোর কণ্ঠে যে আর্তনাদ ধ্বনিত হয়েছে, তা শুধু যে স্বজন-হারানোর বেদনায় জর্জরিত তা নয়, আর্তনাদের পেছনে আছে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারানোর দরুন অসহায়ত্ব-বৃদ্ধি ও অবস্থা-পরিবর্তনের স্বপ্নের চুরমার হয়ে যাওয়াটাও। ওই আর্তনাদ নিয়েও আলোচনা দরকার।

আপাতত শেষ করা যাক এ কথাটা স্মরণ করে যে, বিদ্যমান সমাজ বাস্তবতাটা মোটেই সুখপ্রদ নয়। বিশ্বব্যাপীই এখন মানুষের দারুণ দুর্দশা চলছে। তা থেকে মুক্তির উপায় ব্যক্তিমালিকানাধীন ও মুনাফাভিত্তিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে বিদায় করে সামাজিক মালিকানার নতুন বিশ্ব গড়ে তোলা। সেজন্য শুধু রাষ্ট্রীয় সংস্কার নয়, সামাজিক বিপ্লবও প্রয়োজন হবে। রাজা ও প্রজার সম্পর্ক ছিন্ন করে, বৈষম্য ঘুচিয়ে ফেলে প্রতিষ্ঠিত করা চাই প্রকৃত সাম্য ও মৈত্রীর সম্পর্ক। তার জন্য সামাজিক বিপ্লব ভিন্ন অন্য কোনো পথ নেই। সংস্কারে কুলাবে না। লুণ্ঠন এবং ত্রাণ তৎপরতা দুটোই সত্য; প্রথমটি ঘটে ব্যক্তিগত মুনাফার লোভে; দ্বিতীয়টি প্রকাশ পায় সমষ্টিগত মঙ্গলের আকাঙ্ক্ষায়। প্রথমটির পরিণতি ফ্যাসিবাদে; দ্বিতীয়টি সৃষ্টি চায় সামাজিক বিপ্লবের। ত্রাণকে সামনে আনতে হলে দুর্যোগের জন্য অপেক্ষা অপ্রয়োজনীয়, কারণ দুর্যোগ এখন সার্বক্ষণিক, দুর্যোগ থেকে মানুষের মনুষ্যত্বকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন পুঁজিবাদী ব্যবস্থার পীড়ন থেকে পরিত্রাণ।

রোগ সমাজের গভীরে এবং রন্ধ্রে রন্ধ্রে। সংস্কারে কুলাবে বলে আশা করাটা যে বর্তমানে নিতান্তই ভ্রান্তিবিলাস, সেটা যেন না ভুলি। সমাজ-পরিবর্তনের আন্দোলনকে গুটিয়ে ফেলার কোনো অবকাশ নেই। সেটা সম্বিতে সার্বক্ষণিকভাবেই থাকা আবশ্যক। সামাজিক তারুণ্য মনে হচ্ছিল অনুপস্থিত, যেন হারিয়েই গেছে, সেই তারুণ্যের বিদ্রোহ অসম্ভবকে সম্ভব করেছে, এর ফলে এমন একটি সরকারের পতন ঘটল, যেটি স্বৈরাচারের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে এবং আশা করছিল কমপক্ষে আরও পনেরো বছর থাকবে। সে ব্যবস্থা মোটামুটি পাকাপোক্তই করে ফেলেছিল। তারুণ্য শুধু যে বিদ্রোহই করেছে তা নয়, সৃজনশীলতাও দেখিয়েছে। সরকার পতনের পর তিন-চার দিন রাজধানীতে কোনো ট্রাফিক পুলিশ দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেছে; ছেলেরা ছিল, মেয়েরাও এসেছে। তারপর এলো ভয়াবহ এক বন্যা। তখন দেখা গেল তরুণরা ত্রাণেও কেমন উদ্ভাবনশীল ও সমর্থ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েরা রাতদিন ত্রাণ সংগ্রহ করেছে, ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বন্যাপীড়িত মানুষদের কাছে ছুটে গেছে। ছেলেতে মেয়েতে কোনো পার্থক্য ছিল না, ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি মনে হয়েছে মিথ্যা প্রচারণা। বন্যার বিরুদ্ধে পাল্টা এক বন্যা, ধ্বংসের বিরুদ্ধে সৃষ্টির। মানুষ এখন একে অন্যকে বিশ্বাস করতে ভয় পায়; আস্থায় ভীষণ দুর্ভিক্ষ; কিন্তু শিক্ষার্থীদের ত্রাণের উদ্যোগে মানুষের আস্থা দেখা গেল অতুলনীয়। নগদ অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী নিয়ে শত শত মানুষ ছুটে এসেছেন। কে কার আগে দান করবেন তার প্রতিযোগিতা।

