এশিয়ার খ্যাতিমান ইউনান ইউনিভার্সিটির বাংলার জনপ্রিয় শিক্ষক বাংলাদেশের সুবর্ণা আকতার। ওর মাধ্যমে চীনের শিক্ষার্থীরা বাংলা ভাষা শিখছেন। লিখেছেন জান্নাতুল বাকেয়া কেকা-
চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা ভাষার মাধুর্য ছড়াচ্ছেন শিক্ষক সুবর্ণা আকতার। ভিন্ন দেশে বাংলা ভাষা শিক্ষার এ কার্যক্রম চীন-বাংলাদেশের মধ্যে উষ্ণতা ছড়াচ্ছে। নিবিড় করছে দুই দেশের বন্ধুত্বের বন্ধনও।
টাঙ্গাইলের মেয়ে সুবর্ণা আকতার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মাসিতে স্নাতক-স্নাতকোত্তর করেন। ইউনান ইউনিভার্সিটিতে ২০১৯ সালে চালু হয় বাংলা শিক্ষা বিভাগ। এখানে যোগদান করেন সুবর্ণা আকতার।
এরপরই ইউনান ইউনিভার্সিটিতে বাংলা বিভাগ চীন ও বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে সম্পর্কের নৈকট্য বাড়িয়েছে। বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আয়োজন বাংলার সুমিষ্ট স্বরের খ্যাতি ছড়ানোর পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কের উষ্ণতা ছড়ায়।
সুবর্ণা আকতার ছাড়াও ইউনান ইউনিভার্সিটিতে বাংলা শিক্ষা বিভাগে রয়েছেন স্থানীয় তিন শিক্ষক। ইউনান ইউনিভার্সিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হু জিনমিং জানান, চীনের পঞ্চম ইউনিভার্সিটি হিসেবে এখানে বাংলা শিক্ষা বিভাগ চালু করা হয়। এ ইউনিভার্সিটিতে বাংলা ভাষা শিখতে আগ্রহী চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এ ছাড়া প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী বৃত্তি নিয়ে এ ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত।
সুবর্ণা আকতারের মতে, মজার বিষয় হলো, চীনের শিক্ষার্থীরা বাংলা বিভাগে ভর্তির পর বাংলাতেও একটি করে নামকরণ করে। যেমন চীনের স্থানীয় শিক্ষার্থী ইয়াং মেইফেংর বাংলা নাম ‘রোমানা’। জ্যাং ইউশিউয়ের বাংলা নাম ‘সোনালি’।
সুবর্ণা কর্মসূত্রে চীনে গিয়ে শিখেছেন চীনা ভাষা। বাংলা শেখার পাশাপাশি আবৃত্তি, গান, নাটকেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের নিয়ে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মবার্ষিকী, মৃত্যুবার্ষিকী, বাংলা নববর্ষ, মাতৃভাষা দিবস, বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে থাকেন। তিনি বলেন, চীনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রবল। চীনা শিক্ষার্থীরা ভালো বাংলা বলে, লেখে এবং গান ও নাটকও চর্চা করে। এ শিক্ষার্থীরা নিজেদের আগ্রহেই বাংলা ভাষা শিখছে। এসব দেখে আমার মনে হয়, ইউনান ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন