বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার আগের দুবারের মতো নির্বাচন এবার করতে পারবে না। ভোটের আগেই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে, এটি এখন বিরোধী সব দলই চাইছে। জনগণ ও সব রাজনৈতিক দল আজকে এক হয়ে গেছে—যারা যুগপৎ আন্দোলন করছে তারা, যারা করছে না তারাও। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এখনই পেটাতে শুরু করেছে, গুলি করতে শুরু করেছে, এখনই রাতে বাড়িতে থাকতে দেয় না। মিথ্যা মামলার ওয়ারেন্ট নিয়ে হাজির হয়। হাইকোর্টে জামিনের জন্য গেছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ, বাসায় যেতে পারেননি, রাস্তার মধ্যে থেকে তুলে নিয়ে গেছে। সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগের ভাইদের বলব—সংবিধান অনুযায়ী আপনাদের যে সুনির্দিষ্ট কোড ও দায়িত্ব আছে, সেই কাজ করবেন। অন্যায়ের কাছে মাথানত করবেন না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন, ডিসি-এসপি পরিবর্তন, পোস্টিং, প্রশাসনের হাজার হাজার লোককে পদোন্নতি। এটির উদ্দেশ্য প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করে আবার নির্বাচনী বৈতরণী পার হবে। এবার আর এটি হবে না। এবার বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের পর কারাগারেও নির্যাতন চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করে ফেলেছে। এখন প্রতিদিন গায়েবি মামলা দিচ্ছে, জামিন দেওয়া হয় না। কোর্টে নিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কারাগারে। কারাগারে আবার আরেক নির্যাতন শুরু হয়েছে। আমাদের ছেলেদের কারাগারে এখন ২৪ ঘণ্টা লকআপে রাখে। এটি কোনো সভ্য ও স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে চলতে পারে না। তিনি বলেন, আমাদের এক ছাত্রনেতাকে দেখলাম তার সারা শরীরে ৪৮টি গুলির ক্ষতচিহ্ন। এক যুবনেতাকে হাসপাতালে দেখলাম তার ডান পা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে একেবারে পঙ্গু করে দিয়েছে। এর নাম গণতন্ত্র!
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ‘ফরমায়েশি’ রায়ের প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, জাকির হোসেন, ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. রফিকুল কবির লাবু, ডা. রফিকুল ইসলাম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, আইনজীবী আবেদ রাজা, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমদ, শহীদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মন্তব্য করুন