শাহে এলিদ মাইনুল আমিন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। প্রশাসন ক্যাডারের এই উপসচিব সচিবালয়ের নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বে রয়েছেন। জননিরাপত্তা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ শাখা এটি। এলিদের মা বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাফিয়া খাতুন। মায়ের প্রভাব খাটিয়েই তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ শাখায় পদায়ন নিয়েছিলেন। অথচ শেখ হাসিনার পতনের পর এলিদ এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। সচিবালয়ের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব এখনো তার কাঁধে। এ নিয়ে প্রশাসনে সমালোচনা চলছে।
জানা গেছে, শাহে এলিদ মাইনুল আমিন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা। মায়ের রাজনৈতিক প্রভাবের দৌড়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদে পদায়ন নিয়েছিলেন। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখায় ছিলেন এলিদ। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবালয় নিরাপত্তা শাখায় যোগদান করেন তিনি। এ শাখায় যোগদানের পর থেকে ক্ষমতার দাপট দেখাতে থাকেন এ কর্মকর্তা। সেবাপ্রত্যাশী মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, এলিদ নিজেকে অনেক বড় কর্মকর্তা মনে করেন। কাউকে সম্মান দেখান না। সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গেও ভালো আচরণ করেন না। তার ব্যক্তিগত ফোন নম্বরও কাউকে দেন না। এমনকি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে তার যে মোবাইল নম্বর দেওয়া, সেটিও বন্ধ থাকে। একজন কর্মকর্তা ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বর বন্ধ রাখতে পারেন না, এটি অন্যায়। কারণ মানুষ নানা কাজেই কর্মকর্তাদের ফোন করে থাকে। অথচ এলিদ অচল একটি নম্বর ওয়েবসাইটে দিয়ে রেখেছেন। অহমিকা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা থেকেই তিনি এমনটি করেন।
আরও একজন কর্মকর্তা বলেন, তার মা সাফিয়া খাতুন ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। এর আগে সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এলিদ তার মায়ের রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে চাকরি জীবনে সবসময় সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন। এখনো তিনি জননিরাপত্তা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ শাখায় বসে আছেন। অথচ ওই শাখার কাজ সচিবালয়ের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব। আওয়ামী সুবিধাভোগী একজন কর্মকর্তাকে এমন গুরুত্বপূর্ণ শাখায় এখনো বহাল রাখা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। তাকে দ্রুত বদলি করা জরুরি বলেও মনে করেন এই কর্মকর্তা। না হয় সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সরকারবিরোধী কোনো পক্ষকে কাজেও লাগাতে পারেন। কারণ আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তা ক্ষমতা হারিয়ে এখন ষড়যন্ত্রের পথেই আছেন।
জননিরাপত্তা বিভাগের ওয়েবসাইটে দেওয়া মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় শাহে এলিদ মাইনুল আমিনের বক্তব্য নিতে পারেনি কালবেলা।