

জীবদ্দশায় যে সমাদর পাওয়ার কথা ছিল, তিনি তা পাননি। জন্মশতবর্ষে তাকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা ছিল, ততটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। বাস্তবিক ঋত্বিক ঘটক একটি উপেক্ষার নাম। আসছে ৪ নভেম্বর ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবর্ষ। দেশভাগের পরিণতিতে মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি সপরিবারে উচ্ছেদ হয়েছিলেন ভিটেমাটি থেকে। দেশ হারানো এই মানুষটি বাকি জীবন নিজেকে উদ্বাস্তু ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারেননি। বাংলা নবজাগৃতির বরপুত্র ঋত্বিক দেশভাগের সেই গভীর ফাটল থেকে উদ্ভূত এক কালপুরুষ। মার্ক্সবাদী দর্শনের সঙ্গে লোকজ সংস্কৃতিকে তিনি সমন্বিত করেছেন। তার চিন্তা, চেতনা ও মননকে ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি ও পাশ্চাত্য শিল্পতত্ত্ব বিশেষভাবে নাড়া দিতে পারেনি। আদর্শিক কারণেই তার কাজে দলিত মানুষের উপস্থিতি প্রবল। দেশত্যাগী, বাস্তুচ্যুত, ছিন্নমূল, দলছুট, নির্বাসিত, নিঃস্ব নিমজ্জমান মানুষ তার মনোযোগ কেড়েছে সর্বাগ্রে। কেননা তিনি নিজেও ছিলেন তাদেরই একজন। দাঙ্গা, মন্বন্তর, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ, সর্বোপরি দেশভাগ তাকে বিপর্যস্ত করেছে। জীবনের কোনো স্তরেই তিনি দেশভাগের যন্ত্রণাকে উপেক্ষা করতে পারেননি। মানুষের মঙ্গল-চিন্তা ব্যতীত অন্য কোনো ভাবনা তাকে তাড়িত করেনি। সব ধরনের বৈরী পরিস্থিতিতে তিনি জীবনের জয়গান গেয়েছেন। তার চিন্তাজগতে হতাশার কোনো স্থান ছিল না। জীবনযুদ্ধে পরাজয়, ব্যর্থতা ও ধ্বংসের পরেও প্রাণ ও সভ্যতার প্রবহমানতার ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন তিনি তার সব সৃষ্টিতে। মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিক ঋত্বিক ছিলেন দলের নীতিনির্ধারকদের উপেক্ষার পাত্র। চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ব্যতীত বরাবরই উপেক্ষিত হয়েছেন বক্স অফিসে। তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র জীবদ্দশাতে মুক্তিই পায়নি। এমন হতভাগ্য চলচ্চিত্রকার বিশ্বে দ্বিতীয়টি আছে বলে মনে হয় না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সূচনাতে তিনি গভীর আবেগ নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন। অসহায় শরণার্থী এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার জন্য তিনি কলকাতার পথে পথে সাধারণ মানুষের কাছে ভিক্ষুকের মতো হাত পেতেছেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মমতা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে তিনি তৈরি করেছিলেন প্রামাণ্যচিত্র ‘দুর্বার গতি পদ্মা’।
ঋত্বিক ঘটকের আদিবাড়ি পাবনার নগরবাড়ী ঘাটের অদূরে ভারেঙ্গা গ্রামে। জন্ম ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকার ২ নম্বর ঋষিকেশ লেনের ঝুলনবাড়িতে। ৯ ভাইবোনের মধ্যে ঋত্বিক ও প্রতীতি ছিলেন সবার ছোট এবং যমজ। তাদের ডাকনাম যথাক্রমে ভবা ও ভবি। ঋত্বিকের বাবা সুরেশচন্দ্র ঘটক পেশায় ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট। চাকরিসূত্রে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালনের পর অবসর জীবনে রাজশাহী শহরের মিঞাপাড়ায় বাড়ি করেন।
