

বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে আবারও গুলি নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তীর আব্দুর রহমানের দিকে; যাকে অতীতে একই অভিযোগে শুটিং অঙ্গন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অভিযুক্ত আব্দুর রহমান অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন—আমি অন্যায় কিছু করিনি।
অভিযোগ তুলেছেন পিস্তল শুটার মির্জা আবিদুর রহমান। তার দাবি, শুটিং রেঞ্জে অনুশীলনের সময় ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুর রহমান আমাকে পাঁচটি গুলি দিয়েছেন। কিন্তু জোরপূর্বক এমন পত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন, যেখানে উল্লেখ করা আছে আমি ৫০টি গুলি বুঝে নিয়েছি।
‘শুটিং রেঞ্জে ২৫ মিটার পিস্তলের অনুশীলনের জন্য আমাকে পয়েন্ট ২২ বোর গুলি দেওয়া হয়েছে পাঁচটি। কিন্তু ক্যাম্প কমান্ডার আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া কাগজে উল্লেখ করেছেন ৫০ গুলি নিয়েছি। বাকি গুলিগুলো গেল কোথায়—তার হিসাব কি শুটিং ফেডারেশন দিতে পারবে?’—বলছিলেন শুটার মির্জা আবিদুর রহমান।
মির্জা আবিদুর রহমানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কালবেলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল অভিযুক্তের সঙ্গে। জাতীয় দলের ক্যাম্প কমান্ডারের দায়িত্বে থাকা আব্দুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা সঠিক নয়। যিনি অভিযোগ করছেন, তাকে ১০টি গুলি দেওয়া হয়েছিল, পাঁচটি নয়। কিন্তু তিনি নিজের ক্লাব থেকে আনা গুলি দিয়ে অনুশীলন করতে চাচ্ছিলেন। আমি তাকে বলেছি, ফেডারেশনকে তো হিসাব দিতে হবে—বরাদ্দের বাইরে গুলির এলো কোথা থেকে। এ কারণে তার কাছ থেকে বাকি ৪০টি গুলির জন্য একটা লিখিত নিয়েছি।’
২০১৯ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে বাংলাদেশ দলের জন্য শুটিং ফেডারেশন থেকে প্রক্রিয়া মেনে ১৫ হাজার পয়েন্ট ২২ বোর গুলি অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। অস্ত্রাগার থেকে অনুমোদিত গুলি তুলেও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নেপালে দলের সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল ১০ হাজার গুলি। বাকি ৫ হাজার গুলি সরিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে ফেডারেশনের তদন্তে বেরিয়ে আসে, ‘অসৎ উদ্দেশ্যে ওই গুলি সরিয়ে রাখা হয়েছিল’। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পর বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। তাদের অন্যতম এই আব্দুর রহমান।
শুটিং ঘনিষ্ঠ সূত্র কালবেলাকে বলেছে, ‘বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে সবকিছু ঠিকমতো মনেও রাখতে পারেন না আব্দুর রহমান। তারপরও ক্যাম্প কমান্ডারের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাকে। একটা চক্র শুটিং ফেডারেশনের গুলি নিয়ে নয়ছয় করতেই এমনটা করেছে।’
বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে গুলি নিয়ে নয়ছয় করার ঘটনা অবশ্য পুরোনো। অতীতে বিভিন্ন সময় এ নিয়ে শিরোনামে এসেছে দেশের সম্ভাবনাময় এ খেলাটি। এমনকি জুলাই বিপ্লবের সময় আন্দেলনরত ছাত্রদের দমাতে শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের গোলাবারুদ ব্যবহৃত হয়েছে—গুরুতর অভিযোগও উঠেছে।
মন্তব্য করুন