সুমন মজুমদার
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৪, ০২:১৪ এএম
আপডেট : ১৫ মে ২০২৪, ০৯:০৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

কৃষকরা কি ভালোভাবে বাঁচতে পারছেন

কৃষকরা কি ভালোভাবে বাঁচতে পারছেন

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ, ছোট থেকেই এ বাক্যগুলোর সঙ্গে আমরা বড় হতে থাকি। কিন্তু আদৌ কি এই দেশের কৃষকরা ভালোভাবে বেঁচে আছেন? যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রাপ্য সম্মান ও ন্যায্য দাম পাওয়ার কথা ছিল কৃষকের, সেই তারাই কোনো না কোনো সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে ব্যর্থ হচ্ছে ন্যায্য অধিকার আদায়ে।

আমরা প্রতিনিয়তই খবরের কাগজে অথবা টেলিভিশনে দেখতে পাই কোথাও না কোথাও কৃষক তাদের ন্যায্য মূল্য আদায়ে ব্যর্থ হচ্ছেন। অথবা কৃষক কৃষিকাজ ছেড়ে দিচ্ছেন। কখনো সুদের চাপ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আশানুরূপ ফসল না পাওয়ায় বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার মতো জঘন্য রাস্তাও। আবার অধিকাংশ সময় এ দেশের শ্রমজীবী কৃষকই এই সোনার মাটি ছেড়ে বিদেশ গিয়ে ফসল ফলাচ্ছেন অন্য কারও অধীনে। অথচ কীসের কমতি এই সোনার মাটিতে? এর কারণ খুঁজতে গেলে সবচেয়ে সামনে যেটা আসে তা হলো, কৃষক তার ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া। অথবা অর্থের অভাবে কৃষিতে না আসা।

দেশের কৃষিকে এভাবে ধ্বংস হতে দেখে এগিয়ে এলেন একদল তরুণ উদ্যোক্তা। চার বছর কৃষি সেক্টর নিয়ে গবেষণা করে ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত করলেন অ্যাগ্রিকেয়ার গ্লোবাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সাত উদ্যোক্তার হাত ধরে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটিতে এখন কাজ করছেন ৪০ জনের বেশি কর্মী। ‘কৃষির যত্নে অ্যাগ্রিকেয়ার’ স্লোগান নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

অ্যাগ্রিকেয়ার গ্লোবাল লিমিটেড বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃষকের জন্যে কাজ করে। বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে সেই অর্থ ইনভেস্ট করা হয় জেলাভিত্তিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃষকপর্যায়ে। কৃষকের সেই অর্থ বিনিয়োগ করেন তাদের কৃষিতে। অর্থ বিনিয়োগ থেকে ফসল তুলে আসা পর্যন্ত অভিজ্ঞ কৃষিবিদদের দিয়ে যাবতীয় কৃষিবিষয়ক পরামর্শ ও প্রদান করে থাকে অ্যাগ্রিকেয়ার গ্লোবাল। সবশেষে উৎপাদিত পণ্য তারা নিজেরা বিক্রি করে এবং বিক্রীত পণ্যের লভ্যাংশ থেকে কৃষকের অংশ তাদের বুঝিয়ে দিয়ে বাকি অর্থ বিনিয়োগকারীদের ফিরিয়ে দেয় অ্যাগ্রিকেয়ার।

অ্যাগ্রিকেয়ার গ্লোবালে সিরাজগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, টাঙ্গাইল, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও পাবনা জেলায় এখন তিন হাজারের বেশি কৃষক যুক্ত আছেন। প্রচলিত ফসলের বাইরে উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদনেরও ব্যবস্থা করে প্রতিষ্ঠানটি, যাতে কৃষক বেশি অর্থ আয় করতে পারেন।

অ্যাগ্রিকেয়ার গ্লোবালের সঙ্গে যুক্ত চুয়াডাঙ্গার দর্শনার চাষি মজনু মিয়া বেশ হাস্যোজ্জ্বলভাবে জানান, অ্যাগ্রিকেয়ার থেকে কৃষি পরামর্শ নিয়ে ফসলের উৎপাদন আগের তুলনায় বাড়াতে পেরেছি। এর ফলে বর্তমানে আগের তুলনায় পরিবার নিয়ে সচ্ছলভাবে চলা যাচ্ছে।

নিয়ত আলী নামের মানিকগঞ্জের কৌড়ীর এক কৃষক বলেন, ‘অ্যাগ্রিকেয়ারের কর্মীরা বিভিন্ন জমির মাটি বুঝে কোন সার কতটা দিতে হবে, তা আগেই জানিয়ে দেন। ফলে ফসল অনুযায়ী মাটিতে সঠিক মাত্রায় সার ব্যবহার করে বেশি ফসল তুলতে পারছি। এতে ফসল উৎপাদনের খরচ কমেছে, ফলে সন্তানের পড়াশোনার খরচ নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হচ্ছে না।

অ্যাগ্রিকেয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর মাহমুদ বলেন, ‘আমরা কিন্তু কৃষকদের ঋণ দিই না। আমরা মূলত কৃষি খাতে বিনিয়োগ করি। অনেক সময় আমরা নিজেরাই উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করে থাকি। এর ফলে কৃষকরা ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি মাঠ থেকে ভালো দামে ফসল বিক্রি করতে পারছেন। অ্যাগ্রিকেয়ার গ্লোবালের মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও বা মহাজনের ঋণের চক্র থেকেও বের হতে পেরেছেন কৃষকরা।

লেখক: ডিরেক্টর, অ্যাগ্রিকেয়ার গ্লোবাল

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ, তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ

আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু, কেয়ারটেকারকে ঘিরে সন্দেহ

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ

শাহজালাল বিমানবন্দরে অতিরিক্ত নিরাপত্তায় ৬ নির্দেশনা

খালসহ ১০টি জলমহাল উন্মুক্ত করলেন খুলনার জেলা প্রশাসক

৩০ আগস্ট ইতালির প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন

জুলাই শহীদদের স্মৃতি স্মরণে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন

বছর ঘুরে ফিরল সেই জুলাই 

৩৬ জুলাই বিপ্লব ও নির্মম নির্যাতনের মধ্যেও বেঁচে ফেরার গল্প

১০

৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ / এস আলম পরিবারের তিন সদস্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে দুই মামলা

১১

খুবির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকে কটাক্ষের অভিযোগ

১২

রাজশাহীতে ঐতিহাসিক ‘সান্তাল হুল’ দিবস উদযাপন

১৩

২৯৫ জন অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ী করল চসিক

১৪

যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেন ইউনূস-রুবিও

১৫

করোনার ‘ভুল রিপোর্ট দিয়ে প্রতারণা’, অতঃপর...

১৬

ইরানে একাধিক ইউরোপীয় নাগরিক গ্রেপ্তার

১৭

ঢাবি শিক্ষার্থী সৌমিকের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

১৮

ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হাবিপ্রবিসাসের অফিসরুম ভাঙচুর

১৯

গাজাবাসীর জন্য বিশেষ ভিসা চালু করতে স্টারমারকে ব্রিটিশ এমপিদের চিঠি

২০
X