বহুল আলোচিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপপ্রয়োগের ঘটনা বেড়েছে বলে জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। গত ৬ মাসে এ আইনে দায়ের ২৪টি মামলায় আসামির সংখ্যা ৬০। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার হয়েছেন ২৬ জন। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো আসকের এক বিবৃতিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত প্রতিবেদনে (জানুয়ারি-জুন ২০২৩) এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ছয় মাসে যৌন হয়রানি-কেন্দ্রিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১৫৪ নারী-পুরুষ। যাদের মধ্যে ৭৯ নারী ও ৭৫ পুরুষ। এ সময়ে দেশের প্রায় সবকটি জেলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সর্বাধিক ঘটেছে ঢাকায়, ২৭টি। এর পরই রয়েছে নারায়ণগঞ্জে ২২, চট্টগ্রামে ১৬ এবং বগুড়ায় ১৫টি। এ সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৮০৪টি শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। ১১৯ সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে চারজন এবং গুলিতে দুজনের মৃত্যু হয়। এ সময়ে র্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা ছিল বিদ্যমান আইন ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করার একটি অন্যতম উদাহরণ। সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ছয়জনকে তুলে নেওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে পরবর্তী সময় ছয়জনকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে এ সময় কমপক্ষে ১০ জনসহ ১১ বাংলাদেশির মৃত্যু ঘটেছে এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন। সর্বাধিক লালমনিরহাটে পাঁচজন নিহত ও চার আহত হয়েছেন।
এ সময়কালে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় বাবা-মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুর ও গাজীপুর জেলায়। স্থানীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১৭৯টি। এতে নিহত হয়েছেন ১৪ জন এবং আহত হয়েছেন ২ হাজার ৪২২ জন। দেশে গণপিটুনিতে নিহত হন ২৪ জন।
পাঁচটি ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের তিনটি বাড়িঘর ও একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ১৫টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে কমপক্ষে ১০৩টি বাড়ির ২৫৯টি ঘর ও ৩৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
মন্তব্য করুন