মানুষ কাজ চায়, শুধু জীবিকার নয়, মানুষ জীবনের কাজও করতে প্রস্তুত; জীবনের কাজটা সমাজ বদলের। অভাব যার সেটি হলো আন্দোলন। ওই আন্দোলন বুর্জোয়ারা করবেন না, বুর্জোয়ারা বৈষম্যবিরোধী নন, তারা বৈষম্য সৃষ্টি ও লালন-পালনের পক্ষে; আন্দোলন করতে হবে বৈষম্যবিরোধীদের, অর্থাৎ সমাজতন্ত্রীদের। সমাজতন্ত্রীরা যদি একটি সুনির্দিষ্ট ও অতীব প্রয়োজনীয় কর্মসূচি নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন, তবে দেখা যাবে সেই ফ্রন্টে মানুষ কীভাবে সাড়া দিচ্ছেন এবং অসম্ভবকে সম্ভব করার দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। ১৯৫৪-এর নির্বাচনে পাঁচমিশালি একটি যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল, তাতে মুসলিম লীগের পতন ভিন্ন অন্যকিছু অর্জিত হয়নি; এখন আর পাঁচমিশালি না, প্রয়োজন সমাজতন্ত্রীদের যুক্তফ্রন্ট। শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাফল্য সামাজিক বৈষম্য দূর করার জন্য সমাজতন্ত্রীদের আবারও বলছে, মিলিত হতে, মিলিত হয়ে সমাজের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব করে তোলার পথে এগোতে। এই যুক্তফ্রন্ট জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে; ওই পথে সামাজিক বিপ্লব ঘটবে এই আশা নিয়ে নয়, সমাজ বিপ্লবের পক্ষে জাতীয় সংসদের ভেতরে এবং বাইরে জনমত ও জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য। নির্বাচনের আগে দাবি হওয়া চাই প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে আসন বণ্টনের এবং নির্বাচিত জাতীয় সংসদকে রাষ্ট্রীয় সংবিধানে প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক উপাদান যুক্ত করার অধিকার দানের। রাষ্ট্রীয়ভাবে এ ঘোষণাটাও থাকা চাই যে, বাহাত্তরের সংবিধানে গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্রগঠনের যে অঙ্গীকার ব্যক্ত ছিল সংবিধানকে তা কোনোমতেই অমান্য করবে না।

সমাজ পরিবর্তনকামীদের ঐক্যটা হবে সামাজিক বাস্তবতার পরিবর্তনের লক্ষ্যে এবং ঐক্য যতটা না নেতাদের হবে তার চেয়ে বেশি হবে কর্মীদের। দেশের মানুষ ওই ঐক্যের জন্য অপেক্ষমাণ। বুর্জোয়াদের রাজনীতিতে তাদের আস্থা শেষ হয়ে গেছে।

লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকা-১৩ আসনে ধানের শীষের সমর্থনে যুবদলের গণমিছিল

নতুন জোটের ঘোষণা দিল এনসিপি

কড়াইল বস্তিতে আগুন, তারেক রহমানের সমবেদনা

কড়াইল বস্তিতে আগুনের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগ ও সমবেদনা 

গণভোট অধ্যাদেশ জারি করে গেজেট প্রকাশ

জেসিআই ঢাকা ইউনাইটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন মাসউদ

কড়াইল বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে

চীনা দূতাবাস কর্মকর্তার সঙ্গে চৌদ্দগ্রাম জামায়াত নেতাদের মতবিনিময়

নুরুদ্দিন আহম্মেদ অপুর সঙ্গে সেলফি তুলতে মুখিয়ে যুবসমাজ

অগ্রণী ব্যাংকের লকারে শেখ হাসিনার ৮৩২ ভরি স্বর্ণ

১০

শুভর বুকে ঐশী, প্রেম নাকি সিনেমার প্রচারণা?

১১

৭০৮ সরকারি কলেজকে চার ক্যাটাগরিতে ভাগ

১২

ইউএস বাংলার সাময়িকীর কনটেন্ট তৈরি করবে অ্যানেক্স কমিউনিকেশনস

১৩

সাদিয়া আয়মানের সমুদ্র বিলাশ

১৪

পৌরসভার পরিত্যক্ত ভবনে মিলল নারীর মরদেহ 

১৫

কড়াইলের আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস

১৬

প্রশাসনের ৭ কর্মকর্তার পদোন্নতি

১৭

যুক্তরাষ্ট্রে যোগাযোগ ও মিডিয়া কনফারেন্সে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে আলোচনা

১৮

এবার জুবিনের মৃত্যু নিয়ে উত্তাল বিধানসভা

১৯

‘সুখবর’ পেলেন বিএনপির আরেক নেত্রী

২০
X