অধ্যাপক ডা. মো. মাকসুদুর রসুল
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
স্বাস্থ্য পরামর্শ

কিডনি প্রতিস্থাপন: অপারেশন পরবর্তী রোগীর যত্ন

কিডনি প্রতিস্থাপন: অপারেশন পরবর্তী রোগীর যত্ন

বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (সিকেডি) বা এন্ডস্টেজ রেনাল ডিজিজে (ইএসআরডি) আক্রান্ত হচ্ছেন। এদের অনেকে ডায়ালাইসিস করে জীবন চালালেও দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে কার্যকর ও তুলনামূলক উন্নত জীবনযাপনের উপায় হলো কিডনি প্রতিস্থাপন।

কারা দাতা, কারা গ্রহীতা: রক্তের কোন গ্রুপের গ্রহীতা কার কাছ থেকে কিডনি নিতে পারে, তা জানা জরুরি। যাদের রক্তের গ্রুপ ‘ও’, তারা শুধু ‘ও’ গ্রুপ থেকে রক্ত নিতে পারবে। ‘এ’ গ্রুপের গ্রহীতা ‘এ’ এবং ‘ও’ দুই গ্রুপ থেকে নিতে পারে। ‘এবি’ গ্রুপের গ্রহীতা ‘এবি’, ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘ও’ থেকে কিডনি নিতে পারবে। মনে রাখতে হবে, ‘ও’ গ্রুপকে বলা হয় সর্বজনীন দাতা এবং ‘এবি’ গ্রুপ হলো সর্বজনীন গ্রহীতা। আমাদের শরীরে এইচএলএ নামক প্রোটিন থাকে, যা ইমিউন সিস্টেমকে বলে দেয়, কোনটি নিজের অঙ্গ আর কোনটি বাইরের। দাতা ও গ্রহীতার এইচএলএ যত বেশি মিলে যায়, প্রতিস্থাপনের পর কিডনি তত দীর্ঘদিন সচল থাকে।

ক্রস-ম্যাচ: গ্রহীতার শরীরে দাতার অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে কোনো অ্যান্টিবডি আছে কি না, তা দেখা হয়। যদি ক্রস-ম্যাচ পজিটিভ হয়, তাহলে সেই দাতার কিডনি গ্রহণ করা সম্ভব নয়। পিআরএ (প্যানেল রিঅ্যাক্টিভ অ্যান্টিবডি) পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীর শরীরে আগে থেকেই বিভিন্ন অ্যান্টিবডি আছে কি না, তা বোঝা যায়। যাদের পিআরএ বেশি, তাদের ক্ষেত্রে উপযুক্ত দাতা খুঁজে পাওয়া কঠিন।

অপারেশন প্রক্রিয়া: কিডনি প্রতিস্থাপন একটি বিশেষায়িত সার্জারি। নতুন কিডনি সাধারণত রোগীর নিচের পেটের ডান পাশে বসানো হয়। দাতার কিডনির ধমনি ও শিরা যথাক্রমে রোগীর ধমনি ও শিরার সঙ্গে যুক্ত করা হয় এবং ইউরেটার মূত্রথলির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া রোগীর নিজস্ব অসুস্থ কিডনি ফেলা হয় না। প্রতিস্থাপনে সাধারণত ৩৪ ঘণ্টা সময় লাগে।

অপারেশন-পরবর্তী গ্রহীতার চিকিৎসা ও যত্ন: কিডনি প্রতিস্থাপনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন-পরবর্তী চিকিৎসা। ওষুধ (ইমিউনোসাপ্রেসিভ থেরাপি) আজীবন খেতে হবে, যাতে শরীর নতুন কিডনিকে ‘বহিরাগত’ ভেবে বাতিল করে না দেয়। এসব ওষুধের ডোজ নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ঠিক করা হয়।

সংক্রমণ প্রতিরোধ: যেহেতু ইমিউন সিস্টেম কমিয়ে দেওয়া হয়, তাই সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। রোগীকে শুরুতে মাস্ক ব্যবহার, ভিড় এড়িয়ে চলা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। নিয়মিত টিকা গ্রহণও প্রয়োজন।

নিয়মিত ফলোআপ: প্রথম তিন মাস ঘন ঘন রক্ত পরীক্ষা, পরবর্তী সময়ে মাসে একবার, তারপর ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর। রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ জরুরি।

অধ্যাপক ডা. মো. মাকসুদুর রসুল

মেডিসিন ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ

চেম্বার: আলোক হাসপাতাল, মিরপুর-৬

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ধানের শীষের জাগরণে ঐক্যবদ্ধ গণমিছিল

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল পুলিশ সদস্যসহ ২ জনের

রাজশাহীতে ৬০ হারানো ফোন ফিরিয়ে দিল পুলিশ

বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের ৪ নেতা বহিষ্কার

চবিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘সামুদ্রিক মৎস্য ও নীল উদ্ভাবন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন

অবৈধ ফোন বেচাকেনা নিয়ে বিটিআরসির নির্দেশ

সংরক্ষিত বনের গাছ বিক্রির অভিযোগ বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

আইপিএলে দল পেলেন না বাংলাদেশের কেউই

‘১০ লাখ মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর একই’

প্রতিবন্ধী নারীর ভাতার টাকা যায় আ.লীগ নেতার পকেটে

১০

নির্বাচন করবেন কি না জানালেন প্রেস সচিব

১১

আবারও পেছাল বিপিএল

১২

যে গ্রামে শত বছর ধরে টিকে আছে শাঁখারি শিল্প

১৩

শয়তানের নিশ্বাস ছড়িয়ে ধর্ষণ

১৪

স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ইয়াবা পাচারকালে ধরা

১৫

মগবাজারে বহুতল ভবনে আগুন

১৬

ফজলুর রহমানের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

১৭

কয়েক কোটি টাকা নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা উধাও

১৮

হংকংয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৭৫

১৯

হৃদয়ের একার লড়াইয়ের পরও বাংলাদেশের বড় পরাজয়

২০
X