সেই বাড়িটিই এখন ‘ঋত্বিক ঘটক হোমিওপ্যাথিক কলেজ’। শৈশব ও কৈশোরের একটি বড় অংশ পৈতৃক বাড়ি রাজশাহীতেই কাটিয়েছেন তিনি। এ বাড়িতে থাকার সময় রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়েছেন। রাজশাহী কলেজ ও মিঞাপাড়ার সাধারণ গ্রন্থাগার মাঠে প্রখ্যাত সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে নাট্যচর্চা করেছেন। ওই সময় ‘অভিধারা’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনাও করেছেন। ঋত্বিককে ঘিরেই তখন রাজশাহীতে সাহিত্য ও নাট্য আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
সাতচল্লিশের দেশভাগের পর তারা সপরিবারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। শিল্প-আন্দোলনে একেবারেই মাঠের লোক তিনি। চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক শুরুটা যে করেছিলেন মঞ্চ থেকেই, তা সবাই প্রায় ভুলতে বসেছেন। একাধারে নাটক লিখেছেন, অভিনয় করেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন। নাট্য সংঘের চর্চাই শানিত করে ঋত্বিকের রাজনৈতিক চেতনা। পরে গণনাট্য সংঘ ও বাম রাজনৈতিক ধারা থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেও ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ জীবন তার পিছু ছাড়েনি। একের পর এক মাধ্যম বদলেছেন, নাট্য রচনা থেকে গল্প, গল্প থেকে চলচ্চিত্র, সবসময় চেষ্টা করেছেন তার বক্তব্য বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে।
একটি সাক্ষাৎকারে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণে কীভাবে উদ্বুদ্ধ হলেন?’ উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, আমি একটি ‘জিগজ্যাগ’ পথ ধরে ফিল্মে এসে পড়েছি। বাবার ইচ্ছে পূরণ হলে একজন ‘ইনকাম-ট্যাক্স অফিসার’ হতাম। কিন্তু সেই চাকরিটি পেয়েও আমি ছেড়ে দিয়ে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিই। চাকরিতে থাকলে আজ কমিশনার বা অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল হতাম হয়তো; কিন্তু এখন আমি শুধুই একটি ‘রাস্তার কুকুর’। নিজের সম্পর্কে অবলীলায় এমন মোহহীন কথা বলেছিলেন ঋত্বিক ঘটক।
পঞ্চাশের দশকে হাজরার প্যারাডাইসে নিয়মিত আলোচনা হতো সিনেমা-নাটক নিয়ে। সেখানে আসতেন হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়, নবেন্দু ঘোষ, মৃণাল সেন, বিজন ভট্টাচার্য, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, সলিল চৌধুরী, কালী বন্দ্যোপাধ্যায়, উমানাথ ভট্টাচার্য, ঋত্বিকরা। ১৯৪৯ সালে নিজের নাটকের দল গড়েন ঋত্বিক-নাট্যচক্র। সেখানে নীলদর্পণ নাটকে অভিনয়ও করেন। ভারতীয় গণনাট্য সংঘের প্রযোজনায় ঋত্বিক পরিচালনা করেছিলেন নাটক ‘ঢেউ’ (বীরু মুখোপাধ্যায়), ‘জ্বালা’ ও ‘ম্যাকবেথ’।
ঋত্বিকের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘অযান্ত্রিক’। সুবোধ ঘোষের প্রথম ছোটগল্প ‘অযান্ত্রিক’ থেকে তিনি এটি নির্মাণ করেন। বহু প্রাচীন এক ফোর্ড গাড়ির সঙ্গে বিমলের মানবিক সম্পর্কটাই এ চলচ্চিত্রের মূল বিষয়। ঋত্বিক সিনেমাটি শেষ করেন একটি ছেলের হাতে ভেঁপু বাজানোর শব্দের সংকেতে। যন্ত্রের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত ঋত্বিক জীবনের গল্পটাই যেন বলতে চান। তার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আটটি নাগরিক, অযান্ত্রিক, বাড়ি থেকে পালিয়ে, মেঘে ঢাকা তারা, কোমলগান্ধার, সুবর্ণরেখা, তিতাস একটি নদীর নাম এবং যুক্তি, তক্কো আর গপ্পো। অসমাপ্ত ছিল চারটি পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ও তিনটি তথ্যচিত্রের কাজ।
