জহিরুল হক বাবু, বুড়িচং (কুমিল্লা)
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

২০ বছর ধরে অকেজো বুড়িচংয়ের ‘অদ্ভুত সেতু’

চলাচলে দুর্ভোগ
ঙ্গুর নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি প্রায় দুই দশক ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী অবস্থায় পড়ে আছে। ছবি : কালবেলা
ঙ্গুর নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি প্রায় দুই দশক ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী অবস্থায় পড়ে আছে। ছবি : কালবেলা

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল গ্রামে ঘুঙ্গুর নদীর ওপর নির্মিত একটি সেতু প্রায় দুই দশক ব্যবহারের অনুপযোগী অবস্থায় পড়ে আছে। ২০০৫ সালে তৎকালীন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন স্বপন প্রভাব খাটিয়ে তার বাড়ির পাশেই সেতুটি নির্মাণ করেন। কিন্তু নির্মাণের পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো যানবাহন এই সেতু দিয়ে চলাচল করেনি।

ফলে সরকারি প্রকল্পের বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও গ্রামীণ মানুষের কোনো উপকারে আসেনি সেতুটি। বরং সেতুটি এখন এলাকার মানুষের জন্য ভোগান্তি ও ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাস্তা থেকে প্রায় ১৫ ফুট উঁচুতে নির্মিত সেতুটির এক পাশে সিঁড়ি থাকলেও অন্য প্রান্তে ওঠানামার কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সেতুটি ব্যবহার করতে হলে স্থানীয়দের বস্তা বা অন্যান্য অস্থায়ী উপায় অবলম্বন করতে হয়। এজন্য স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছেন ‘অদ্ভুত সেতু’।

সেতুটি নির্মাণের সময় বলা হয়েছিল, এটি স্থানীয়দের নদী পারাপারে বড় সহায়ক হবে। কিন্তু ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও সেটি অকেজোই রয়ে গেছে। অকার্যকর এ সেতু নিয়ে স্থানীয়রা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় কৃষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম এই সেতু হলে বাজারে যাতায়াত সহজ হবে। ফসল মাঠ থেকে সরাসরি গাড়িতে তোলা যাবে; কিন্তু ২০ বছরেও কোনো গাড়ি চলল না। আমাদের কষ্ট যেমন ছিল, তেমনি রয়ে গেছে।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হানিফ জানান, ‘এলাকায় শাকসবজি ও ফসল বাজারে নিতে অনেকটা ঘুরে যেতে হয়। এতে করে অনেক ঝামেলা হয়। সেতুটা যদি সংস্কার করে দুই পাশে সংযোগ সড়ক তৈরি করা যায়, তাহলে পুরো গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো সমীক্ষা বা সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। যার ফলে ২০ বছরেও এটির কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। বরং বর্তমানে এটি এখন অপচয় হওয়া সরকারি অর্থের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এখনো যদি দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যায়, তাহলে সেতুটি শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের জন্য বড় সুফল বয়ে আনতে পারে। এলাকাবাসীর দাবি, সরকারের উচিত দ্রুত সেতুটি সংস্কার ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া।

বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী আলিফ আহমেদ অক্ষর জানান, সেতুটি নির্মাণের সময় স্থানীয়রা সংযোগ সড়কের জায়গা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে জায়গা না দেওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে স্থানীয়রা যদি জায়গা দেন, তাহলে নতুন করে সংযোগ সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে সেতুটি চালু করা সম্ভব। এতে এলাকাবাসীর উপকার হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

১৮ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

বিএনপিতে যোগ দিলেন কৃষক লীগের সাবেক ২ নেতা

‘মোটরসাইকেলটিকে ১শ মিটার টেনে নিয়ে যায় ঘাতক বাস’

তামাক চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

মধ্যরাতে ঝরল ২ প্রাণ

সীমান্তে মর্টারশেলের শব্দ, আতঙ্কে এলাকাবাসী

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ

নৌবাহিনী থামাল মিয়ানমারে সিমেন্ট পাচার

আবাসিক হোটেল থেকে নারী পর্যটকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ফয়সালের জামিন বিতর্ক নিয়ে আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস

১০

‘কোনো এক মিরাকেলের মধ্যে দিয়ে ফিরে আসেন ব্রাদার’

১১

মানবপাচার মোকাবিলায় ভুক্তভোগী কেন্দ্রিক আইনজীবী গড়ে তোলার আহ্বান

১২

লস অ্যাঞ্জেলেস কনস্যুলেটে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা

১৩

সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

১৪

রিজার্ভ বেড়ে ৩২.৪৮ বিলিয়ন ডলার

১৫

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা গড়ার অঙ্গীকার শেখ আব্দুল্লাহর

১৬

হাদির বিষয়ে ড. ইউনূসকে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন

১৭

অবশেষে ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার

১৮

দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

১৯

পে স্কেল নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে যে সিদ্ধান্ত নিল কমিশন

২০
X