সুধীন দাশ বাংলাদেশের খ্যাতিমান সংগীতজ্ঞ এবং সংগীত গবেষক। তিনি ১৯৩০ সালের ৩০ এপ্রিল কুমিল্লা শহরের তালপুকুরপাড়ের বাগিচাগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা নিশিকান্ত দাশ ও মা হেমপ্রভা দাশের তিন মেয়ে ও সাত ছেলের মধ্যে সুধীন দাশ ছিলেন সবার ছোট। বড় ভাই সংগীতশিক্ষক সুরেন দাশের কাছ থেকে তিনি সংগীতের অনুপ্রেরণা লাভ করেন। ১৯৪৮ সালে বেতারে নিয়মিতভাবে নজরুলসংগীত গাইতে শুরু করেন সুধীন দাশ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুর পর তিনি মনোনিবেশ করেন নজরুলসংগীতের শুদ্ধ স্বরলিপি প্রণয়নে। আদি গ্রামোফোন রেকর্ড থেকে সেই স্বরলিপি উদ্ধারের কাজে তাকে সহায়তা করেন স্ত্রী নীলিমা দাশ। ১৯৮২ সালের জানুয়ারি মাসে ২৫টি স্বরলিপি নিয়ে নজরুল সুরলিপির প্রথম খণ্ডটি প্রকাশ করে নজরুল একাডেমি। পরে নজরুল ইনস্টিটিউট থেকে বের হয় আরও ৩৩টি খণ্ড। লালনগীতির ক্ষেত্রেও তার অবদান সর্বজনস্বীকৃত। তিনিই প্রথম লালনগীতির স্বরলিপি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। সংগীত ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি ১৯৮৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন। সুধীন দাশের স্ত্রী নীলিমা দাশ ছিলেন তার বড় ভাই সুরেন দাশের ছাত্রী। এ সূত্রেই তাদের দুজনের পরিচয় হয় এবং ১৯৫৫ সালে তারা পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। তাদের ছেলে নিলয় দাশ এবং মেয়ে সুপর্ণা দাশ দুজনই সংগীতশিল্পী। ২০০৬ সালে একমাত্র ছেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর সুধীন দাশ ২০১৭ সালের ২৭ জুন মারা যান।