ঝালকাঠি-১ (কাঁঠালিয়া-রাজাপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমর বীরউত্তম গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় কাঁঠালিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করেন। এতে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী যোগ দেন। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শাহজাহান কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজী ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন কবির হাওলাদারকে সঙ্গে নিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হন। সেখানে তিনি তাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশে বন্দুক হাতে আব্দুল জলিল মিয়াজীকে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে জানতে তার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। জাকির বলেন, বন্দুকটি আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহানের নামে লাইসেন্সকৃত। তিনি বক্তব্য দেওয়ার সময় পাশে বসে থাকা জলিলের কাছে তা রাখেন। নতুন দলে যোগদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি যে দলই করি না কেন, শাহজাহানকে পছন্দ করি। ব্যক্তিগতভাবে আমি তার নির্বাচন করব। তাই সমাবেশে গিয়েছি।
সমাবেশে শাহজাহান বলেন, কাঁঠালিয়া আওয়ামী লীগে কোনো গ্রুপিং থাকতে পারবে না। এখানে তরুণ লীগ, কিবরিয়া লীগ, বুড়া লীগ ও বাচ্চা লীগ থাকতে পারবে না। এখানে থাকবে শুধু শেখ হাসিনা গ্রুপ। আমি এবং বিএনপির এসব লোকজন আপনাদের মেহমান। আপনারা আমাদের বরণ করে নেন। আমরা শিক্ষিত লোক, আমাদের সম্মান করলে আপনারাও সম্মান পাবেন।
সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গোলাম কিবরিয়া সিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল বসার বাদশা, শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাহমুদ হোসেন রিপন, আওরা বুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান নকীবসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে গোলাম কিবরিয়া বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, তাকে নিয়ে মাঠে থাকব আমরা। শাহজাহান আমাদের ডেকেছেন। আমরা তার পরামর্শ অনুযায়ী সভা করেছি। বিএনপির কেউ যদি তার নির্বাচন করে, তাতে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের অনুমতি না নিয়েই শাহজাহান এ সমাবেশ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নেছার উদ্দিন বলেন, আমরা শুনেছি তিনি সমাবেশ করেছেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সমাবেশে বন্দুকের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হলে কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শাহজাহান গত ২৯ নভেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান। ৩০ নভেম্বর তিনি গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ ঘটনায় তাকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত রোববার ঝালকাঠির রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
এদিকে এ ঘটনায় শাহজাহানের কাছে কৈফিয়ত তলব করেছেন নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির প্রধান ও ঝালকাঠি সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক পল্লবেশ কুমার কুণ্ডু। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।