প্রেমে বাধা দেওয়ায় ঢাকার আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যার শিকার হন। ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। বিচার নিয়ে সব মহলে আলোচনা হয়। তবে ঘটনার দুই বছর পার হলেও অভিযুক্ত জিতু ও তার বাবা উজ্জ্বলের বিচার শুরু হয়নি। বিচার নিয়ে বাদীও অনাগ্রহী।
এ বিষয়ে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আনোয়ার সরদার কালবেলাকে বলেন, জিতুর বয়স জটিলতায় আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে গেছে। যে কারণে অভিযোগ গঠন শুনানি পিছিয়েছে। আগামী ধার্য তারিখে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হবে। পরে সাক্ষীদের হাজির করে মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করা হবে।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। গত ২৬ জুন এ মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ধার্য ছিল। তবে আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করে। পরে আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন। এ মামলায় জিতুর বাবা উজ্জ্বল হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকলেও জিতু কারাগারে রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার। তিনি কলেজের শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল আশরাফুল ইসলাম জিতু। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মসহ ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত সে। এসবে বাধা দেওয়ায় শিক্ষক উৎপলের ওপর ক্ষিপ্ত হয় জিতু। ২০২২ সালের ২৫ জুন দুপুরে কলেজে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলাকালে জিতু উৎপল কুমারকে হত্যার উদ্দেশ্যে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে মাথায় ও কপালে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ ছাড়া জিতু স্টাম্পের সুঁচালো অংশ দিয়ে উৎপলের ডান ও বাম পাশের পেটে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এতে পেটের নাড়িভুঁড়িসহ বিভিন্ন গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উৎপলকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ২৭ জুন উৎপল মারা যান।
এ ঘটনায় উৎপলের ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক মো. এমদাদুল হক জিতু ও তার বাবা উজ্জ্বলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী আলমগীর হোসেন বলেন, এটা কোনো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নয়। ভুলবশত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। পুলিশ অতিউৎসাহী হয়ে জিতুর বাবা উজ্জ্বলকেও আসামি করেছে। তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আসামিরা খালাস পাবেন।