ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, চট্টগ্রামজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচনের ওপর অনেকটা নির্ভর করছে আগামীতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের রাজনীতি কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ তার অনুসারী প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের সরাসরি প্রভাব না থাকার কথা বলা হলেও গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বিশেষ সভা ডেকে তৌহিদুল হক চৌধুরীকে সমর্থন দিয়ে তাকে বিজয়ী করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এর আগে এখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরীকে সমর্থন দিয়েছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর অনুসারীরা। এখানে তিনজন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও একজন অন্যজনকে সমর্থন দেওয়ায় মূলত এখন দুজন প্রার্থীই মাঠে লড়বেন। একজন হচ্ছেন কাজী মোজাম্মেল হক, অন্যজন তৌহিদুল হক চৌধুরী। তবে ক্লিন ইমেজের কাজি মোজাম্মেল ভোটার ও সাধারণ মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। অন্যদিকে তৌহিদুল হকের হলফনামায় তথ্য গোপনসহ তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকায় ভোটাররা এবার তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া হঠাৎ সমর্থন বদল প্রসঙ্গে স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ চান যে কোনোভাবে কর্তৃত্ব ধরে রাখতে। এখানে অপর প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। ‘ক্লিন’ ইমেজের এই প্রার্থী সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমর্থনের পাশাপাশি অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারীরা তার পক্ষে কাজ করছেন।
নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় দলবদ্ধ নারীদের প্রচার এবার চোখে পড়ার মতো। কাজী মোজাম্মেল হকের পক্ষে বিপুল সংখ্যক নারী কর্মীর প্রচার নির্বাচনে ভিন্ন আমেজ এনে দিয়েছে। এলাকাবাসী জানান, অতীতের নির্বাচনগুলোতেও প্রচারে নারী কর্মীরা মাঠে ছিলেন; কিন্তু এবারের মতো এত ব্যাপক সংখ্যায় নয়। নারী কর্মীরা দল বেঁধে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন। এ বিষয়ে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, উপজেলায় পুরুষ ভোটারের প্রায় সমপরিমাণ নারী ভোটার রয়েছেন। অনেক সময় বাড়ি বাড়ি ভোট চাইতে গেলে গ্রামের নারীরা পর্দার আড়ালে থাকেন। এ ক্ষেত্রে আমার নারী কর্মীরা নমনীয়তার সঙ্গে তাদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, থানার ওসি সোহেল আহমদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে তাকে নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা ও আনোয়ারা থেকে প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর চিঠি দিয়েছেন এক প্রার্থী।