সরস্বতী পূজা উপলক্ষে গতকাল সোমবার বন্ধ ছিল সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেক শিক্ষার্থীই গতকাল হাজির হয়েছিল বইমেলায়। নতুন নতুন বই আর সঙ্গে বিপুলসংখ্যক পাঠক-দর্শনার্থীর সমাগম—সব মিলিয়ে গতকাল মেলা ছিল এককথায় জমজমাট। প্রকাশক ও বিক্রেতারা জানান, সরস্বতী পূজা উপলক্ষে প্রথম দুদিনের তুলনায় গতকাল মেলার তৃতীয় দিনে পাঠক-দর্শনার্থীর ভিড় যেমন বেশি ছিল, তেমনি বিক্রিও গত দুদিনের চেয়ে ভালো হয়েছে।
মেলা ঘুরে গতকাল আগত পাঠক-দর্শনার্থীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। অনেক তরুণীকেই হলুদ শাড়িতে মেলায় ঘুরতে দেখা যায়। সঙ্গে গলায় মানানসই সোনালি বা মুক্তার মালা, হাতে চুড়ি আর কপালে বড় লাল টিপ। অনেককে আবার মাথায় ফুলের টোপরও লাগাতে দেখা গেছে। তরুণদের সাজেও ছিল উৎসবের ছোঁয়া। অনেককে হলুদ বা সাদা পাঞ্জাবির সঙ্গে জিন্স বা চুরিদার পায়জামা পরতে দেখা গেছে।
সরস্বতী পূজা থাকায় সারাদিন পূজা-অর্চনা সেরে বিকেলে ছোটবোনদের নিয়ে মেলায় এসেছিলেন শিক্ষার্থী রত্না ভৌমিক। তিনি জানান, সরস্বতী পূজার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বোনদের মেলায় নিয়ে এসেছেন তিনি। এর আগে পূজা শেষ করে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরেছেন। এরপর বিকেলে বোনদের নিয়ে মেলায় এসেছেন বই কিনতে।
মোহাম্মদপুর থেকে মেলায় এসেছিলেন শিক্ষার্থী জোনায়েদ হোসেন জুন। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘মোহাম্মদপুর একটু দূরে হওয়ায় মেলায় কম আসা হয়। তবে আজ কলেজ ছুটি থাকায় মেলায় ঘুরতে চলে এসেছি। নতুন বই দেখছি। পছন্দ হলেই কিনব।’
মেলায় সপরিবারে এসেছিলেন ব্যাংকার মাছুম বিল্লাহ। মেলায় এসে খুব ভালো বোধ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই বইমেলায় আসি। তবে মেলার শেষের দিকে বেশি আসা হয়। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় এসেছি। বাচ্চাদের বই বেশি কিনেছি। মেলার সম্প্রসারণ হওয়ায় এবার জায়গা বেড়েছে। তাই ঘুরে ঘুরে বই দেখতে ও কিনতে পারছি।’
অ্যাডর্ন প্রকাশনীর প্রকাশক জোহরা বেগম জানান, গত দুদিনের তুলনায় মেলায় সোমবার পাঠকের সংখ্যা বেশি। বিক্রিও গত দুদিনের তুলনায় হয়েছে ভালো। তিনি আশা করেন, সামনের দিনগুলোতে দর্শনার্থীর তুলনায় পাঠকের সংখ্যা বাড়বে।
রাবেয়া বুক হাউসে বিক্রেতা ঊর্মিলা ঊর্মি বলেন, ‘গত দুদিনের তুলনায় আজ (সোমবার) মেলায় পাঠক-দর্শনার্থীর উপস্থিতি অনেক বেশি। সরস্বতী পূজার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও অনেক বেশি। বিক্রিও অন্য দিনগুলোর তুলনায় বেশ ভালো।’
তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রেতা জামিউল কাউসার কালবেলাকে বলেন, ‘অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ (সোমবার) মেলায় দর্শনার্থীদের আগমন অনেক ভালো। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের ভিড়ই আজ মেলায় বেশি ছিল। তবে সাধারণ পাঠকদের উপস্থিতিও আশাব্যঞ্জক। বিক্রিও অন্যদিনের তুলনায় ভালো হচ্ছে।’