ঋত্বিকের জন্ম ঢাকায় এবং রাজশাহীতে বেড়ে উঠলেও তিনি নিজেকে সবসময় পাবনার মানুষ হিসেবেই পরিচয় দিতেন। পাবনার স্মৃতিই তাকে সবসময় তাড়িত করেছে। ঋত্বিক ঘটকের বাবা সুরেশচন্দ্র ঘটক অত্যন্ত সুদর্শন এবং মেধাবী ছিলেন। জীবনে কোনো পরীক্ষায় তিনি দ্বিতীয় হননি। আটটি ভাষায় এমএ করেন। ঢাকায় কর্মরত অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতেন। ঢাকা থেকে বদলির সময় তিনি তার গ্রিক সাহিত্যের সব সংগ্রহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে যান। সুরেশচন্দ্র ঘটক একজন সাহিত্যপ্রেমী মানুষ ছিলেন। প্রতিদিন সকালে রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন আর মা ইন্দুবালা প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাজাতেন পিয়ানো। তাদের ঋষিকেশ লেনের ঝুলনবাড়ি ছিল গুণিজনের মিলনমেলা। সুরেশচন্দ্র ঘটকের আমন্ত্রণে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও একবার এ বাড়িতে এসেছিলেন। সেই ছবি এখন বলধা গার্ডেনে সংরক্ষিত আছে।
ঋত্বিক ঘটকের সব ভাইবোন সে সময় স্বনামে পরিচিত ছিলেন। বড় ভাই মণীশ ঘটক ছিলেন কল্লোলযুগের খ্যাতিমান কবি ও ঔপন্যাসিক। পঞ্চাশের দশকে তিনি বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে ‘যুবনাশ্ব’ নামে খ্যাত ছিলেন। মণীশ ঘটকের সুবাদে তাদের বাড়িতে ছিল শম্ভু মিত্র, বিজন ভট্টাচার্য, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের মতো কালজয়ী মানুষের আড্ডা। মণীশ ঘটকই প্রথম পাবলো নেরুদার কবিতা অনুবাদ করেন। তিনি তার ‘পটলভাঙ্গার পাঁচালি’তে প্রথমবারের মতো সমাজের অচ্ছুত, অনার্য, অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষের কথা তুলে ধরেন। পরবর্তীকালে মানিক বন্দ্যোপাধ্যয়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ এই ধারায় লেখার মাধ্যমে সুখ্যাতি অর্জন করেন। মণীশ ঘটকের মেয়ে মহাশ্বেতা দেবী ছিলেন খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক ও মানবাধিকারকর্মী। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের আদিবাসী উপজাতিসমূহের অধিকার ও সুযোগের সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি এশিয়ার নোবেলখ্যাত র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কারসহ একাধিক সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
মহাশ্বেতা দেবীর স্বামী বিজন ভট্টাচার্য ছিলেন খ্যাতিমান নাট্যব্যক্তিত্ব ও অভিনেতা। নবনাট্য আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক বিজন ভট্টাচার্য জনজীবনের সংগ্রাম ও দুঃখ-দুর্দশা, শোষণ-বঞ্চনা, প্রগতিশীল চিন্তা ও সমাজবোধ নিয়ে নাটক রচনা করেন এবং এ ক্ষেত্রে তিনি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন।
বিজন ভট্টাচার্যের জন্ম ফরিদপুর জেলার খানখানাপুরে। তিনি ভারতীয় গণনাট্য সংঘের প্রথম নাটক ‘আগুন’-এর রচয়িতা। বিজন ভট্টাচার্য বাংলা এবং হিন্দি সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি চিত্রনাট্য রচনা করেছেন। ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি থেকে পালিয়ে, মেঘে ঢাকা তারা, সুবর্ণরেখা সিনেমায় তিনি অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করেছেন।
