আমিরুল ইসলাম রিংকু, ঈশ্বরদী
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ০২:২১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের বাইরেও নুরুন্নাহারের সুনাম

দেশের বাইরেও নুরুন্নাহারের সুনাম

ঈশ্বরদীর নুরুন্নাহার বেগমের সুনাম দেশ ছেড়ে দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। চলতি বছরের ১১ জুন অষ্ট্রেলিয়ার সিডনিতে কৃষিবিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সভায় যোগ দিয়েছেন। কৃষিতে জাতীয় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতাসহ একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন। এরই মধ্যে অর্জন করেছেন এআইপি মর্যাদা। হয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণী বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের টেকনিক্যাল বোর্ডের সদস্য। এভাবেই কৃষি উন্নয়নে নানামুখী অবদান রাখছেন ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের নুরুন্নাহার বেগম। স্বামী রবিউল ইসলাম বিশ্বাস আর চার ছেলে নিয়ে তার সংসার। নুরুন্নাহার চার দেয়ালের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি। ২০০২ সালে পাশের বাড়িতে টেলিভিশন দেখে বাড়ির আঙিনায় মাত্র ১০ কাঠা জমিতে বেগুন চাষ শুরু করেন। এখন ১২০ বিঘা জমির খামার রয়েছে। এরই মধ্যে ৪০ বিঘা জমির মালিক হয়েছেন। লিজ নিয়ে চাষাবাদ করছেন ৮০ বিঘা জমিতে।

মেধা, সাহস আর পরিশ্রমের ফলে নুরুন্নাহার কৃষিতে বিশেষ ব্যক্তিত্ব, সফল উদ্যোক্তা এবং একজন সমাজ উন্নয়ন কর্মী। নিবিড় সবজি চাষ, ফলমূল, মাছ চাষ, পোলট্রি, ডেইরি ও গাভির খামার করে এলাকার নারীদের কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন। জৈব ও ভারমি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে তিনি সফল হয়েছেন। জৈব সার স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি দেশের প্রতিষ্ঠিত এসিআই কোম্পানিতে সরবরাহ করছেন।

সফলতার স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন ২০১০ সালে সিটি গ্রুপ জাতীয় পুরস্কার, ২০১২ সালে দেশের সেরা নারী কৃষক হিসেবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি ব্রোঞ্জ পদক, ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি স্বর্ণপদক এবং ২০১৭ সালে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও মাছরাঙা অ্যাওয়ার্ড। ২০২১ সালে বঙ্গমাতা স্বর্ণপদক অর্জনের পাশাপাশি কৃষিতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অর্থাৎ ‘এআইপি’ মর্যাদা পেয়েছেন। জয়বাংলা নারী উন্নয়ন মহিলা সমবায় সমিতি ও এনসিডিপি গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সভানেত্রী নারী উদ্যোক্তা নুরুন্নাহার তিন সহস্রাধিক নারীকে সংগঠিত করে তাদের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

নুরুন্নাহার তার সফলতার কথা বলতে গিয়ে বলেন, স্বামী কাজে বেরিয়ে গেলে অলসভাবে বসে থাকতে ভালো লাগত না। ২০০২ সালে টেলিভিশনে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠান দেখি। ইচ্ছে জাগে বসতবাড়ির আশপাশে শাকসবজি ও ফলমূলের বাগান গড়ে তোলার। লালশাক, পুঁইশাক, বেগুন, গোল আলু, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচামরিচ বাড়ির আঙিনায় চাষ করি। এ আবাদ হতে সারা বছরের সবজির চাহিদা মিটেও বাড়তি আয় হয়। প্রথম প্রথম স্বামী আমার কর্মকাণ্ডে কিছুটা বিরক্ত হলেও সংসার চালানোর বোঝা কমে যাওয়ায় আর কোনো আপত্তি করেননি।

তিনি আরও বলেন, খামারে গরু, মুরগি, মাছের চাষ ছাড়াও ড্রাগন, পেয়ারা, লিচু, পেঁপে, কলা, লাউ, চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, পটোল, বেগুন, মটর, গম, আলু এবং মসুর চাষ করি। ডেইরিতে প্রতিদিন সাত থেকে আট মণ দুধ পাই।

গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশ কিছু গরু বিক্রি করেছি। ১ হাজার ১০০ টাকার গমের ভুসি হয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকা, ২৫ কেজির ৫৫০ টাকার ফিডের দাম হয়েছে ১ হাজার ৬৫০ টাকা। বাজার মনিটরিং যথাযথভাবে না হওয়ায় কৃষক তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। আবার কৃষি উপকরণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এতে কারখানার মালিক ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা

এবার কোথায় বসবেন তারা

খাবার প্লেটের সঙ্গে স্বাস্থ্যের কী সম্পর্ক রয়েছে

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৭৫ বাংলাদেশি

কাঁচামরিচের কেজি ৩০০ টাকা ছাড়াল

বিপিএল খেলা তারকা ক্রিকেটার প্রথমবার নাম লেখালেন সিপিএলে

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রিভিউ শুনানি দ্রুত করতে সব রাজনৈতিক দলের আবেদন

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা

নেতানিয়াহুর ‘দুর্বল’ মন্তব্যের শক্তিশালী জবাব দিল অস্ট্রেলিয়া

এ যেন বক-পানকৌড়ির অভয়ারণ্য

১০

সিপিএলে ব্যাট হাতে সাকিব ব্যর্থ হলেও জয় পেয়েছে দল

১১

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের দাবির প্রতিবাদে মধ্যরাতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১২

লুটের ২ শতাংশ পাথরও উদ্ধার হয়নি

১৩

ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে অবস্থান

১৪

রাজধানীতে আজ কোথায় কোন কর্মসূচি

১৫

যে কারণে লিগস কাপের কোয়ার্টারে ছিলেন না মেসি

১৬

এইচএসসি পাসেই প্রাণ গ্রুপে চাকরি, পদ ৫০

১৭

সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল সেনাবহর

১৮

কৃষককে কুপিয়ে জখম, আটক ২

১৯

ঢাকায় বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস 

২০
X