হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেছেন হাফেজ রায়হান

সহপাঠীদের সঙ্গে হাফেজ রায়হান, (সাদা পাঞ্জাবি পরা)। ছবি : কালবেলা
সহপাঠীদের সঙ্গে হাফেজ রায়হান, (সাদা পাঞ্জাবি পরা)। ছবি : কালবেলা

জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী আবু রায়হান। বয়স ১৬ বছর হলেও উচ্চতা মাত্র সাড়ে তিন ফুট। কিন্তু ছোট শরীরে আছে বিশাল মনোবল, আছে এক অনন্য আত্মবিশ্বাস। অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমে জয় করেছেন জীবনের প্রতিকূলতা। সীমাবদ্ধতাকে পরিণত করেছেন শক্তিতে। পবিত্র কোরআন হেফজ শেষ করে পড়ছেন একটি কওমি মাদ্রাসার কিতাব বিভাগে। স্বপ্ন দেখছেন একজন বড় আলেম হয়ে দেশের সেবা করার।

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের শরিয়তপুর গ্রামের কৃষক বাবুর মিয়ার সন্তান রায়হান। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ছোট থেকেই ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি তার ছিল অগাধ ভালোবাসা। চার মাস আগে প্রকল্প দারুসসুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিমখানা থেকে সম্পূর্ণ কোরআন হেফজ শেষ করে পড়ছেন কিতাব খানার চতুর্থ জামাতে।

হাফেজ আবু রায়হান বলেন, আমার বাবা কৃষিকাজ করে পরিশ্রম করে আমাকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও আমার মনে কোনো দুঃখ নেই। আল্লাহ যে আমাকে এই পথে নিয়ে আসছে এ জন্য আমি শুকরিয়া আদায় করি। আমি যেন বড় আলেম হয়ে দ্বীনের খেদমত করতে পারি এ জন্য সবার দোয়া চাই।

রায়হানের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, রায়হান অত্যন্ত মেধাবী ও অধ্যবসায়ী। শারীরিক সীমাবদ্ধতা কখনোই তাকে দুর্বল করেনি। বরং সে তার প্রতিবন্ধকতাকেই বানিয়েছে সফলতার সোপান। অন্য ছাত্রদের সঙ্গে লেখাপড়া এবং খেলাধুলায় ভালো সময় পার করে। সে একদিন অনেক বড় আলেম হয়ে দেশের সেবা করবে।

রায়হানের সহপাঠীরা বলেন, রায়হান ভাই বয়সে আমাদের অনেক বড় হলেও তার সঙ্গে আমরা দুষ্টুমি করি। তিনি কিছু মনে করে না। আমরা একসঙ্গে লেখাপড়া করি, একসঙ্গে খেলাধুলা করি। তার লেখাপড়া আমাদের থেকেও অনেক ভালো।

রায়হানের বাবা বাবুর মিয়া বলেন, আমার ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী। অনেকে অনেক কটু কথা বলেছে। আমি কৃষিকাজ করে আল্লাহর রহমতে শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় তাকে কোরআনে হাফেজ বানিয়েছি। আমার স্বপ্ন সে একদিন অনেক বড় আলেম হবে।

প্রকল্প দারুসসুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রধান মাওলানা জাকের হোসেন বলেন, রায়হান আমাদের প্রতিষ্ঠানের গর্ব। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও তার মেধাশক্তি অনেক প্রখর। সে যেভাবে পরিশ্রম করছে তা অনুকরণীয়। এ ধরনের মেধাবী ছাত্রদের পড়াশোনায় সরকারি সহায়তা পেলে তারা আরও বড় সাফল্য অর্জন করতে পারবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গোপনে বিয়ে নিয়ে মুখ খুললেন মেহরীন

আইপিএলের মাঝপথে মুস্তাফিজকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত, কারণ জানাল বিসিবি

সংবিধান পরিবর্তনকে হুমকি নয়, গণতান্ত্রিক সত্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে : প্রধান বিচারপতি

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে উদযাপিত ‘বিজয় উৎসব ২০২৫’

গুগল সার্চে আপনার নাম-নম্বর নিজেই মুছে ফেলুন সহজে

বিএনপি সরকারে এলে নারীদের ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে : সেলিমুজ্জামান 

অস্ট্রেলিয়ার দাপুটে পারফরম্যান্সে অ্যাশেজ হারের শঙ্কায় ইংল্যান্ড

মালয়েশিয়ায় ৭২ বাংলাদেশিসহ ৪০২ অভিবাসী আটক

জেআইসিতে গুম-নির্যাতন / ডিজিএফআইয়ের সাবেক ৫ মহাপরিচালকসহ ১৩ জনের বিচার শুরু

কমিটি গঠনের ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই এনসিপি নেতার পদত্যাগ

১০

সড়কের পাশে পড়ে ছিল যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ

১১

এনসিপি নেত্রী রুমীর মৃত্যুর আগে ফেসবুকে যা লিখেছিলেন

১২

বার্ড ফ্লু নিয়ে বিজ্ঞানীদের ভয়ংকর সতর্কবার্তা

১৩

দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করবে সরকার

১৪

না খেয়ে থাকলে কি ওজন কমে!

১৫

খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানালেন ডা. জাহিদ

১৬

নারীর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণের পর ধর্ষণ, প্রধান অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

১৭

চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে রোভারদের পাঁচ দিনের উৎসব

১৮

নভেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৮৩ 

১৯

বিশ্বকাপের আগে দুই প্রস্তুতি ম্যাচ বাংলাদেশের, চূড়ান্ত প্রতিপক্ষ

২০
X