বিজন ভট্টাচার্য এবং মহাশ্বেতা দেবীর সন্তান খ্যাতিমান কবি ও ঔপন্যাসিক নবারুণ ভট্টাচার্য। তিনি দীর্ঘদিন ‘নবান্ন’ নাট্যগোষ্ঠী পরিচালনা করেছেন। ‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’, ‘পুলিশ করে মানুষ শিকার’ ও ‘রাতের সার্কাস’ তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। নবারুণ ভট্টাচার্যের উপন্যাস হারবার্ট অবলম্বনে পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায় তার হারবার্ট চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন। আন্ত্রিক ক্যানসারের কারণে কলকাতায় ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৪ সালের ৩১ জুলাই মারা যান। ঋত্বিকের মেজভাই সুধীশ ঘটক ছিলেন ‘টেলিভিশন এক্সপার্ট’। তিনি লন্ডনে এবং জার্মানিতে সিনেমাটোগ্রাফি বিষয়ে লেখাপড়া করেন। বলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার বিমল রায় তার কাছ থেকেই চলচ্চিত্র নির্মাণের শিক্ষা নেন।
তৃতীয় ভাই লোকেশ ঘটক ভারতীয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন এবং তিনি ভারতীয় নৌবাহিনীর পত্রিকা ‘ওশেনিয়েট’-এর প্রথম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চতুর্থ ভাই আশিষ ঘটক ছিলেন একজন শিল্পপ্রাণ মানুষ। তার মেয়ে সুনেত্রা ঘটকের ছেলে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে পশ্চিম বাংলার চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা। ঋত্বিক ঘটকের বড় বোন সম্প্রীতি দেবী ছিলেন প্রবাদপ্রতিম শিল্পী ও ভাস্কর দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরীর ছাত্রী। তার আঁকা ‘রাত্রি ও ধরিত্রী’ শীর্ষক চিত্রকর্ম ১৯৩৩ সালে একাডেমি অব ফাইন আর্টসে প্রদর্শিত হয়। সম্প্রীতি দেবী এবং তার ভাই লোকেশ ঘটক যৌথভাবে ‘আর্টিস্ট’ নামে একটি পত্রিকা বের করতেন।
ঋত্বিক একই সময়ে যে প্রতীতির সঙ্গে মাতৃগর্ভে ছিলেন, সেই প্রতীতির বিয়ে হয় বিশিষ্ট ভাষাসংগ্রামী এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মন্ত্রী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের ছেলে সঞ্জীব দত্তের সঙ্গে। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রথম পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে পাকিস্তানি সেনারা তাকে ধরে নিয়ে যায় এবং হত্যা করে। প্রতীতি ও সঞ্জীবের মেয়ে আরমা দত্ত জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের একজন সদস্য ছিলেন।
ঋত্বিক ঘটক ১৯৫৫ সালের ৮ মে বিয়ে করেন। স্ত্রী সুরমা ঘটক ছিলেন স্কুলশিক্ষিকা। নবদম্পতি প্রথমে হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে থাকার পর ‘বোম্বে’র গোরেগাঁওয়ের একটি ফ্ল্যাটে এসে উঠেছিল। তাদের দুই কন্যা—সংহিতা ও শুচিস্মিতা এবং একমাত্র পুত্র ঋতবান।
ঋত্বিক তার ৫০ বছরের জীবনে আটটি পূর্ণদৈর্ঘ্য, নয়টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং ছয়টি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। লিভারের রোগে ভুগেছিলেন দীর্ঘদিন। ১৯৭৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তিনি কলকাতার শেঠ সুখলাল করোনারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় স্ত্রী সুরমা ঘটক কাছে ছিলেন না। তিনি তখন সাঁইথিয়ার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। চলচ্চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন তাকে টেলিগ্রামে জানান—Ritwik Ghatak expired.
লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক
মন্তব্য করুন